Site icon Trickbd.com

দেখে নিন “Bohemian Rhapsody” এর মতো কালজয়ী গান সৃষ্টিকারী “Freddie Mercury” এর জীবনকাহিনী নিয়ে তৈরি মুভি। সাথে থাকছে আমার রিভিউ।

সিনেমার নাম: Bohemian Rhapsody
পরিচালক : Bryan Singer
Genres : Biography,drama,music
Imdb rating: 8.3/10

১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর।জানজিবারে(বর্তমান তানজানিয়া) বসবাসরত বুলসারা দম্পতির কোল জুড়ে অাসলো তাদের প্রথম সন্তান।তার নাম রাখা হলো ফারুক; ফারুখ বুলসারা।
ফারুখের পৈতৃক নিবাস ভারতের গুজরাটে।মূলত তারা পার্সিয়ান,কিন্তু তাদের পূর্ব-পুরুষেরা একসময় ভারতে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।

ফারুখের বাবা ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করেন জানজিবারে।তাই কাজের সুবিধার্থে পরিবার সমেত গুজরাট থেকে চলে অাসেন জানজিবার।সেখানেই জন্ম হয় ফারুখের।তবে খুব অল্প বয়সেই উন্নত শিক্ষার উদ্দেশ্যে ফারুখকে অাবার পাঠানো হয় ভারতে।ফারুখ ভর্তি হয় মুম্বাইয়ের “সেন্ট পিটার্স” বোর্ডিং স্কুলে।তখন তার সবেমাত্র অাট বছর বয়স।
সেন্ট পিটার্সেই মূলত সংগীতে হাতেখড়ি হয় তার।প্রথম পিয়ানো শেখা শুরু সেখানেই।এভাবে অাস্তে অাস্তে একসময় তার অার চারজন বন্ধু মিলে গঠন করে প্রথম ব্যান্ড দল; ”The Hectics”।তখন তার বয়স ১২।নিজের নামের প্রথম অংশটা ও পরিবর্তন করে ফেলেন সে সময়।ফারুখ থেকে রাখেন “ফ্রেডি”; ফ্রেডি বুলসারা।

একসময় এসে চুকে যায় স্কুলের পাট।ফিরে অাসেন বাবা-মা’র কাছে জানজিবারে।কিন্তু জানজিবারে তখন চলছে অস্থির সময়।তাই পরিবার সমেত এবার পাড়ি জমান ইংল্যান্ডে।ইংল্যান্ডের মিডলসেক্সে বসবাস করতে থাকে পরিবারটি।
ইংল্যান্ডে এসে ফ্রেডি ভর্তি হন “ইয়েলিং অার্ট কলেজে”।শুরু হয় বেঁচে থাকার তাগিদে জীবনযুদ্ধ।কখনো ফ্যাক্টরির মালপত্র উঠানো,কখনো বা “হিথ্রো বিমানবন্দরে” প্যাকেজ হ্যান্ডেলিংয়ের কাজ।এতো কিছুর মধ্যেও কিন্তু ফ্রেডির জীবন থেকে গানটা হারিয়ে যায় নি।
সে সময়টাতে কালজয়ী গিটারিস্ট “জিমি হেনড্রিক্স” মঞ্চ মাতাচ্ছেন তার গিটারের জাদুতে।ফ্রেডিও তার একনিষ্ঠ ভক্ত।তার পুরো ঘর জুড়ে কেবল “জিমি হেনড্রিক্স” এর পোস্টার অার সিডি।ভারতীয় এবং পাশ্চাত্য,দুই সংগীতই সমানভাবে অাকর্ষণ করে তাকে।এই সময়টাতে পিয়ানোর পাশাপাশি রপ্ত করে ফেলেন গিটারটাও।কলেজে পড়া অবস্থায় বন্ধুত্ব হয়ে উঠে সহপাঠী “টিম স্টাফেলের” সাথে।টিম “স্মাইল” নামে এক ব্যান্ডের লিড ভোকাল।টিমই ফ্রেডিকে তার অন্যান্য ব্যান্ড মেম্বারদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।সে সময় তার সাথে অালাপ হয় স্মাইলের গিটারিস্ট “ব্রায়ান মে” অার ড্রামার “রজার টেলরের” সাথে।স্মাইলের মিউজিকের ধরণ বেশ অাকর্ষণ করে ফ্রেডিকে।একসময় রজার টেলরের ফ্ল্যাটে একসাথে থাকাও শুরু করেন ফ্রেডি।জীবিকার তাগিদে তারা দুজনে মিলে বিক্রি করে তাদের অাঁকা ছবি,পোস্টার।এর মধ্যে “Ibex” এবং “Sour Milk Sea” নামে দু’টি ব্যান্ডের সাথে কাজ করে কিছু সময়।

