Site icon Trickbd.com

এডসেন্সের জন্য বাংলা ব্লগিং: এপ্রুভ পাওয়ার জন্য কিছু অসাধারণ কৌশল | আর নয় ভিনদেশী ভাষা, ব্লগিং হবে এবার মাতৃভাষায় || বাংলা ব্লগিং টিউটোরিয়াল

Unnamed

গত ২৬শে সেপ্টেম্বর থেকে সোনার হরিণ এডসেন্স বাংলা সাপোর্ট করছে। এটা শোনার পর থেকে বাঙালি ডেভেলাপার আর ব্লগাররা রীতিমত নাচানাচি শুরু করে দিয়েছে। এতদিন বাংলা ভাষার যে ব্লগ থেকে দিনে দশ টাকা আসত সেই একই ব্লগ থেকে এখন প্রতিদিন আসবে একশো টাকা। যে ব্লগ এতদিন দিনে একশো করে আয় করেছে সেটার কথা আর নাই বা বললাম।

তো, এডসেন্স যেহেতু বাংলা বুঝতে শুরু করেছে সুতরাং আর আমরা ভিনদেশী ভাষার ধার ধরব না। যে ভাষার জন্য কয়েক যুগব্যাপী রক্ত হারিয়েছি এখন সেই ভাষাতেই ব্লগিং করব। দেখব কে ঠেকায়।

আপনি নিশ্চয়ই ঠিক করে ফেলেছেন একটি বাংলা ব্লগ খুলে ফেলবেন। কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি এর জন্য আপনাকে কি কি করতে হতে পারে? বা বাংলা ব্লগিং এর জগতে প্রতিযোগীতা কেমন? না ভেবে থাকলে থাক, আর ভাবতে হবে না। কারণ এখন আমি নিজেই এই নিয়ে আলোচনা শুরু করব।

ব্লগটি তৈরী করুন

হুমম, এডসেন্স দিয়ে লাক্ষপতি হয়ে যাবেন মানলাম, কিন্তু তার আগে ব্লগ তো তৈরী করতে হবে। এডসেন্সে এপ্রুভ পেতে হলে এডসেন্সের সকল নিয়ম মেনে মাঠে নামতে হবে, মানে ব্লগ তৈরী করতে হবে। ব্লগের মান ভাল থাকতে হবে। আর কপি পেষ্ট (যা বাঙালিদের ট্রেডমার্ক) সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে।

আমার এক কাজিন এডসেন্সের ব্যাপারে প্রায়ই বলে, নট কোয়ান্টিটি বাট কোয়ালিটি। অর্থাৎ কম সংখ্যক ভাল মানের পোষ্ট এডসেন্সে এপ্রুভ পাওয়ার জন্য যথেষ্ট।

ব্লগ তৈরী করতে এখন পাঁচ মিনিটই যথেষ্ট। তবে ভাল মানের ব্লগের জন্য একটু খাটাখাটি করতে হবে। ফ্রিতে তৈরী করতে চাইলে ব্লগার বেছে নিন। আর খরচ করতে চাইলে ভাল মানের হোষ্টিং কিনে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল দিন।

সেইরাম আর্টিকেল লিখুন

কন্টেন্টই হচ্ছে ব্লগের শক্তি। সুতরাং এদিকে মনোযোগ না দিয়ে উপায় নেই।

নিজে যা জানেন তাই লিখুন। আবার বলছি কপি পেষ্ট সম্পূর্ণ নিষেধ। আর্টিকেলে ছবি যুক্ত করুন। আর্টিকেলের সাইজ হবে ৫০০ থেকে ৭০০ শব্দের মধ্যে।

ভুলবেন না এসইও

বাংলায় সার্চ খুব কম হয় বলে এসইওতে মনোযোগ দিবেন না তা কিন্তু হবে না। হ্যা, ইংরেজির তুলনায় আপনার বাংলা ব্লগটা হয়ত গুগোল বা ইয়াহু থেকে কম ট্রাফিক পাবে, তবে একেবারে পাবে না এমন নয়।

মেটা টাইটেল, মেটা ট্যাগ, পোষ্ট ট্যাগগুলো ভালভাবে যুক্ত করুন। পেজ বা পোষ্টের বর্ননা দিন সংক্ষেপিত তবে তথ্যবহুল ভাবে। আর হ্যা, ভিনদেশী ভাষায় এগুলো লিখতে হবে না। বাংলাতেই লিখুন।

যথেষ্ট পরিমানে কন্টেন্ট থাকা চাই


হ্যা উপরে আমার কাজিনের কথাটা কিঞ্চিত পরিমানে ভুল হতে পারে। ব্লগে কমপক্ষে পনেরো থেকে ত্রিশটা পোষ্ট লাগবে। প্রতি ক্যাটাগরিতে ৩ থেকে ৫ টা পোষ্ট রাখতে চেষ্টা করুন। সংখ্যাটা কিন্তু ততটাও বেশি না। তাই বলা যায় আমার কাজিন পুরোপুরি ভুল বলে নি।

ডোমেইন হতে হবে পুরোনো

কমপক্ষে ছয়মাস পুরোনো একটা ডোমেইন দিয়ে রিকুয়েস্ট পাঠাবেন। ব্লগারের কর্তৃপক্ষের ভাষায়,

‘In some locations, including China and India, we require publishers to have owned their sites for 6 months. We’ve taken this step to ensure the quality of our advertising network and protect the interests of our advertisers and existing publishers.’

তাই সাইটাকে একটু পুরোনো করে তারপর রিকুয়েস্ট পাঠাবেন।

সোশ্যাল মার্কেটিং

এখানে আপনি কিছু এডভান্টেজ পাবেন। আপনার ব্লগের ভাষা বাংলা, আপনার ফ্রেন্ডসদের ভাষাও বাংলা। সুতরাং আপনার ব্লগ তারা ভিজিট করবেই।

নিজের ব্লগের একটি ফ্যান পেজ খুলুন, টুইটারে একাউন্ট খুলুন, পিন্টারেষ্টের কথাও ভুলবেন না। পারলে ইউটিউবে একটি চ্যানেলও খুলে ফেলুন।

একটু আশেপাশে তাকালেই দেখতে পারবেন আপনার বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই ফেসবুক কিং বা ইন্সটাগ্রাম কুইন। তাদেরকে নিজ দলে ভিড়িয়ে নিন। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের কথায় পাবলিক বেশি প্রভাবিত হবে। তাই তাদের দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের সাইটে প্রচার চালানোটা লাভজনক হতে বাধ্য।

শেষ কথা

অতিরিক্ত উত্তেজিত না হয়ে ধৈর্য ধরে শান্তভাবে ধাপে ধাপে নিজের স্বপ্নকে পূরন করুন। একটা ব্লগ দুই দিনেই ফেমাস হয়ে যায় না। এর পেছনে মাসের পর মাস সময় খরচ করতে হয়। তাই বলে পিছিয়ে যাবে না আবার।

আর এখন এডসেন্সও আমাদের মাতৃভাষায়। ব্লগিং এখন আর রোবটের মত হবে না। বরং এতে অনেক বেশি পরিমানে আবেগ জড়িয়ে থাকবে আর জানেনই তো যে কাজ আবেগ দিয়ে করা হয় তা কখনও ব্যর্থ হয় না।

Exit mobile version