আসসালামু আলাইকুম,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালোই আছেন। এই আর্টিকেলে আমরা কথা বলবো ছেলেদের চুলের যত্নে করণিয় কিছু টিপস যা ছেলেদের চুলকে আরো আকর্ষণীয় এবং দীর্ঘস্থায়ী করে তুলবে।
এই টিপসগুলো আপনি যদি ফলো করেন তবে আপনি অবশ্যই উপকার পাবেন। আপনার যদি চুলের সমস্যা, চুল পড়া, চুলে জোট ইত্যাদি থেকে থাকে তবে এই আর্টিকেলটি আপনারই জন্যে।
তাহলে আর দেরি কেন, চলুন শুরু করা যাক আমাদের আজকের টপিক।
টিপস – ১) ভালো শ্যাম্পু বাছাই করাঃ
বাজারে ছেলেদের চুলের জন্যে বিভিন্ন রকমের শ্যাম্পুই পাওয়া যায়। কিন্তু সব শ্যাম্পুই কিন্তু কার্যকরী হয় না। এমনও কিছু শ্যাম্পু রয়েছে যেগুলোতে আছে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদান যা আপনার চুলকে আরো রুক্ষ কিংবা নষ্ট করে দিতে পারে।
এসব রাসায়নিক উপাদান আপনার চুল ও মাথার ত্বক নষ্ট করে বিভিন্ন ধরনের রোগ, চুল পড়া জনিত বিভিন্ন সমস্যার কারন হতে পারে। তাই অবশ্যই ভালো শ্যাম্পু বাছাই করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
টিপস -২) শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনারের ব্যবহারঃ
শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহারে চুল ঝরঝরে হয়ে ওঠে। তাই শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত। কন্ডিশনার এর স্থানে এক মগ পানিতে লেবুর রস দিয়েও চুল ধুয়ে নিতে পারেন।
কন্ডিশনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে কন্ডিশনার যেন চুলের গোঁড়া ও মাথার ত্বকে না লেগে থাকে সে বিষয়টিও অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।
টিপস-৩) মাথার ত্বক ম্যাসাজ করা :
মাথায় তেল লাগানোর সময় বা শ্যাম্পু করার সময় আঙ্গুল দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করতে হবে। এতে মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া দিনে কয়েকবার মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াবেন। এর ফলে আপনার চুল ও মাথার ত্বক আরো ভালো থাকবে।
টিপস-৪) জেল, হেয়ার স্প্রে ইত্যাদি দিয়ে অনেকক্ষণ না রাখা :
ছেলেরা বেশিরভাগ সময় যে ভুলটি করে থাকে তা হল চুলে অনেক সময় ধরে জেল, হেয়ার স্প্রে এগুলো ব্যবহার করে। এতে সহজেই চুলে ময়লা ধুলোবালি আটকে যায়।
এছাড়া লম্বা সময় ধরে জেল ব্যবহার করলে মাথার ত্বকের সমস্যা হতে পারে। তাই দিনের বেলা যখন আপনার বাইরে কাজ করার সম্ভাবনা বেশি তখন জেল ব্যবহার করবেন না। আর যখনই জেল বা হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করবেন চেষ্টা করবেন দ্রুত বাসায় ফিরে চুল ধুয়ে ফেলতে।
তা না হলে আপনার মাথার ত্বক ও চুলের গোড়া থেকে সম্পূর্ণ চুল অতি তাড়াতাড়ি ক্ষয় হতে শুরু করবে এবং একটা সময় আপনার চুলের অনেক বড় সমস্যা দেখা দিবে যা আপনি মোটেই চান না।
টিপস-৫) প্রচুর পানি পান করতে হবে হবে, চা-কফি, ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। সেলুনে অনেকে চুল কাটার পর জোরে জোরে মাথা ম্যাসেজ করিয়ে নেয়। এতে চুলের প্রচণ্ড ক্ষতি হয়। এইসব করা যাবে না। আর পাঁচ মিনিটে করা যায় এরকম একটি চুলের ফ্যাশন বা স্টাইল বেছে নিতে হবে।
