Site icon Trickbd.com

কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা নিয়ে কিছু কথা। আপনি ব্রাজিল সমর্থক নাকি আর্জেন্টিনা সমর্থক

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা নিয়ে কিছু কথা। আপনি ব্রাজিল সমর্থক নাকি আর্জেন্টিনা সমর্থক


বর্তমানে কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপের খেলা চলছে। আমরা বাড়িতে বসেই সেই খেলা উপভোগ করছি। বাংলাদেশের হাজারো কোটি মানুষ ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল, ফ্রান্স ইত্যাদি দলের সাপোর্ট করে। আবার এটাও দেখলাম বাংলাদেশে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার ইয়া বড় বড় পতাকা টানানো হয়েছে।

অথচ সেই ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা পতাকার পাশেই ছোট একটি বাংলাদেশের পতাকা টানানো হয়েছে। কেন ভাই বাংলাদেশে অন্য দেশের পতাকা বড় জায়গা করে স্থান পায় বাংলাদেশের পতাকা কেন বড় স্থান পায় না। আমরা কি নিজের দেশের চেয়ে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা এসব দেশকে বেশি ভালোবাসি।

এইযে অন্য দেশের পতাকা বড় করে টানানো এবং নিজের দেশের পতাকা ছোট করে টানানো এটা কি দেশের অবমাননা, অসম্মান, অমর্যদা করা হচ্ছে না।

আবার আমাদের দেশ এটাও দেখা যায় ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা সমর্থকরা একজন আরেকজনের সঙ্গে উত্তেজনা পূর্ণ খারাপ ব্যবহার করে থাকে। একজন আরেকজনকে ভালো চোখে দেখে না। আমরা এই খেলার জন্য নিজের মধ্যে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হই।

ভাইয়ে ভাইয়ের মধ্যে মারামারি সৃষ্টি হয় সহিংসতা দেখা যায়। এতে কিন্তু আমাদেরই বেশি ক্ষতি হচ্ছে। কারণ কিছু দিন পরেই এই বিশ্বকাপ খেলা আর থাকে না। তখন কিন্তু আমাদের একই সমাজে চলতে ফিরতে হবে ঐ সময়ও আমাদের মাঝে সহিংসতা থেকে যাবে শুধু মাত্র এই খেলার জন্য।

আপনি খেলা দেখতে পছন্দ করেন ভালোবাসেন সব ঠিক আছে খেলে দেখেন। কিন্তু এই খেলার জন্য একজনের সাথে খারাপ আচরণ করা নিজের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা এটা কি ঠিক হচ্ছে। ব্রাজিল, আর্জন্টিনা এক সাথে হলেই উগ্র ব্যবহার দেখা যায়।

যখনই ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা খেলা হয় তখন যদি দুই দলের মধ্যে কেউ এক হেরে যায় তখনই দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে সৃষ্টি হয় সহিংসতা এবং কথা কাটাকাটি শেষ পর্যন্ত মারামারিও হয়ে যায়। এরকম খবরও আমরা পেয়ে থাকি।

আপনি যদি ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও ইসলামের সমর্থক হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে বিনীতভাবে বলছি এমন সহিংস আচরণ করবেন না। বিশ্বকাপ উদ্বোধনী ভাষণে গানিম আল মুফতাহ যখন একটি কোরআনের বাক্য দিয়ে পুরো বিশ্ববাসিকে এক শান্তির তাঁবুর ভেতরে নিয়ে এসেছে।

কিন্তু আমরা বাংলাদেশীরা সবাই মিল থাকতে পারছিনা। এই বিশ্বকাপ খেলার জয়পরাজয় নিয়ে আমরা নিজের মধ্যে ঝগড়াঝাটি সৃষ্টি করছি। এই খেলা কিছু দিন পরে শেষ হয়ে যাবে কিন্তু আপনার বন্ধু বা ভাইয়ের সাথে আপনি খেলা নিয়ে যে খারাপ আচরণ করছেন সেটা সারাজীবন মনে গেঁথে যাবে। কি দরকার এই সামান্য খেলা নিয়ে নিজের মধ্যে ঝগড়াঝাটি সৃষ্টি করা।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন → সেই ব্যক্তি প্রকৃত মুসলিম নয় যার হাত মুখ থেকে অপর মুসলিম নিরাপদ নয়।

