শাহেনশাহ (২০২০)
ধরণঃ রোম্যান্টিক এ্যাকশন ড্রামা
গল্পঃ অংশুমান-প্রমিত
পরিচালনাঃ শামীম আহমেদ রনী
প্রযোজনাঃ শাপলা মিডিয়া
অভিনয়ঃ শাকিব খান (শাহেনশাহ/ডিজে), নুসরাত ফারিয়া (লায়লা), রোদেলা জান্নাত (প্রিয়া), মিশা সওদাগর (দাউদ/বিগবস), আহমেদ শরীফ (বড় নবাব), নানা শাহ (ছোট নবাব), সাদেক বাচ্চু (খাজা খাঁ), অমিত হাসান (বিগ বসের ভাই), ডি.জে সোহেল (ডিজে), বড়দা মিঠু (এমপি), সুব্রত, শিবা শানু, কমল পাটেকার, ববি, ডন, রেবেকা রউফ, মারুফ খান, লিটন হাশমি, আমিন সরকার, সাংকো পাঞ্জা, উজ্জ্বল (বিশেষ চরিত্র) প্রমুখ।
শুভমুক্তিঃ ৬ মার্চ, ২০২০
নামকরণঃ এ ছবির মূল চরিত্র, যাকে কেন্দ্র করে পুরো ১৫২ মিনিটের গল্প বলা হয়েছে, সেই চরিত্রের নামানুসারে ছবির নাম “শাহেনশাহ” রাখা হয়েছে। বাণিজ্যিক ঘরানার ছবিতে এটি একটি সাধারণ বিষয়। নামকরণটি আমার কাছে ঠিকঠাক মনে হয়েছে।
কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপঃ ছবির গল্প লিখেছেন ভারতের দুই গল্পকার অংশুমান প্রত্যুষ এবং প্রমিত সিং। গল্প অনুসারে চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন পরিচালক শামীম আহমেদ রনী, সেইসাথে সংলাপ রচনা করেছেন দেলোয়ার হোসেন দিল। গল্প খুবই সাধারণ, এধরনের মাসালা এন্টারটেইনার গল্প আমাদের দেশের ছবিতে অহরহ দেখা যায়। ছবির ট্রেইলারেও গল্প অনেকটা খোলাসা করে দেওয়া হয়েছে, তাই সে ব্যাপারে আর আলোচনা না করি।
কথা বলা যাক এছবির চিত্রনাট্য নিয়ে, যেটি প্রকৃতপক্ষে কোনো নির্দিষ্ট ছবির নকল কিংবা রিমেক হয়তো নয়। এটা বলার কারণ হলো পূর্বে শামীম আহমেদ রনীর চিত্রনাট্য সাজানো সব চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধেই নকলের অভিযোগ উঠেছে। এছবি মুক্তির পর এখন পর্যন্ত সেরকম বড় আকারে তেমন সমালোচনা হয়নি। তবে এ ছবি কোনো নির্দিষ্ট ছবির নকল নয়, এটা ভেবে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলারও সুযোগ নেই।
শাকিব খান নামভূমিকায় ‘শাহেনশাহ।’ তাকে কেন্দ্র করেই ছবির গল্প এগিয়েছে। দুই পরিবার এবং আরো কিছু ঘটনাকে ঘিরে ছবি শেষ পর্যন্ত গেছে। শাকিবের আধিপত্যেই সব চরিত্রগুলো কোনো না কোনোভাবে প্রভাবিত হয়েছে। শাকিব অসাধারণ অভিনয় করেছে তবে তার লুক ও ফিটনেস চোখে পড়েছে। হেয়ার স্টাইলে সমস্যা ছিল এবং মুটিয়ে যাওয়ার সমস্যাটিও চোখে পড়ার মতো। তার চরিত্রে শেষের দিকে টুইস্ট ছিল। ডায়লগবাজি কিছু অ্যাকশনের জন্য ভালো ছিল। যেমন-‘আমি সেই শিকারী যে তার শিকারের শিকার করার আগেই তার নিঃশ্বাসটাই বন্ধ করে দেয়।’ আবার ডিম্বাণু শুক্রাণু জাতীয় ডায়লগবাজি খুবই আপত্তিকর ছিল।
অন্যান্য চরিত্রে নায়িকাদের মধ্যে রোদেলা জান্নাতের এন্ট্রিটা খুবই সুন্দর। তার অভিনয় প্রমিজিং, ফিটনেসের দিকে নজর দিলে ভবিষ্যত ভালো। তার লুক অনেকটাই মারজান জেনিফা-র মতো। নুসরাত ফারিয়ার এন্ট্রিও ভালো ছিল কিন্তু ভয়েসের সমস্যাটা আছে তাকে আসলে ডাবিং করানোর সময় এসে গেছে। আহমেদ শরীফ, মিশা সওদাগর, অমিত হাসান, ডন-রা লাউড অ্যাকটিং-ই করে গেছে ভিন্ন কিছু ছিল না। তবে মিশার শায়ের বলা ডায়লগবাজি উপভোগ্য ছিল। সবচেয়ে বিরক্তিকর ছিল ডিজে সোহেল। গানের লোকেশন ভালো ছিল ইনডোর-আউটডোরে মিলিয়ে। ছবির ক্যামেরার ভাষা কখনো বেটার আবার কখনো দুর্বল মনে হয়েছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও সবসময় ভালো ছিল না। মোটকথা ভালোমন্দেই নির্মিত হয়েছে ছবিটি। তবে ডিজিটাল ছবির অন্যান্যগুলোর মতো না দেখিয়ে ওয়াইড স্ক্রিনে দেখানোতে ফিল্মি ব্যাপারটা ভালোমতো পাওয়া গেছে।
পরিচালক শামীম আহমেদ রনি কলকাতার ভাষার স্টাইল ফলো করেছেন। যেমন কথার মধ্যে ‘মালটা কে রে, ক্যালানি’ জাতীয় শব্দের ব্যবহার করেছেন। ছবির গানে ‘প্রেমের রাজা’ অলরেডি হিট আর রোমান্টিক গানের মধ্যে ‘তুই সাথে চল’ বেস্ট ছিল।
‘শাহেনশাহ’ উপভোগ্য ছবি। বিনোদনমূলক সময় পার করতে দেখার মতো ছবি।
যারা এখনো দেখেনি তাদের জন্য ডাউনলোড লিংক দিলামঃ Download In 720P Quality Google Drive