তা না হলে আপনার চুলকে সবসময় দীর্ঘক্ষন ধরে আঁচড়াতে হবে এবং এর ফলে আপনার গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতে আপনি তাড়াতাড়ি কোনো কিছুই করতে পারবেন। দৈনন্দিন জীবনে এটা অনেক বড় সমস্যার কারন হতে পারে।
টিপস – ৬) মেথির ব্যবহার :
ছেলেরা নিয়মিত চুলের যত্নের জন্যে মেথির ব্যবহার করতে পারেন। এটি হেয়ার প্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। মেথি চুলের জন্যে খুবই উপকারী একটি উপাদান।
আপনি যা করতে পারেন তা হলোঃ নারিকেল তেল নারিকেল তেল গরম করে নিয়ে এরপর এতে মেথির গুড়া মিশিয়ে নিবেন। এরপর এই মেথি সারারাত ভিজিয়ে নিয়ে এগুলোকে সকালে থেতিয়ে নিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে নিবেন।
এরপর ঘন্টাখানেক পর শ্যাম্পু করে সম্পূর্ণ চুল পানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন। আপনি যদি সপ্তাহে তিন দিন এই টিপসটি ব্যবহার করেন তবে খুব তাড়াতাড়িই পরিবর্তন দেখতে পারবেন। এর ফলে আপনার চুল আরো সুন্দর, ঘন ও ঝলমলে দেখাবে।
টিপস – ৭) চুলের রুক্ষতা দূর করতে যা করতে পারেনঃ
সারাদিন বাইরে থাকার কারনে ছেলেদের চুল খুব দ্রুতই রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। এই রুক্ষতা দূর করতে হলে আপনি পাকা কলার পেস্ট, মধু, লেবুর রস দিয়ে প্যাক বানিয়ে তা চুলে লাগাতে পারেন।
এছাড়াও আপনি অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। এটি চুলের রুক্ষতা ও খুশকির হাত থেকে চুলকে রক্ষা করে। এই প্যাকগুলো সপ্তাহে অন্তত দুইদিন ব্যবহারেই আপনি ব্যাপক পরিবর্তন দেখতে পারেন।
আর এখানে সবকিছুই একেবারে প্রাকৃতিক। তাই এখানে কোনো ভেজাল নেই। ফলে আপনার চুলের কোনো ক্ষতি হবার বিন্দুমাত্র আশংকা নেই।
টিপস – ৮) চুলে তেল দেওয়াঃ
অনেকেই এটিকে ঘৃনা করেন বা অনেকের কাছেই এই কাজটি পছন্দনীয় নয়। তাই তারা এই কাজটি করতে চান না।
তবে আপনি কি জানেন চুলে তেল দেওয়ার যা যা উপকারিতা রয়েছে তা চুলে শ্যাম্পু দেওয়ার থেকেও বেশি? হ্যাঁ, আপনি ঠিকই শুনেছেন।
আপনার চুল পড়া কমানোর একটি কার্যকরী টিপস হলো চুলে তেল ম্যাসাজ করা। দিনে কিছুটা সময় নিয়ে আপনার মাথায় বাদাম তেল, অলিভ অয়েল কিংবা নারিকেল তেল হালকা ম্যাসাজ করুন।
এর ফলে আপনি ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন। এর ফলে আপনার মাথার ত্বক ও চুল দুটি অনেক স্বাস্থ্যজ্জ্বল ও সুন্দর এবং ঝলমলে দেখাবে। এর ফলে আপনার মাথার ত্বক অনেক ভালো থাকবে এবং আপনার চুল গুলো নষ্ট হবে না।
টিপস – ৯) চুল ধোয়ার সঠিক নিয়ম :
চুল ধোয়ার সময় কখনই গরম পানির ব্যবহার করবেন না। এতে আপনার চুল রুক্ষ হয়ে যেতে পারে অথবা জমাট বেঁধে যেতে পারে। তাছাড়া গরম পানি চুলের ছত্রাক কে নষ্ট করে, মাথার ত্বক জালা করে এবং চুলে জট ধরায় খুবই তাড়াতাড়ি।
