অনলাইন ইনকাম আসল কি?
ইন্টারনেট থেকে নৈতিক উপায়ে সময়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিমাণ অর্থ উপার্জনের নামই হলো অনলাইন ইনকাম। এখানে ইন্টারনেটে আপনি স্বাধীনভাবে যেকোনো কিছুই করতে পারেন তা হউক ফ্রিল্যান্সিং কিংবা অন্য যেকোনো আউটসোর্সিং।
অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে কিছু ভুল ধারনা:
আমরা প্রায় সময় এমন অনেক এপ্স/ওয়েবসাইট দেখি যারা এডভারটাইজ দেখার বিনিময়ে আপনাকে টাকা দেয়; এসব সাইটের ইনকাম ডায়াগ্রাম এভাবে দেওয়া যেতে পারে:
এডভারটাইজ ইউনিট [যারা তাদের কোম্পানির বিজ্ঞাপনের জন্য টাকা দেয়] → এড সার্ভে মিডিয়া [যারা টাকা নিয়ে এড সার্ভ করে যেমন গুগল, চিতিকার বা রেড গ্রীন এর মতোন দেশী মিডিয়া] → মিডিয়াম [যেমন গুগল এডসেন্স বা এডমোব ইত্যাদি এড নেটওয়ার্ক] → এপ্স/সাইট এডমিন [ যারা তাদের সাইট/এপ্সে এড কোড বসিয়ে ভিজিটর/ভিউয়ার বাড়াতে চেষ্টা চালায়] → লেজি লিজেন্ড [ এরা হলো আপনার আমার মতোন অলস ভিউয়ার বা ভিজিটর যারা ঐ হাতে হাতে ভাগ হওয়া টাকার ভাগীদার হওয়ার লোভে নির্বাক এডভারটাইজ গলঃধকরণ করি]।
আবার লোভনীয় বাহারী বিজ্ঞাপন থেকে কম যায়না পিসিটি সাইটও!
যারা সত্যিকারের অনলাইন ইনকাম করতে চান তারা এসব পরিহার করুন।
টিভির সামনে নির্বাক বসে বিজ্ঞাপন গিললে যেমন আপনার ডিশ লাইনের বিল দেওয়া স্বার্থক নয় তেমনি আপনার খরচ করা মেগাবাইটের এক দশমাংশ মূল্য ফেরত পাওয়ার নামও আউটসোর্সিং হতে পারেনা।
হয়তো আপনি বলবেন যে আপনি ফ্রি নেট বা ওয়াইফাই ইউস করি তাহলে মেগাবাইট এর চিন্তা কেন? আপনি আপনার লাইফের সবচেয়ে মূল্যবান এ্যাসেট “সময়” সেটা এমনি নির্বিচারে খরচ করছেন যা অপচয় এর নামান্তর, সুতরাং লাইফে সফল হতে হলে নিজের সময়ের মূল্য দিন তাহলেই লাইফ আপনাকে মূল্যায়ন করবে।
ভাবছেন বসেই যখন আছি তাহলে কি আর করবেন??
ভাইরে এটাই তো সমস্যা যে আপনি বসে আছেন, এটা আপনার শেখার সময় তাই হতাশ হয়ে হেরে গেলে চলবে কেন??
কি করবেন??
