গত কয়েক দিন আগে খুব ঘটা করে পেপাল বাংলাদেশে আসছে এরকম প্রচারনা চালালো জাতীয় দৈনিক গুলো।
সব গুলো খবর ও অনলাইন ফ্রী ল্যান্সার, এক্টিভিস্ট গন শেয়ার করলেন। ট্রিকবিডিতে ও এটা নিয়ে পোষ্ট হয়েছে অনেক।
পেপাল আসছে পেপাল আসছে এরকম খবর দেখতে দেখতে চোখ ঝালাপালা হওয়ার অবস্থা(যেহেতু অনলাইনে কান ঝালাপালা হওয়ার কোন পথ নেই)
কিন্তু আসলেই কি বাংলাদেশ পেতে যাচ্ছে অনলাইন লেন দেন এ ব্যাপক জনপ্রিয়ে পেপাল সার্ভিস?
মূল কাহিনীতে যাওয়ার আগে পেপাল সম্পর্কে একটা গল্প শোনাই। লোক মুখে শোনা কথায় এরকম টা জানা যায় বাংলাদেশে কোন এককালে পেপাল এক্টিভ ছিলো । বাংলাদেশ থেকেও মানুষ শান্তি মতো পেপাল সার্ভিস ব্যবহার করতো। কিন্তু শান্তি তো বাংলাদেশীদের কপালে সয় না… অনেক সাধু , ভদ্র টেলেন্টেড বাংলার সন্তান নাকি পেপাল এর মাধ্যমে অনলাইনে কেনাকাটা করে সার্ভিস/ জিনিষ টা হাতে পাওয়ার পর দাবী করতো তারা জিনিষ টা হাতে পায়নি অথবা তাদের কে ভেজাল জিনিষ/সার্ভিস দেয়া হয়েছে। এরকম অভিযোগ এনে তারা পেপাল এর “Refund” সিষ্টেম টা ব্যবহার করে তাদের টাকা ফিরিয়ে আনতো… এক ঢিলে ২ পাখি… জিনিষ ও পেলো টাকা ও থাকলো । এরকম অবস্থা কন্টিনিউ হওয়াতে নাকি পেপাল বাংলাদেশে সার্ভিস দেয়া বন্ধ করে দেয়া।
কাহিনী টা সত্যি নাকি গুজব জানি না তবে এরকম টা হলেও হতে পারে। পেওনিওর এর অবস্থা দেখেন , কি সুন্দর দেশে বসে বিদেশে একটা ব্যংক একাউন্ট খুলার সুযোগ দিচ্ছে সাথে লেনদেন কে ও সহজ করে দিচ্ছে তারা … সাথে দিচ্ছে একটা সুন্দর ইন্ট্যারন্যশনাল মাস্টারকার্ড… আমাদের কারো কাজে লাগুক আর না লাগুক এইসব পেওনিউর একাউন্ট আর মাষ্টার কার্ড লাগবেই, সেটা মাষ্টার কার্ড মানিব্যাগ এ রেখে ভাব দেখানোর জন্য হলেও … এনে ফেলে রাখবো কোন সমস্যা নেই… আমি ব্যাক্তিগত ভাবেই একজনকে চিনি যে ৩-৪ টার মতো মাষ্টারকার্ড এনে ফেলে রাখছে কিন্তু ১ টাকা ও কার্ডে রিচার্জ করে নাই… এইসব এক্টিভিটির পরিনিতি বাংলাদেশ থেকে পেওনিউর মাষ্টার কার্ড পাওয়া ও কঠিন থেকে কঠিন তর হচ্ছে হয়তো একসময় বন্ধ ও হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশে তাদের সার্ভিস প্রদান।
সুতরাং এই কথা বলা যায় অনলাইনে বাংলাদেশকে এত্তো অবহেলা করা, বাংলাদেশে বিভিন্ন অনলাইন সার্ভিস বন্ধ থাকার মূল কারন আমরা নিজেরাই এটার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নাই 🙂
যাইহোক আবার পেপাল বাংলাদেশে আসছে নাকি সেই ব্যাপারে আসি… শুধু মাত্র কিছু দিন আগের পোষ্ট না… পেপাল বাংলাদেশে আসছে এরকম খবর কয়েকদিন পর পর নিউজ পেপার গুলো শেয়ার করে। আর আমরা সবাই হুমড়ি খেয়ে সেই পোষ্ট পড়ি, শেয়ার করি তারপর ভুলে যাই সব কিছু 🙂
সব কিছুই হয় কিন্তু পেপাল এর আর দেখা পাওয়া যায় না … মূলত সেই ২০১১ সাল থেকে এরকম অবস্থা ই হয়ে আসতেছে…(“বাংলাদেশে পেপাল” লিখে গোগল করলে দেখতে পাবেন পেপাল বাংলাদেশে কত্তোবার এসেছে সেটা) তবে এইবার এর নিউজ টা খুব ভালো ভাবেই প্রচার হচ্ছে আগামী ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশে চালু হচ্ছে পেপাল।
প্রথম আলো তে যে নিউজ টা প্রকাশিত হয় সেখানে লেখা হয় “ পেপাল-জুমের ক্যালিফোর্নিয়ার সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে পেপালের জুম প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বিপণন কর্মকর্তা জুলিয়ান কিং।” । এই লেখাটা পড়ে মোটামোটি দ্বিধায় পরে গিয়েছিলাম এই ভেবে পেপাল আর জুম ২ টি স্বতন্ত্র কোম্পানী। তাহলে পেপাল চালু করতে গেলে কেনো পেপালের জুম প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে লাগবে? পেপাল জুম কিনে নিলে ও পেপাল জুম ২ টি আলাদা জিনিষ। তাহলে কি বাংলাদেশে জুম অফিশিয়াল ভাবে চালু হতে যাচ্ছে? এই প্রশ্ন টা থেকেই যাচ্ছে।
তারপর আবার “Paypal Support” নামক পেপাল এর অফিশিয়াল সাপোর্ট টিম কে পেপাল বাংলাদেশে আসছে কিনা সেই ব্যপারের খবর নিশ্চিত করতে টুইটারে জিজ্ঞাসা করলে তারা সরাসরি বলে দেয়া পেপাল বাংলাদেশে কোন সার্ভিস প্রভাইড করে না এবং পেপাল যদি সার্ভিস প্রোভাইড করা শুরু করে পেপাল এর country লিষ্ট এ বাংলাদেশকে দেখা যাবে । সেই পোষ্টটির স্ক্রিনশুট নিচে দেয়া হলো
তবুও শত আশায় পথ চেয়ে আছি আমরা পেপাল এর অপেক্ষায়। ১৯ অক্টোবর ই সব দ্বিধা দন্ধ পরিষ্কার করে আশা করি সত্যি পেপাল আসবে বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের অনলাইন এর আকাশে যুক্ত হবে নতুন এক ধ্রুবতারার মতো পেপাল নামক নক্ষত্র… সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে আমার বাংলাদেশ 🙂