Site icon Trickbd.com

সহজ কিছু ভিডিও তৈরি করে আয় করুন ইউটিউব থেকে

আপনি যদি একজন ইন্টারনেট আসক্ত মানুষ হয়ে থাকেন তবে আপনার দিনের অনেকটা সময়ই যে ইউটিউবে কাটে সেটা আন্দাজ করে নেয়া খুব একটা কঠিন কিছু নয়। এখন আপনি ভাবুন, এই ইউটিউবে শুধু অন্যের ভিডিও ব্রাউজ না করে যদি আপনি নিজেই একটি চ্যানেল তৈরি করে আপনার করা নতুন কোন ভিডিও আপলোড করতেন তাহলে একটা সময় গিয়ে এই ইউটিউব থেকেই আপনি চমৎকার একটা অ্যামাউন্ট ইনকাম করতে পারতেন যে অ্যামাউন্টটা হয়তো অনেকে চাকুরী করেও মাসের শেষে হাতে পায় না!

অনেকের মাথায়ই হয়তো এরকম চিন্তা আগে এসেছে কিন্তু তখন তারা ঠিক বুঝে উঠতে পারেননি যে কি রকমের বা কোন ক্যাটাগরির ভিডিও নির্মান করে ইউটিউবে আপলোড করলে সেখান থেকে আয় করা সম্ভব হবে, এবং এরপরেই হয়তো তারা পিছিয়ে গিয়েছেন। তাই আমি আজ আপনাদের জন্য – যারা আগে ভেবেছেন কিন্তু বুঝে উঠতে পারেননি এবং যারা কখনো ভাবেননি, মোটকথা সবার জন্যেই কিছু সহজ ক্যাটাগরির ভিডিও নির্মান করার পদ্ধতি শেয়ার করবো যার ফলে মোটামুটি কম শ্রমেই আপনিও হয়তোবা হয়ে উঠতে পারেন একজন সফল ইউটিউবার। চলুন তাহলে, কথা না বাড়িয়ে শুরু করে দেয়া যাক।

আনবক্সিং ভিডিও

হয়তোবা ইউটিউবে যে ভিডিওগুলো আছে সেগুলোর মধ্যে সবচাইতে কম শ্রম খরচ করে এই ক্যাটাগরির ভিডিও তৈরি করা সম্ভব। মজার বিষয় হচ্ছে, এই ক্যাটাগরির ভিডিওগুলো তৈরিতে কম শ্রম খরচ হলেও এই ধরণের ভিডিওগুলো কিন্তু ইউটিউবে দারুণ জনপ্রিয়।

আনবক্সিং ভিডিও বলতে কি বোঝায় তা নিশ্চয়ই আপনার জানা আছে? তবুও যারা জানেন না তাদের জন্য সংক্ষেপে লিখছি। ধরুন, একটি প্রোডাক্ট আপনার কাছে আছে বক্স সহ। সেটা হতে পারে স্মার্টফোন, ট্যাব, টেলিভিশন, ল্যাপটপ বা এরকম যে কোন কিছু। এখন, আপনাকে যা করতে হবে সেটা হচ্ছে যে কোন একটি প্রোডাক্ট (অবশ্যই যা আপনার কাছে আছে) বক্স থেকে বের করতে হবে তথা আনবক্স করতে হবে। প্রোডাক্টটির সাথে অন্যান্য কি কি এক্সেসরিজ আছে সেগুলোও আপনাকে প্রদর্শন করতে হবে। এমনভাবে আপনাকে পুরো বিষয়টা উপস্থাপন করতে হবে যেন যদি কেউ সেই প্রোডাক্টটি কিনতে চায় এবং বক্সের ভিতরে কি কি রয়েছে তা জানতে চায় তাহলে যেন সহজেই আপনার তৈরি করা ভিডিও থেকে সে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো বুঝে নিতে পারে।

এই ক্যাটাগরির ভিডিও নির্মানের জন্য শ্রম কম খরচ হয় এজন্যেই বলছি কেননা আপনাকে এর জন্য শুধু যে প্রোডাক্টটির আনবক্সিং করবেন তা লাগবে আর একটি ক্যামেরা লাগবে যার মাধ্যমে আপনি ভিডিও ধারণ করবেন। ব্যাস!

