Site icon Trickbd.com

আমার দেখা সেরা ফোন কোনটি? স্যামসাং?

Unnamed

আমার রিডার দের মধ্যে কয়জন স্যামসাং লাভারস আছেন সেটা হয়তো আমার জানা নেই। তবে স্যামসাং খুবই পুরোনো ফোন এবং অন্য সকল ব্র্যান্ডের মতো স্যামসাং এরও বাজারে খুব বড়সড় সুনাম আছে এতটুকু আমি জানি। তাছাড়া অন্য সকল ব্র্যান্ডের মতো স্যামসাং কেও অনেকে অপছন্দ করেন সেটাও জানি। তবে আমি যদি বলি একমাত্র স্যামসাং ফোনই সেরা বাকি সব ফোন খারাপ তাহলে তাহলে আপনার কেমন লাগবে। আপনারা হয়তো কেউ কেউ আমার কথায় হা মিলাচ্ছেন আবার কেউ কেউ অনেকটা রাগও করছেন।

তবে ব্যাপারটা আসলে এমন নয় যে, একমাত্র স্যামসাং ফোনই সবথেকে সেরা। আমি আসলে আজকে স্যামসাং এর এমন কিছু ভালো দিক শেয়ার করবো যেগুলোর কারণে আপনারা সকলে একমাত্র স্যামসাং ফোন কেই সেরা বলতে বাধ্য হবেন। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক কেনো স্যামসাং সেরা।

মনে রাখবেন, ইহা আমার কেনো স্পন্সরড টিউন নয়। আমি ছোটো থেকেই স্যামসাং ফোন পছন্দ করি। এবং যে যে কারণে আমার স্যামসাং ফোন ভালো লাগে আমি সেই কারন গুলোই উল্লেখ করছি। এই পোস্ট এর জন্য আমি কোনো কোম্পানীর থেকে একটা টাকাও গ্রহণ করিনি।

১. সিকিউরিটির দিক দিয়ে স্যামসাং

আমার সবার আগে ঠিক যেই কারণে স্যামসাং ফোন ভালো লাগে সেটা হচ্ছে স্যামসাং এর সিকিউরিটি। সিকিউরিটি এর দিক দিয়ে স্যামসাং খুবই দায়িত্বশীল। আই ফোন এর পর সবচেয়ে সুরক্ষিত ব্র্যান্ডের ফোন হিসেবে আমি স্যামসাং সিলেক্ট করবো। কারণ অন্য সকল ব্র্যান্ডের ফোনেই প্রায়, আমরা শুধুমাত্র সফটওয়্যার লেভেলের সিকিউরিটি পাই। কিন্তু স্যামসাং আমাদেরকে সফটওয়্যার লেভেলের সিকিউরিটি তো দিবেই তার সাথে হার্ডওয়্যার লেভেলের সিকিউরিটি ও পেয়ে থাকি।

স্যামসাং সব সময় তাঁদের ডিভাইস গুলোর সিকিউরিটি বৃদ্ধির দিকে নজর দিয়ে থাকে। স্যামসাং এর সিকিউরিটি বৃদ্ধির জন্য স্যামসাং ফোন গুলোতে নতুন একটি ফিচার যুক্ত হচ্ছে l যেটার নাম হচ্ছে ইমেজ গার্ড। আমার সকলেই আমদের অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে একে অপরকে পিকচার সেন্ড করে থাকি। এবং কেউ সেন্ড করলে সেই পিকচার গ্রহণ করে থাকি।

তবে আমরা হয়তো কেউই জানিনা যে, হ্যাকাররা এইসব ইমেজ গুলোতে ছোটো বড় অনেক রকমের হ্যাকিং কোড বসিয়ে দিতে পারে। যেসব এইসব ইমেজ গুলোতে ক্লিক করলেই সেই কোডটি রান হয়ে যাবে এবং আপনার ফোনটি হ্যাক হয়ে যাবে। এইসব পিক থেকে বাচার জন্য সহজ কোনো উপায় নেই। আপনাকে কেউ এমন একটি পিক সেন্ড করলে আপনি বুঝতে কিংবা জানতেও পারবেন না যে এই পিকচার এর মধ্যে এমন কিছু কোড রয়েছে।

