বিগ বাজেটে হতাশ করা একশন থ্রিলার – Triple Frontier
যদি মারদাঙ্গা একশন মুভি দেখার জন্য বসে থাকেন, বা মুভির কাস্টিং এবং নাম দেখে ধোঁকা খান তবে কিছু করার নেই। মাঝে মাঝে অস্কার জয়ী অভিনেতা বা পরিচালকের কাছ থেকেও এই রকম খাপ ছাড়া মুভি উপহার পেতে পারেন। ছবির চরিত্ররা কিভাবে একসাথে আসল, তাদের সম্পর্ক কি এসবের খুব বেশি ডিটেইলস পাবেন না ছবিতে।
খুব ধীরে ধীরে আগানো গল্পে বেশ ভালো কিছু একশন দৃশ্য আছে আর বাকি সব খাপ ছাড়া – এই নিয়ে Triple Frontier
Triple Frontier রিলিজ হয়েছে মার্চ ১৩, ২০১৯ এ। মুভিটি চাইলে আপনি টরেন্ট থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন অথবা যাদের নেটফ্লিক্স আছে তারা দেখে নিতে পারেন সেখান থেকে।
যারা এখনো ছবিটি দেখেননি তাদের জন্য বলছি, রিভিউ দেখে মুভি দেখতে গেলে ঠকবেন।
হলিউডের সব বিগ শট তারকাদের নিয়ে করা হয়েছে Triple Frontier
Ben Affleck, Oscar Isaac, Charlie Hunnam, Garrett Hedlund, Pedro Pascal এবং Adria Arjona। যদিও ফিমেল ক্যারেক্টার খুব বেশি গুরুত্ব পায়নি এই ছবিতে। পুরো ছবিতে একশনের থেকে বেশি ছিল প্লানিং আর থ্রিল এর ছড়াছড়ি, আর সেই সাথে ছিল মোরালিটি এবং বন্ধুত্বের গল্প।
মুভির গল্প নিয়ে একটু কথা বলা যাক..
ছবির কাহিনী এবং চিত্র-নাট্য লিখেছেন J.C. Chandor এবং Mark Boal।
J.C. Chandor মুভি ডিরেক্ট ও করেছেন।
স্পেশাল ফোর্সের পাঁচ সদস্য যারা আজীবন লড়াই করে গেছে দেশের জন্য, তারা ফোর্স থেকের রিটায়ার করার পর সাউথ আমিরিকার এক জায়াগায় একটা ডাকাতির পরিকল্পনা করে।
এই পাঁচজন স্পেশাল ফোর্স মেম্বার কিন্তু জীবনে কখনও দেশের স্বার্থের বাইরে কিছু চিন্তা করেনি, সবসময় দেশকে প্রাধান্য দিয়েছে। এই প্রথম তারা নিজের স্বার্থের জন্য কিছু একটা করতে যাচ্ছে। মরাল গ্রাউন্ড থেকে এটা করতে তাদের বেশ চিন্তা-ভাবনা করে ডিসিশন নিতে হয়েছে।
তারা ডাকাতির জন্য সাউথ -আমেরিকান এক ড্রাগ লর্ডকে বেছে নেয়, যার টাকা অবশ্যই অবৈধ পথে কামানো।
প্রায় $75 million ডলার কিংপিন নামক এই ড্রাগ লর্ড তার বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিল। এই ইনফরমেশন আবার শান্তিয়াগোর (মুভিতে যে পোপ হিসেবে পরিচিত) তার কাছে পাস করে এক ইনফরমেন্ট বা আদ্রিয়া আরজনা।
Adria Arjona তার এই মুভিতে তেমন কোন কাজ নেই, শুধু সুন্দরীদের মত একটু দৌড়ানে আর কিছু ডায়লগবাজি করা বাদে
মুভিটির প্রতি পরতে পরতে যে জিনিসটি আপনার মনে হবে তা কিন্তু একশন নয়, বরঞ্ছ এই এক্স-স্পেশাল ফোর্স সার্ভিস ম্যানদের জীবন আর তাদের এই অনৈতিক কাজে নামার পেছনের গল্প।
ডাকাতি যদিও তাদের পরিকল্পনা মাফিক হয়নি এবং একজন মারা যাওয়ায় তারা টাকা নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়ে। শুরু হয় তাদের দক্ষতা আর বেঁচে থাকার লড়াই, সেই সাথে ডাকাতি করে নিয়ে আসা এত টাকার লোভ। কোনাটা ছেড়ে কোনটা রাখি – এই অবস্থা।
সব কিছু মিলিয়েই এই ছবি একটা একশন থ্রিলার এর রুপ নিয়েছে।
J.C Chandor এর ডিরেকশনে করা বাকিমুভিগুলো Margin Call (2011), All Is Lost (2013), এবংA Most Violent Year(2014) – এদের সাথে যদি তুলনা করি তবে Tripple Frontier আসলে বিগ শট তারকাদের নিয়ে করা একটা হতাশা জাগানিয়া ছবি।
ক্রিটিক্স বিচারেও ছবিটি বেশি ভালো করতে পারেনি, এমনকি Rotten Tomato এভারেজ রেটিং ৭ এর নিচে। আর আই এম ডি বিতেও তাই।
আমি যুদ্ধের মুভি দেখতে পছন্দ করি – আর্মি, তাদের একশন, গাড়ি বহর, স্নাইপার, আর্মস… সব কিছুই কিন্তু বেশ লাগে। কিন্তু এই মুভিটাতে সব কিছু ছাড়া ছাড়া ভাবে হওয়াতে কোন কিছুই তেমন নজর কাড়তে পারেনি।
Tripple Frontier মুভির নাম শুনে আর কাস্টিং দেখে ধারনা হতেই পারে আমি মারদাঙ্গা কোন একশন মুভি দেখতে বসব, কিন্তু মুভির অর্ধেকের বেশি চলে গেলো যখন এরকম কোন কিছুর অস্তিত্ব খঁজে পাওয়া যাবে না তখন আপনাকে হতাশ হতেই হয়
কিন্তু মুভিতে প্রচুর একশন এলিমেন্ট আছে, যদিও একে আমি মারদাঙ্গা বলব না, বরঞ্ছ রিয়েলিস্টিক ভাবে বেশ কিছু দৃশ্য চিত্রায়ন করা হয়েছে। বিশেষ করে আন্দ্রিজ এর উপর দিয়ে হেলিকপ্টারে করে টাকা নিয়ে যাওয়া কিংবা লম্বা দুর্গম পথ পাড়ি দেয়াটা অনেকটাই এই মুভি কে অন্যরকম এক মাত্রা দিয়েছে। পরীক্ষায় ফেলছে তাদের বন্ধুত্ব আর ভেতরের লোভকে।
অভিনয় বিচারের কোন কথা হবে না। সবাই তাদের সেরাটা দিয়েই অভিনয় করেছে। তাদের চরিত্র ফুটিয়ে তোলার দায়িত্ব ব্যার্থ হয়েছেন পরিচালক।
এক্স স্পেশাল ফোর্সের যে রকম গতিবিধি প্লানিং আর একশন হবার কথা তা পুরোপুরিই অনুপস্থিত এই ছবিতে।
প্রাপ্তির বিষয় হোল মুভির লোকেশন গুলো এবং মেটালিকার ২ টি গান এই ছবিতে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক হিসেবে দেয়া
মুভি রিভিউটি কেমন হল জানাতে ভুলবেন না ছবিটি আমার কাছে অনেক।দারুন লেগেছে আসা করি আপনারাও দেখবেন। নিচে ডাউনলোড লিনক দেওয়া আছে দেখে নিবেন।