সালটা তখন ১৯৭০।ফ্রেডির জীবনে অাবির্ভাব ঘটে গুরুত্বপূর্ণ একজন মানুষের।তার নাম “ম্যারি অস্টিন”।ম্যারিকে প্রচন্ড ভালোবেসে ফেলে ফ্রেডি।বলা চলে তার একমাত্র সত্যিকারের ভালোবাসা।দুজনে মিলে তারা শুরু করে সেকেন্ড হ্যান্ড পোশাকের ব্যবসা।
ইতোমধ্যে “স্মাইল” থেকে বেরিয়ে যায় “টিম”।ফ্রেডি যোগ দেয় “স্মাইলে”।কিছুদিনের মধ্যেই ব্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় “কুইন”।তাদের সাথে চতুর্থ ব্যান্ড মেম্বার হিসেবে যোগ দেন বেজ গিটারিস্ট “জন ডিকন”।সৃষ্টি হয় রক সংগীত জগতের কালজয়ী ব্যন্ড “কুইন” এর।ফ্রেডি ও তার নামের শেষে যুক্ত করেন ”Mercury”।
একে একে জন্ম হয় “Bohemian rhapsody”, “Love of my life”, ”We are the Champions”, “Killer queen”, “We will rock you” এর মতো কালজয়ী গানগুলো।
১৯৮৫ সালের ১৩ জুলাই এ “Live aid” এ কুইনের করা ২৫ মিনিটের পারফরমেন্সকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ লাইভ পারফরমেন্স হিসেবে ধরা হয়।

“কুইন” এর তথা ফ্রেডির এতো জনপ্রিয়তা স্বত্তেও সুখী ছিলেন না ফ্রেডি।তার উভয়কামীতার কারণে ম্যারি অার তার সম্পর্ক কোনো পরিণতি লাভ করতে পারে নি।তবে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক বজায় ছিলো অাজীবন।ফ্রেডির উভয়কামিতা তাকে নানা সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।এজন্য তাকে লড়াই করে যেতে হয়েছে অাজীবন।
ফ্রেডির এই উচ্ছৃঙ্খল যৌনজীবন তার জন্য ডেকে এনেছে মৃত্যু।১৯৮৬ সালের অক্টোবরে তার এইচ.অাই.ভি ধরা পরে।যা তিনি জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করেন ১৯৯১ এর ২২শে নভেম্বরে এসে।ঠিক তার দুদিন পরেই নিজ বাসভবনে মারা যান তিনি ব্রঙ্কো-নিউমোনিয়ায় অাক্রান্ত হয়ে।মাত্র ৪৫ বছর বয়সে জীবন প্রদীপ নিভে যায় এই গুণী মানুষটির।মৃত্যুর পূর্বে তার সঞ্চিত অর্থের অংশ দিয়ে করে যান এইডস এর বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির জন্যে ট্রাস্ট।

এই ছিলো ফ্রেডি মার্কিউরির জীবনী-সংক্ষেপ।অামার খুব পছন্দের একটা জায়গা জুড়ে অাছে “কুইন” অার ফ্রেডি মার্কিউরি।তাই হয়তো লেখাটা একটু দীর্ঘ হয়ে গেলো।কারো ধৈর্যচ্যুতি ঘটলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন অাশা রাখছি।

 

প্রথমে সবার অাগে বলতে হয় রামি মালেকের কথা।অনবদ্য অভিনয়ে তিনি ইতোমধ্যে সবার মন জয় করে নিয়েছেন।অামার মনে হয় না অার কেউ এই চরিত্রটা এমনভাবে মিশে গিয়ে করতে পারবেন! শতভাগ ডেডিকেশন ছিলো তার কাজে।বাকি অভিনেতাদের অভিনয় ও প্রশংসনীয়।এরপরে বাহবাটা দিতে হয় ছবির কস্টিউম ডিজাইনারকে।অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি তার কাজে।পরিচালককেও সাধুবাদ দিতে হয় এমন কাজের জন্য।বিশেষ করে লাইভ এইডে পারফরমেন্সের জায়গাটাকে তিনি পুনর্জন্ম দিয়েছেন বলতে গেলে।অার যেটা অনেকের সমালোচনার জায়গা, ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোতে পরিবর্তন অানা; এ সম্পর্কে স্ক্রিপ্ট রাইটার ”McCarten” নিজেই বলেছেন যে ড্রামাটিক ইফেক্ট ধরে রাখার জন্য তিনি এর মধ্যে পরিবর্তন এনেছেন এবং তিনি ছবি বানাচ্ছেন; কোনো ডকুমেন্টারি নয়।
সব মিলিয়ে বলতে গেলে অাসলে এমন ছবির দরকার ছিলো এই প্রজন্মের কাছে “কুইন” অার ফ্রেডির কালজয়ী সৃষ্টিগুলোকে তুলে ধরতে..।

::Screenshots::



::Size : 1.1 GB::

::Direct Download::

নতুন নতুন মুভি পেতে চলে আসুন আমাদের ওয়েবসাইটে   Movie Website Click Here  প্রতিদিন নতুন নতুন মুভি দেয়া হয়ে থাকে আমার এই সাইটে। তাই সাথেই থাকুন।