এইসব পিকচার গুলো থেকে বাচার জন্য স্যামসাং এ আসছে নতুন একটি ইমেজ গার্ড নামের ফিচারটি। এই ফিচারটির মাধ্যমে কেউ আপনাকে এমন এমন কোনো হ্যাকিং কোড যুক্ত পিকচার সেন্ড করতে পারবে না। পারলেও সেটার থেকে হ্যাকিং কোড রিমুভ হয়ে যাবে। প্রথমে স্যামসাং এর S23 মডেলের ফোনে এই ফিচারটি দেখতে পাবেন। এরপর থেকে ধীরে ধীরে সকল বাজেট ফোনেই এই ফিচারটি দেখতে পাবেন।

২. অপ্রয়োজনীয় কোনো অ্যাপস থাকে না

আজকালকার সকল বাজেট ফোন গুলোতে সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার দিয়ে ভরে রাখে। এমন সব অ্যাপস দিয়ে রাখে যেগুলো আমাদের কখনোই প্রয়োজনেই পড়েনা। এগুলো এতটাই প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার যে এগুলো দেখলেও বিরক্ত লাগে। এবং এইসব ফোন গুলো মানুষ চাইলেও আনইন্সটল করতেও পারবে না। কারন এই সফটওয়্যার গুলো ফোন গুলোর মধ্যে ডিফল্ট ভাবে দেওয়া থাকে।

আপনি নিজেই আপনার ফোনে চেক করে দেখুন এমন কয়টা সফটওয়্যার আছে যেগুলো আপনার প্রয়োজনে পড়েনা কিন্ত এই আপস গুলো ডিফল্ট ভাবে দেওয়া আছে। কখনো কখনো এমন সব সফটওয়্যার ও ডিফল্ট ভাবে দেওয়া থাকে যে সকল সফটওয়্যার অনেক আগেই প্লে স্টোর থেকে অথবা আমাদের দেশ থেকে ব্যান্ড হয়ে গেছে। তাছাড়া এগুলোর মধ্যে এমন কিছু সফটওয়্যার ও থাকে যেগুলো এখন আর কাজ করে না। ক্লিক করলেই ক্রাশ করে।

তবে স্যামসাং এইসব ছোটো খাটো ব্যাপার গুলোর দিকে ভালো মতো খেয়াল রাখে। স্যামসাং এর কোনো ফোনে এমন কোনো সফটওয়্যার থেকে থাকে যেটা কাজ কোনো কাজ করেনা এটা স্যামসাং ফোন এর কোম্পানীর লোকেরা জানা মাত্রই সেই ফোনে আপডেট নিয়ে আসে এবং সেই অ্যাপসটি রিমুভ করে দেয়।

৩. প্রয়োজন ছাড়া এড আসেনা

আজকালকার কিছু ফোনে এত বেশি পরিমাণে এড আসে আর এমন সব নোটিফিকেশন আসে যে, মানুষ ধরেই নেয় যে অ্যান্ড্রয়েড ফোন খুবই বাজে এক রকমের ফোন। ফোনে ডেটা চালু করলেই এমন সব আজেবাজে বিজ্ঞাপণ দিয়ে ফোনটি ভরে যায়। এইসব এড এবং নোটিফিকেশন গুলো ডিলিট করতে বা সরাতে গেলেও অনেক সময় লেগে যায়। কিছু কিছু এড তো একদম ফোনের স্কিনে ফিক্সড হয়ে যায়। যেগুলো আবার রিমুভ করা যায়না সহজে।

