অনেকেই আউটসোর্সিং এর উপর একটা ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে বসে আছেন এবং এর মাধ্যমে সময় বা অর্থ অপচয় করে এখন এর থেকে দূরেও আছেন। তবে কথা হচ্ছে যা আপনি এর আগে চেষ্টা করেছেন তা কি আসলেই যুক্তিসঙ্গত ছিল? আপনি যে কাজের পিছনে দৌড়িয়েছেন তা কি আসলেই অর্থ ইনকাম এ সহায়ক? আসুন সে ব্যাপারেই কিছু কথা জেনে নেই।

প্রথমে ফেসবুকে সকল প্রকার ট্রিকের আপডেট পেতে লাইক দিন

ক্লিক করে অর্থ আয়। সবচেয়ে বেশি নাম কামানো স্ক্যাম বোধহয় এটাই। যদিও সত্যিকার অর্থে ইনকাম পেয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। আর যারা পেয়েছে তারা এক অর্থে ভাগ্যবানও বটে। কেনোনা এধরণের স্ক্যাম গুলো শুধু প্রথম দিকে নিজেদের মার্কেটিং এর জন্যই পেমেন্ট দিয়ে থাকে এবং কিছুদিন পরই তাদের আসল উদ্দেশ্য বুঝা যায়। যাই হোক এসব কোম্পানি প্রিমিয়াম অফার ও রাখে। প্রিমিয়াম অফারের মাধ্যমে এবং বিজ্ঞাপনের ক্লিক করানোর মাধ্যমে কিছু ইনকাম করে গায়েব হয়ে যায়।

বন্ধুদের সাথে লিংক শেয়ার করে ইনকাম করা যায় এমন একটা পদ্ধতি ফেসবুক, টুইটার এবং আরো অনেক মাধ্যমে ইদানীং অহরহ দেখা যায়। আর এটা আসলে স্ক্যাম বা ভুয়া। আপনি নিজেই ভাবুন লিংক শেয়ার করার কারণে কেনো কেউ আপনাকে অর্থ দিবে? তাদের লাভটাই বা কোথায়? এটা ঠিক কিছু কিছু কোম্পানি তাদের ওয়েবসাইট বা ব্যবসাকে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার বিনিময়ে অর্থ দিয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে তাদের কিছু শর্তও থাকে। যেমন কিছু কিনতে হবে বা তাদের সার্ভিস ব্যবহার করতে হবে। আর এসব ক্ষেত্রে আপনার আমন্ত্রণ জানানো মানুষের থেকে তারা যে ইনকামটি করবে তারই একটি অংশ আপনাকে তারা দিবে।

আউটসোর্সিং বা অনলাইনে ইনকামের ব্যাপারটি কোন মতেই এমএলএম এর মতো নয়। এরকম কোন কিছু থেকে সবসময়ই দূরে থাকাই ভালো। ইন্টারনেট থেকে আয় করতে কখনোই আপনাকে আগে অর্থ দিতে হবে না। যেমন জয়েন করতে বা সার্ভিস ব্যবহার করতে আপনাকে কখনোই আগে অর্থ জমা দিতে হবে না। আপনি কাজ করে যে ইনকাম করবেন তারই একটা নির্দিষ্ট অংশ মার্কেটপ্লেস কেটে নিবে। তবে কিছু মার্কেটপ্লেসে জয়েন করার সময় প্রিমিয়াম মেম্বারশিপ নিতে বলে। এবং তারা ফ্রি মেম্বারশিপও রেখেছে। এক্ষেত্রে প্রিমিয়াম মেম্বারশিপ নিতে বলার কারণ আরো বেশি পরিমাণ সুযোগ- সুবিধা ব্যবহারের সুযোগ নেয়ার জন্য। যেমন আপনার মাসিক বীড লিমিট (কাজ নেয়ার জন্য মার্কেটপ্লেসের কোন প্রোজেক্ট এ অ্যাপ্লিকেশান সাবমিট করা) বাড়িয়ে নেয়া বা যেকোনো অপশনে অগ্রাদিকার পাওয়া ইত্যাদি। আর এক্ষেত্রে তা আপনি না নিতে চাইলে স্কিপ করা যাওয়ার অপশন রয়েছে। শেয়ার করে মোবাইল রিচার্জ এমন কিছুও বর্তমানে অনেক দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এগুলোর সবই ভুয়া। এর পিছনে শুধু সময় নষ্ট সেই সাথে আপনার টাকাও।

অনেকেই মনে করেন যে একটি ওয়েবসাইট খুললেই টাকা ইনকাম করা যায়। ওয়েবসাইটে অনেক ভিজিটর মানেও টাকা। এটাও ভ্রান্ত ধারণা ছাড়া কিছুইনা। এটা সত্যি যে ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করা যায়। আর করা যায় বলেই ইন্টারনেট এ এতো এতো ওয়েবসাইট রয়েছে। তবে শুধু খুললেই কে আপনাকে টাকা দিবে? কেন টাকা দিবে? ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করতে চাইলে আগে আপনাকে তা জানতে হবে এবং সেভাবেই কাজ শুরু করতে হবে।

বর্তমানে অনেককে ফেসবুক লাইক নিয়ে টানাটানি করতে দেখছি। আর এদের অনেকের সাথেই কথা বলে জানা গেলো এদের ধারণা অনেক লাইক থাকলে টাকা ইনকাম করা যায়। সেটা পার্সোনাল প্রোফাইল হোক আর ফেসবুক পেইজ হোক। আর অনেকে এটাও মনে করেন যে টাকা দিবে স্বয়ং ফেসবুক। এটাও ভ্রান্ত ধারণা। উল্টো ফেসবুক থেকেই আপনার ব্যান (চিরতরে ব্লক) হওয়ার সম্ভবনাই বেশি। ফেসবুক কখনোই কাউকে লাইক বেশি থাকার জন্য অর্থ দেয়না। তবে ফেসবুক থেকে ইনকাম করা যায় যা ভিন্ন অর্থে। যেমন আপনার ওয়েবসাইটে ফেসবুক পেইজ থেকে ভিজিটর পাঠানোর মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকেই অর্থ ইনকাম করার সুযোগ বাড়িয়ে বা কোন পন্যের মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিক্রি বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে। এরকম আরো অনেক ধরণের স্ক্যাম রয়েছে। যেকোনো নতুন কিছু আসলেই শুরুতেই কাজে নেমে না পরে আগে একটু যাচাই করুন। বুঝতে চেষ্টা করুন তারা কেন অর্থ দিবে? তাদের লাভটা কি? যদি তাও উত্তর না পান তবে ইন্টারনেটেই একটু খোঁজ করুন। তাদের সম্পর্কে তথ্য বের করতে চেষ্টা করুন। এরপর নিজেই সিদ্ধান্ত নিন।

প্রথমবার প্রকাশিতঃ TechZBD

Leave a Reply