তাই চুলের যত্নের জন্য লবণাক্ত পানি এবং ক্লোরিনযুক্ত পানি এড়িয়ে চলুন যতটা সম্ভব।
টিপস – ১০) চুলের যত্নে অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন :
অনেক ছেলেই রয়েছেন যারা নিজেদের চুলকে আরো ঘন করতে চায়। চুল ঘন করতে অবশ্যই আপনার শরীরকে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যামাইনো এসিড সরবরাহ করতে হবে।
মাছ, মাংস, পনির, দুধ, ডিম এই ধরনের খাবারগুলো আপনি যদি আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় যুক্ত করতে পারেন তবে অবশ্যই এগুলো আপনার চুলের যত্নে অনেক সাহায্য করবে।
আপনার শরীর যাতে পর্যাপ্ত পরিমানের ভিটামিন পায় তা অবশ্যই আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে চুলের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে। মাথার ত্বক থেকে চুল পড়ে যাওয়ার প্রধান কারনগুলোর মধ্যে একটি হলো চুলে পর্যাপ্ত পরিমানের অক্সিজেনের স্বল্পতা।
তাই চুল পড়া রোধে অবশ্যই জিঙ্ক এবং আয়োডিন যুক্ত খাবার যেমনঃ কলিজা, বাদাম, মটরশুঁটি, মাংস, দুধ ইত্যাদি বেশি করে খাবেন। আর অবশ্যই দিনে যত বেশি পারেন পানি পান করবেন। যদি ধূমপান, মদ্যপান বা এমন কোনো অভ্যাস থেকে থাকে তবে যত দ্রুত পারেন তা ত্যাগ করার চেষ্টা করবেন।
তা না হলে আপনার উপকারের থেকে অপকারই বেশি হবে। তাই সুস্থ ও সুন্দর একটি জীবন গড়ে তুলতে ও চুলের যত্ন নিতে অবশ্যই এই টিপসগুলো ফলো করুন।
এখন থেকেই শুরু করে দিলে আপনি খুব অল্প সময়েই দ্রুত পরিবর্তন দেখতে পারবেন। অবশ্যই দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন। এর ফলে আপনার মাথার ত্বক এবং চুল দুটোই ভালো থাকবে।
অনেকেই জীবনের নানান ধরনের সমস্যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় মগ্ন থাকেন। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রাখলে এসব দুশ্চিন্তা সহজেই দূর করা যায়। আপনি নিজের মস্তিস্ককে যতটা ভালো রাখবেন আপনার শরীর ও মন ততটাই ভালো থাকবে।
নিয়মিত ব্যায়াম, শরীরচর্চা, হাটা-চলা এর বিকল্প নেই। এগুলোর মাধ্যমে আপনার শরীর ও মন দুটোই যথেষ্ট ভালো থাকবে। নিজেকে ও নিজের কাছের মানুষের সাথে হাসি-ঠাট্টা করার ফলেও আপনার মন ও ব্রেইন দুটোই ভালো থাকবে যা আপনার দুশ্চিন্তা কাটাতে পারে।
ভালো থাকবেন এবং নিজের ও নিজের আশেপাশের মানুষের যত্ন রাখবেন। আমি জানি এমন আর্টিকেল আমার থেকে আশা করাটা একেবারে ভিন্নরকম কোনোকিছু।
কিন্তু হঠাৎ করেই এমন একটা Article নিয়ে লিখতে মন চাচ্ছিল। তাই লিখেছিলাম। পরে ভাবলাম ট্রিকবিডিতে পোস্ট করে দিই।
এই Article থেকে তেমন কোনো Expectation নেই আমার।
আমার লিখতে মন চেয়েছিলো তাই লিখলাম। ভালো লাগলে বলতে পারেন। আগে ট্রিকবিডিতে বিভিন্ন Health Tips নিয়ে পোস্ট হতো। এখন তা একেবারে কম। তাই ভাবলাম একটা পোস্ট দিয়েই দেখি এই বিষয়ে। মানুষ কেমন Respond করে এটাও দেখার একটা Experiment বলতে পারেন।
ভালো থাকবেন।
আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আর্টিকেলটি পড়ার জন্যে
ধন্যবাদ।
THIS IS 4HS4N
LOGGING OUT…