তবে স্যামসাং এর ফোনে পাবলিক রা যেনো এমন কোনো পরিস্থিতিতে না পড়ে সেজন্য এইসব এড এবং নোটিফিকেশন গুলো আগের থেকে ডিফল্ট ভাবেই বন্ধ করা থাকে। এড আসলেও এত বেশি আসে না। খুবই কম আসে।

৪. সামসাং এর ফাইল ম্যানেজার

সামসাং কে আলাদা ভাবে বিবেচনা করা যায় শুধুমাত্র এঁর ফাইল ম্যানেজার এর কারণে। অন্য সব ফোনের ফাইল ম্যানেজার এর থেকে আমার সামসাং এর ফাইল ম্যানেজার খুবই খুবই চমৎকার পারফরম্যান্স দিয়ে থাকে। স্যামসং এর একটি ফাইল ম্যানেজার এ সব ধরনের ফাইল ব্যবহার করা যায়। যেটা অন্য অনেক ফোনের ফাইল ম্যানেজার এ পাওয়া যায় না। সব মিলিয়ে বলা যায় যে, স্যামসং এর ফাইল ম্যানেজার কাট কপি পেস্ট স্পিড, যেকোনো ফাইল ব্যবহার এর স্পিড, ফাইল এক্সরট করার স্পিড সব মিলিয়ে পুরাই মাখনের মতো স্যামসাং এর ফোন কাজ করে।

৫. স্যামসাং এর সেরা ডিসপ্লে

ভাই আমি বলতেছি যে, আই ফোন এর পর সবচেয়ে ভালো মানের ডিসপ্লে যেই ব্র্যান্ড তৈরি করতে পারে সেটিই হচ্ছে একমাত্র স্যামসং। বিশ্বাস না হলে আপনি নিজেই চেক করে দেখতে পারেন। এটাতে আমি আপনাদের সাথে বাজি ধরেই বলতে পারবো যে একমাত্র স্যামসং এঁর ডিসপ্লেই সব থেকে সেরা। আপনার খটকা লাগলে আপনি একটি Redmi এবং একটি Samsung ফোন পাশাপাশি রেখে দেখতে পারেন। সেটা আমার আগেই জানা আছে যে, আপনি কখনোই সামসাং এর কোনো ডিসপ্লে এর সাথে কোনো রেডমি ফোনের ডিসপ্লে প্রতিযোগিতা করে সামসাং এর ডিসপ্লে কখনোই হারাতে পারবেন না।

আমাদের সকলেরই হয়তো আগের কালের একটি অভ্যাসের কথা মনে আছে। তখন আমরা দেশের সকল লোকজনই একটি ভালো ছবি তুলে সেটাকে প্রিন্ট করে দেখতাম। প্রিন্ট করে রেখে দিতাম যখন মনে বের করে দেখতাম। তবে এখন আর কেউই আগেরকার লোকদের মতো ছবি এখন আর প্রিন্ট করে না। এখন প্রায় সকলেই তাদের ফোনের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে এবং ফোনের মধ্যেই রাখে।

সামসাং আসলে সেই বিষয়টির দিকেই নজর দিয়েছে। এখনকার ফোন গুলোতে যেকোনো ছবি সুন্দর করে দেখানোর জন্য ফোন গুলোতে খুবই ভালো একটি ডিসপ্লে থাকা দরকার। সেই বিষয়টির দিকেই নজর দিয়ে স্যামসাং তাদের ফোন গুলোতে দেখতে ভালো দেখা যায় এমন সব ডিসপ্লে ব্যবহার করে। সামসাং এর এই উদ্দেশ্যটি আমাদের জন্য খুবই উপকারী। অনেকে আছে শুধুমাত্র ডিসপ্লের কারণেই সামসাং ব্যবহার করে থাকে।

