ঘুম আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বয়স এর পার্থক্যের কারনে সকলের ঘুমের সময় ভিন্ন হয়ে থাকে।
নবজাতক শিশু যেখানে ১৬ থেকে ১৮ ঘন্টা ঘুমাই। সেখানে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ৫ – ৬ ঘন্টা ঘুমালেই স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। তাই বলা হয়ে থাকে বয়স ভেদে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা আর সময় আলাদা।
তবে ৩-৪ ঘন্টা ঘুমের অভ্যাস করলে। আপনার স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ার সম্ভবনা থাকবে। তাছাড়াও বিভিন্ন রকমের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে আপনাকে।
ঘুমের সময়ঃ
এশার নামাজের পর:
রাত ৯টা থেকে ১২টা এই সময়ের ঘুমকে খুবই উপকারী ধরা হয়। এই সময়ে যে কেউ ৮০% গভীর ঘুম পেতে পারে।
এই সময়ের ১ ঘন্টার ঘুম সমান ৩ ঘন্টার ঘুম ধরা হয়ে থাকে।
এই সময়ে পিনিয়াল গ্রন্হি মেলাটোনিন হরমোন উৎপন্ন করে।
তবে দুটি শর্ত আছে-
- পূর্ণভাবে আরামে শায়িত হতে হবে।
- কক্ষটি নিঃশব্দ ও অন্ধকার হতে হবে।
রাত ১২টা থেকে ২টা :
এই সময়ে ২০% গভীর ঘুম হয়ে থাকে । আর এই সময়ের বাকী ঘুম গুলো ঘুমন্ত স্বপ্ন হয়।
এই সময়ের ১ঘন্টার ঘুমকে ১ঘন্টা ঘুমই ধরা হয়।
রাত ২টা থেকে ফজরের আগে পর্যন্ত :
এই সময়টা একটা উত্তম সময় যা চিন্তাশীলতা, মন মমানসিকতা ও শরীরকে শান্ত রাখে৷
এই সময়ে মুখস্ত করা, আল্লাহকে স্মরন করার জন্য মন অত্যান্ত ভালো সময় ।
মাদ্রাসায় হাফেজরা এই সময়ে ঘুম থেকে উঠে কোরআন মুখস্থ করে থাকেন।
এই সময়টিকে যে কোনো কিছু মুখস্থ করার সবচেয়ে উত্তম বলা হয়।
ফজরের পর ঘুম:
এই সময়ে ঘুমের কোন উপকারিতা নেই। এই সময়ের ৩ ঘন্টার ঘুম কে ১ ঘন্টার ঘুম ধরা হয়।
আমাদের সমাজে বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা এই সময়ে ঘুমিয়ে থাকে। কিন্তু এই সময়ের ঘুমে শরীরে অলসতা, অবসান্নতা, নির্জীবতা, মাথাব্যাথা হয় এবং মনোযোগের অভাব দেখা দেয়। এটা স্মৃতি শক্তি হ্রাস ও মেধা বিকাশে বাধা ঘটাই।
ফজরের পর থেকে সূর্য উঠা পর্যন্ত :
এই সময় পিনিয়াল গ্রন্হি অন্য আরেক রকমের হরমোন সেরোটোনিন উৎপন্ন করে যেটা ফজরের পর থেকে সূর্যোদয় সময়ে উৎপন্ন হয়।
তবে শর্ত হলো —
- হালকা নড়াচড়া থাকতে হবে।
- ব্যক্তিটি জাগ্রত থাকতে হবে।
যেমন একজন ব্যক্তি মাসজিদে গিয়ে জামায়াতে সলাত আদায় করল।
এই সময়ে কুরআন তেলোয়াত স্নায়ুকে উদ্দীপ্ত করে।আত্নাকে প্রশান্ত করে।
এই সময়টি দিনের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর একটি পরিকল্পনা করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়।
সূর্য উদয়ের পর হালকা ব্যায়াম ( কমপক্ষে ৪০মি:) ও শ্রম সাধ্য কাজ শুরু করা ভাল।
রাত জাগার ফলে কী কী ক্ষতি হতে পারে।
দেরীতে ঘুমানোর ফলে হরমোন ঘাটতির জন্য স্মৃতিভষ্ট হবার ঝুকি থেকে যায়।
সুন্নত:
রাসূল (সাঃ) এর জীবন যাপন অনুসরন করলে দেখা যায় তিনি এশার নামাজের পর পরই ঘুমিয়ে জেতেন। তারপর গভীর রাত থেকে ফজর পর্যন্ত এবাদতে মশগুল থেকতেন। বর্তমানে আমরা কী করি? গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকছি আর নিজের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা হ্রাস করছি।
তাই নিজের মেধার বিকাশ ও দুনিয়া ও আখিরাতের সুরক্ষায়। আমাদের বিজ্ঞান, সুন্নাহ অনুসারে জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়া প্রয়োজন।
আসসালামু আলাইকুম।
লিখার মধ্যে কোনো ভুল করে থাকলে ক্ষমা করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ হাফেজ।