এই সামান্য খেলার জন্য কোন এক দলের অন্ধ সমর্থক হয়ে কেন আপনি আপনার ভাইয়ের বা বন্ধুর সাথে খারাপ আচরণ করবেন।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন→ তোমরা জেনে রাখো নিশ্চয়ই দুনিয়ার জীবন খেল তামশা, ক্রিয়া কৌতুক, ঝাঁকঝমক পদর্শন, অহংকার, ধনসম্পদ পাচুর্য ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা কেমন জানো এটার উপমা হলো বৃষ্টি আসলো শস্য ভরা ক্ষেত্র সুজলা সুফলা হলো অতঃপর সব শুকিয়ে আবার খড়কুটোর পরিণত হলো। আর আখিরাতে রয়েছে শান্তি এবং আল্লাহ ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবন প্রতারণার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়। ( সূরা হাদিদ আয়াত নাম্বার ২০)

সূরা হাদিদের এই ২০ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তায়ালা খেলার শেষ পরিণতি বলে দিয়েছেন। অর্থাৎ খেলা দুলা এবং ঝাঁক ঝমক পূর্ণ এতটাই পদর্শন হয় সামরিক সময়ে জন্য মনে হয় এটাই জীবন এটাই মরণ। কিন্তু শেষটা কেমন হয় দেখেন। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন → সুজলা সুফলা মাঠ যেমন খড়কুটোর পরিণত হয় তোমাদের এই সকল তামাশা গুলোও এক সময় খড়কুটো হয়ে যায়।

আজ থেকে দুই মাস পরে খেলা শেষ হয়ে যাবে কিন্তু আপনি আপনার করা সহিংসতা গুলো জন্য আল্লাহ কাঠগড়ায় আজীবনের জন্য দায়ী থাকবেন।

আমি জানি আমার এই আর্টিকেলে অনেক লাইক দিবেন এবং সুন্দর সুন্দর কমেন্ট করবে কিন্তু আবার প্রিয় দলের খেলার সময় টিভির সামনে বসে যাবেন। ঠিক আছে কোন সমস্যা নেই খেলা দেখুন কিন্তু একটা ওয়াদা করুন আপনি আপনার দল ব্রাজিলে সমর্থক অথবা আর্জেন্টিনা সমর্থক পূর্বে যেহেতু আপনি ইসলামের সমর্থক তাই দয়া করে আজ থেকে আর সহিংস হবেন না।

এসব খেলা ব্যক্তিগত জীবন ও পরকালের উদ্দেশ্য স্থান দিবেন না। এতটুকু আমল তো আমরা করতে পারব। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন→ তোমার একটি আমল যদি ক্ষুধাতিক্ষুদ্র হয় এমনকি মাটির নিচে পাথরের নিচে চাপাও পরে যায়। তখন আল্লাহ তায়ালা সেই আমলটাকেও তুলে এনে তোমার আমল নামার যুক্ত করে দিবে।

আর বিশ্বকাপ থেকে ভালো কিছু গ্রহন করার চেষ্টা করুন। গানিম আল মুফতাহ যখন বিশকাপের বিশ্ব মঞ্চে কোরআনে আয়াত মাধ্যমে পুরো বিশ্ববাসীর অন্তর আত্মাকে ঠান্ডা করে দিয়েছিল। একইভাবে সর্বপ্রথম ম্যাচে কাতার হেরে যাওয়ায় পরেও আমরা দেখতে পেলাম কাতারের এক যুবক স্টেডিয়ামে নিজের সেলফোন দিয়ে ভিডিও করছে। সে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে জাপানিসরা কাতর এবং ইকুয়েডরের দর্শকদের ফেলে যাওয়া ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করছে।

ঐ মুসলিম যুবক তাদেরকে গিয়ে প্রশ্ন করল এটাতো আপনাদের দলের কোন খেলা ছিল না। আপনারা এখানে বিশ্বকাপে আপনাদের নিজের দলের সমর্থন করতে আসছেন। আর অন্য দলের দর্শকদের ফেলে যাওয়া ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করছেন কেন..? সে জাপানি দর্শক বলছে আপনি যদি বাহিরের ফেলে যাওয়া ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করেন তাহলে মহান প্রভু আপনার অন্তরে সকল ময়লা পরিস্কার করে দিবে আল্লাহ আকবর।

আমাদের বাংলাদেশের মানুষ ময়লা করতে জানে কিন্তু ময়লা পরিস্কার করতে যানে না। বাংলাদেশে কোন অনুষ্ঠান হলে সেখানে মানুষ ইচ্ছে করেই যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখে। আমাদের মনমানসিকতা এবং চিন্তা ভাবনা পরিবর্তন আনা উচিত। আজকে এ পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবে আল্লাহ হাফেজ।

আপনার ওয়েবসাইটের জন্য আর্টিকেল প্রয়োজন হলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ফেসবুকে আমি