আসসালামুআলাইকুম। আজকের টপিক দেখে হয়তো বুঝে গেছেন আজকের আর্টিকেলটা কোন বিষয়ের? না বুঝে থাকলেও কোন সমস্যা নেই। আশাকরি আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত থাকবেন। চলুন শুরু করা যাক।
সুস্থ্য সবল লোকটা হার্ট এটার্ক এ মারা গেলো এমন কথাতো আমরা প্রায়ই শুনি। কারণ ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশনের মতে বাংলাদেশের প্রতি ৬ জনের ১জন হৃদরোগে মারা যায়। তাই আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের জানাবো হার্টের ১০ টি লক্ষণ সম্পর্কে।যা থেকে আপনি এবং আপনার প্রিয়জন সাবধান হতে পারেন এবং যথা সময়ে হার্টের অসুখের চিকৎসা নিতে পারেন। হার্টের অসুখের কিছু ক্লাসিক্যাল রিস্ক ফ্যাকটর রয়েছে। যেগুলো থাকলে আপনার আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি নেড়ে যায়। যেমন:-
১. ৫০ বছরের বেশি বয়স।
২. অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস।
৩. রক্তে হাই কোলেস্ট্রল।
৪. বাড়তি ওজন।
৫. উচ্চ রক্তচাপ।
৬. ফ্যামিলিতে হর্টের অসুখের হিস্টোরি।
এগুলোর যেকোনো দুটি লক্ষণ থাকলে হার্টের অসুখের বিষয়ে সাবধান হয়ে যান। এবং এই ১০ টি লক্ষণ মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
১. বুকে ব্যাথা অনুভব করা।
সিনেমায় যেমন দেখা যায় হঠাৎ বুকে ব্যাথা নিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। বাস্তবে এমনটা সবসময় ঘটে না। আর বুকে ব্যাথা করা মানেই যে হর্টের অসুখ তাও না। হর্টের অসুখের ব্যাথা হলে বুকের নির্দিষ্ট এক জায়গায় না হয়ে ,সাধারণত পুরো বুক জুড়ে ফিল করবে। এটি কয়েক মিনিট পর্যন্ত থাকতে পারে। এই বুকে ব্যাথা একটু বসে থাকলে কিংবা হাটা চলা করলে থেমে যাবে না। আপনার বুকে যদি তীর্ব ব্যাথার সাথে নিশ্বাস চেপে আসে যা বুকে চাপ লাগছে অনুভব হয়, ব্যাথা হাড়ে কাধে ও শরীরের বাম হাতে ছড়িয়ে যায় এবং শরীর ঘেমে যায় তাহলে হর্টের সমস্যার লক্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এই অবস্থা ফিল করলে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে চলে যান।
২. বমি-বমি ভাব ও অরুচি।
হার্ট ফাংশন দুর্বল হয়ে পড়লে আপনার ডায়জেস্টিস সিস্টেমে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌছায় না। এর কারণে আপনার হজমে সমস্যা ,বুকে জালাপোড়া ভাব হবে এবং এর কারণে আপনার খাবার খেতে অরুচি এবং কিছু খেতে গেলে বমিবমি ভাব দেখা দিতে পারে।
৩. এনার্জির অভাব।
শরীরে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন ও ক্যলরি পৌছাতে পারে না। তাই হার্ট দুর্বলতার নুন্য তম লক্ষণ হচ্ছে এনার্জির অভাব ফিল করা।
৪. ঝিমুনি ভাব।
হার্ট দুর্বল হয়ে পড়লে ব্রেণে ব্লাড সাপ্লাই কমে যায়। এর কারণে আমাদের ব্রেণ ফুল ফাংশন করার মতো শক্তি হারিয়ে ফেলে।ব্রেণ অত্যান্ত দুর্বল অবস্থায় থেকে শরীরের ব্যাসিক ফাংশন গুলো চালু রাখার চেষ্টা করে। এই কারণে আপনি পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ভালো ঘুম হওয়ার পরও সারাদিন ঝিমুনি ভাব ফিল করেন।
৫. অল্পতেই হাঁপিয়ে যাওয়া।
শরীরিক পরিশ্রম করতে গেলে হর্টে বেশি পরিমান রক্ত সঞ্চালন করতে হয়। তাই দুর্বল হর্টের আরো একটি লক্ষণ হলো অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে যাওয়া। যদি আপনি দেখেন সমন্য একটু হাঁটা কিংবা সিঁড়ি দিয়ে ওঠার পর আাপনি হাঁপিয়ে যাচ্ছেন এবং মুখ হা করে নিশ্বাস নিতে হচ্ছে তাহলে দেরি না করে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৬. নাক ডাকা ও নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসা।
ঘুমের মধ্যে অল্প নাক ডাকা অস্বাভাবিক কিছু না। কিন্তু আপনি যদি অনেক জোরে নাক ডাকেন এবং দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ যদি আপনার ঘুম ভাঙে যায় তাহলে এটা হার্টের অসুখের কারণে হতে পারে। কারণ আপনার ফুসফুস যথাযথ ভাবে অক্সিজেন সাপ্লাই করলেও আপনার হার্টে তা পৌছাতে পারে না।
৭. হঠাৎ ঘেমে যাওয়া।
শারীরিক কিংবা মানসিক পরিশ্রম এবং গরমের কারণে ঘাম হতেই পারে। কিন্তু বিনা পরিশ্রমে এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রাই আপনি যদি হঠাৎ অনেক ঘেমে যান তাহলে দেরি না করে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। তবে ঘামের সাথে যদি দম আটকে আসার মতো অনুভুতি এবং বুকে ব্যাথা থাকে তাহলে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে চলে যান, কারণ এটা হার্ট এটার্কের লক্ষণ।
৮. পায়ে পানি চলে আসা।
আমাদের শরীর থেকে টক্সিন পরিষ্কার করার জন্য কাজ করে কিডনি। কিন্তু যদি আমার হার্ট দুর্বল হয়ে যায় তাহলে কিডনি পুরো ফাংশন করতে পারে না। এই অবস্থাই শরীরে ফ্লুইড বেড়ে যায়। যার দরুণ পয়ের পাতা ফুলে যাওয়া এবং হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এমন অবস্থায় ১ দিনে ২ থেকে ৩ কেজি ওজন বেড়ে যেতে পারে।
৯. অকারণে বুক ধড়ফড় করা।
১০. দীর্ঘ দিন ধরে কাশি।
তিন সপ্তাহ কিংবা তার বেশি কাশি হলে যক্ষা পরীক্ষা করা উচিত। যদি এরকম কিছু ধরা না পড়া সত্তেও আপনার দীর্ঘ দিন ধরে কাশি থাকে এবং কফের রং সাদা বা হালকা গোলাপি হয় তাহলে এটি হার্টের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
হর্টের অসুখ অতিমাত্রাই ধারণ করে যখন আপনি দীর্ঘ দিন ধরে এই লক্ষণ গুলো অবহেলা করেণ এবং ডাক্তারের পরামর্শ এড়িয়ে চলেন।
আজ এই পর্যন্তই ।আজকের আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনি আপনার এবং আপনার প্রিয়জনের খেয়াল রাখতে পারবেন। আর আর্টিকেলটি ভালো লাগলে একটি লাইক ও কমেন্ট করে আমাদের উৎসহিত করুণ । ধন্যবাদ।