এমন একটা সময় ছিল যখন আই ফোন ফোন লঞ্চ হবার কথা চলছিল। তখন আই ফোন কোম্পানী একদমই নতুন হবার কারণে তাদের কাছে ফোনের ডিসপ্লে তৈরি করার ব্যবস্থা ছিল না। তখন তারা কি করলো? তখনই তারা সবচেয়ে সেরা ডিসপ্লের ফোন সামসাং এর ডিসপ্লে সামসাং ফোনের কোম্পানির কাছ থেকে কিনে নিয়ে তাঁদের আইফোনে ব্যবহার করা শুরু করলো। যদিও এখন তাদের কাছে সামসাং এর ডিসপ্লের থেকেও ভালো ডিসপ্লে তৈরী করার ক্ষমতা রয়েছে এজন্য এখন তাদের আর স্যামসং এঁর ডিসপ্লে ব্যবহার করতে হয়না।

৬. স্যামসাং এর নেটওয়ারকিং এবং ফাইল শেয়ারিং স্পিড

আমাদের দেশেই এখনও নেটওয়ার্কিং স্পিড খুবই কম। সেদিক দিয়েও অন্য সকল ব্র্যান্ড গুলোর থেকেও স্যামসাং এর নেটওয়ার্কিং স্পিড কোনো অংশে কম নয়। আমি আগেই বলেছি আবারও বলছি, স্যামসাং কখনোই তাদের ফোন গুলোর ছোটো খাটো সমস্যাগুলোর অবহেলা করে না। বরং তাড়া সেটা সমাধান করতে আরো বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

স্যামসাং এর ফাইল শেয়ারিং স্পিড ও কোনো অংশে অন্য সব ব্র্যান্ডের ফোন গুলোর থেকেও কম নয়। আপনি একটি আইফোনকে ডাটা ক্যাবল দিয়ে একটি উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের কম্পিউটারে কানেক্ট করে দেখুন। এতে আইফোনের এতটাই বাজে পারফরমেন্স পাবেন যে, আপনি রাগাম্বিত হয়ে যাবেন। আইফোন উইন্ডোজ এর সাথে কানেক্টই হতে চাইবে না।

তবে একটি স্যামসাং ফোন কানেক্ট করে দেখুন। স্যামসাং খুব ভালো মত এবং খুবই তাড়াতাড়িই আইফোন এর সাথে কানেক্ট হয়ে যায়। এবং খুবই দ্রুত গতিতে ফাইল আদান প্রদান করা যায়। তাছাড়া অন্য অনেক ব্র্যান্ডের ফোনেই 4g ঠিক মত কানেক্ট হতে চায় না। কিন্ত স্যামসাং এর যেই ফোন 3g, 4g, 5g যেটাই থাকুক না কেন, সেটাই ঠিক মতো কানেক্ট হয়ে যাবে।

শেষকথা
আমি Samsung, Redmi, Symphony, Walton, Oppo, Sony, Infinix ব্র্যান্ডের ফোন গুলো ব্যবহার করেছি। সকল ফোনেই আলাদা কিছু বিশেষ বিশেষ গুণ পেয়েছি। তবে সব দিক মিলিয়ে আমার কাছে একমাত্র স্যামসাং ফোনই সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। এজন্যই তো আমার আজকের রিভিউ করা।

তবে আপনাকে আমি একমাত্র স্যামসাং এর ফোন কিনতে কখনোই বলবো না। আমার স্যামসাং পছন্দ হয়েছে বলে আপনারও পছন্দ করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। সকল ফোনই কোনো একটি বিশেষ কারণের জন্যে সেরা আপনার চাহিদা এবং আপনার চয়েজ এর উপর ভিত্তি করে আপনার জন্যে কোনো একটি ফোন পারফেক্ট হবে। এজন্য আপনাকে Samsung ফোন সবসময় কিনতে হবে এমন কথা নেই। আমি কেনো স্যামসাং ফোন পছন্দ করি সেটাই আমি আজকের পোস্ট এ জানালাম।