প্রোডাক্ট রিভিউ ভিডিও

আনবক্সিং ভিডিওর সাথেই মূলত প্রোডাক্ট রিভিউ ভিডিও সম্পর্কিত। কেননা, আপনি যে প্রোডাক্টটি আনবক্স করে দেখালেন সেটাই আপনি বিস্তারিত রিভিউ করার সময় সমগ্র বিষয়টি ভিডিওতে ধারণ করলেই সেটা প্রোডাক্ট রিভিউ হয়ে যাবে। তবে এক্ষেত্রে আপনার বেশ কিছুটা সময় সেই প্রোডাক্টটি ব্যবহার করে এর খুঁটিনাটি তথ্য জানতে হবে কেননা আপনার রিভিউ এর উপর ভরসা রেখেই কোন একজন সেই প্রোডাক্টটি কিনতে পারে।

গেমপ্লে ভিডিও

এটা আরও মজার একটি ক্যাটাগরি! ধরুন, আপনি যদি একজন গেম পাগল মানুষ হয়ে থাকেন তবে নিশ্চয়ই বাজারে নতুন গেম এলেই সেটা আপনার খেলা হয়ে যায়? কিন্তু সাধারণ যারা আছেন বা যারা সহজ কথায় ততটা গেম পাগল নন তারা কিন্তু বেশ ভেবে চিন্তেই গেম খেলে থাকেন। তো, ধরুন আপনি নতুন নতুন গেম খেলার সময় শুধু স্ক্রিন রেকর্ড বা গেমপ্লে রেকর্ড করলেই সেটা গেমপ্লে ভিডিও হয়ে যাবে যাকে অনেকেই ভিডিও গেম ওয়ালথ্রু-ও বলে থাকেন। ভাবছেন, এটা করলে কি লাভ? ঐ যে, একটু আগে বললাম সাধারণ গেমার দের কথা! তাই ৫০গিগাবাইটের একটি গেম কেনা বা ডাউনলোডের আগে অনেকেই এই গেমপ্লের ভিডিওগুলো দেখে থাকেন এবং গেমপ্লে পছন্দ হলেই মূলত কিনে থাকেন বা ডাউনলোড করে থাকেন সেই গেমগুলো। আর এভাবেই আপনার করা ভিডিও গেম ওয়াকথ্রুগুলো অন্যের কাজে আসবে আর সাথে আপনিও কিছু টাকা আয় করতে পারবেন।

টিউটোরিয়াল

আমরা যে টিউটোরিয়ালগুলো প্রিয়তে লিখে থাকি বা অন্যান্য সাইটেও আপনারা পড়ে থাকেন সেগুলোও কিন্তু ভিডিও আকারে ইউটিউবে আপলোড হতে পারে। ধরুন, আমি একদিন লিখেছিলাম উইন্ডোজের কমান্ড লাইনের কিছু ব্যবহার। এই একই বিষয়টি কিন্তু আমি কম্পিউটারে করার সময় স্ক্রিন রেকর্ডের মাধ্যমে একটি ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড দিতে পারতাম। বিশ্বাস না হলে ইউটিউবে গিয়ে দেখুন, এরকম হাজার হাজার হাও টু/টিউটোরিয়াল ভিডিও পাবেন। এটা যে কোন ধরণের হতে পারে। উইন্ডোজ থেকে শুরু করে সাইকেলের লিক হয়ে যাওয়া টিউব ঠিক করা পর্যন্ত, যে কোন কিছু।

ফ্যান ভিডিও এবং মুভি রিভিউ

ধরলাম আপনার কাছে কোন প্রোডাক্ট নেই, আর আপনি কোন গেমও খেলেন না! তাহলে? মুভিতো দেখেন? তাহলে একটি মুভি দেখে সেই মুভিটির সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়াই ভিডিওতে ধারণ করে ছেড়ে দিন! বিশ্বাস করুন, ইউটিউবে এই ক্যাটাগরির ভিডিও অনেক বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কারণটাও সহজ! ধরুন, ডেডপুল যখন নতুন নতুন মুক্তি পেল তখনই আপনি প্রেক্ষাগৃহে বা অন্য কোন মাধ্যমে প্রথম দিনই মুভিটি দেখে নিলেন। এরপর বাসায় এসে আপনার মুভিটি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া (খারাপ এবং ভালো, যাই হোক) ভিডিওতে ধারণ করে ছেড়ে দিলেন। ব্যাস! আপনার কাজ হয়ে গেল! মানুষ একটি মুভি দেখার আগে, বিশেষ করে যে মুভিগুলো নিয়ে অনেক গুজব বা উন্মাদনা সৃষ্টি হয়ে থাকে সেগুলোর রিভিউ মানুষ দেখে নিতে পছন্দ করে, আর এভাবেই এই ক্যাটাগরির ভিডিওগুলো কাজে আসে।

 

 

শেষ কথা – আমি এখানে সহজ কিছু ক্যাটাগরি শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে। তাই বলে কিন্তু এই ক্যাটাগরির বাইরে কিছু নেই – এমনটা ভেবে বসবেন না। অনেক ক্যাটাগরি আছে, অনেক প্রকারের ভিডিওই তৈরি করা সম্ভব। আপনি নিজেই ভাবতে বসে দেখুন না, হয়তো আরও সহজ কিছু আপনার মাথায়ই চলে আসবে।