আপনি যা ইচ্ছা তাই করুন তবে সেটা যেন সময়ের সাথে খাপ খাওয়িয়ে আপনার পকেটের মাপের সমান অর্থ উপার্জন করতে পারেন সেটাই আসল কথা।
নিশ্চয়ই ইন্টারনেট থেকে নিজে ২ টাকা উপার্জন করা অনেক বড় স্যাটিসফেকশন তবে সেটা সাকসেসফুল নয় মোটেও কেননা যতোঔ মহিমা থাক না কেন বাস্তবে ২টাকার নোটের মূল্য সর্বদাই ২ টাকা।
সঠিক পথের সন্ধান:
আপনি (১)ওয়েব ডেভলপিং (২)ওয়েব ডিজাইন (৩)গ্রাফিক্স ডিজাইন (৪) সফটওয়ার ডেভেলপিং (৫) প্রোগামিং (৬)কনটেন্ট রাইটিং (৬) রিপোর্ট রাইটিং/রিভিউ রাইটিং (৭)ট্রান্সলেট (৮)ফটোশপ ইত্যাদি কাজ শিখে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।
আবার স্বাধীন ইনকাম হিসেবে নিজের ওয়েবসাইট তৈরী এবং তা হতে ইনকাম করার মতো বিষয়গুলা তো থাকছেই এছাড়াও আজকের দিনে ফেসবুক,ইউটিউব হতেও আর্নিং করার পাশাপাশি সেলিব্রেটি সেলিব্রেশন বিষয়টা একটা আলাদা ফিডব্যাক!!
হয়তো আপনি ভানতে পারেন যে এসব কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সার বা আপওয়ার্কে যদি কাজ না পান তাহলে কি করবেন??
সত্যি বলতে প্রথম প্রথম বিডিং করে উইন হওয়া কঠিন হবে তবে সময়ের সাথে সাথে একটু পরিচিতি আর একটু প্রজ্ঞা চলে আসলে মাসে ১০০ ডলার থেকে ১০০০ ডলার উপার্জন করাও সম্ভব।
আর বিশেষত বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আপনি উক্ত কাজগুলা জানলে অনলাইনে নয় বরং বাস্তব জীবনে নিজেকে যেকোনো একটা কর্মক্ষেত্রে প্রতিস্থাপিত করতে পারবেন।
একটা কৌতূক বলি(বাস্তব সত্য),
গতকাল আমাদের এলাকার একটা ছেলে চায়ের দোকান কথায় কথায় আবদার করলো ভাইয়া আপনি তো ইন্টারনেটে কাজ করেন তাহলে আমাকে একটা কাজ দিবেন। আমি বললাম তুমি অনলাইনে কি কাজ জানো? সে বললো যে সে নাকি ফটোকপি করতে পারে!!
আসলে এটা কৌতূক শোনালেও এখানেই ক্যারিয়ার গড়ার মূল কথা রয়ে গিয়েছে, সুতরাং সমাজে একটা সময় যারা সবাই তোমাকে দেখে হাসাহাসি করেছিলো তারাই একটা সময় তোমায় দেখে হিংসায় জ্বলবে; আগুনটা জ্বালানোর দায়িত্ব তোমারই!
কে কাজ শেখাবে??
বাংলাদেশে কিছু কিছু কোম্পানি আছে যারা বলে যে আউটসোর্সিং কোর্স যেমন ওয়েব ডেভেলপিং বা এসইও এর মতোন বিষয়গুলো শিখিয়ে তারা মাসে বিশ হাজার টাকা উপার্জন করার গ্যারান্টি দেয় অথচ তারাই এসবে হাফেজে হাফিজুদ্দিন হয়েও সিডি/ডিস্ক বেচে পেট চালায়!!
সুতরাং রংচং রংবাহারি বাহারী বিজ্ঞাপন এড়িয়ে চলুন। সস্তায় ইন্টারনেটে এমন এমন অনেক আর্টিকেল/থিসিস/টিউটোরিয়াল পাবেন যেখান হতে আপনি চাইলেও শেখার শুরু করতে পারপনর,আবার বিষয়ভিত্তিক বই কিনতে আপনার বাড়ির কাছের লাইব্রেরি এনাফ! যদি বই কেনার টাকা না থাকে তবে পিডিএফ নামিয়ে নিন, ইনশাল্লাহ আপনার জন্য একটা না একটা দুয়ার খোলা পাবেনই কেননা “চেষ্টা আর পরিশ্রম থাকলে তিনি কখনোই আটকে থাকেন না”
ফ্রি খাবো নাকি উপোষ থাকবো?
বাঙ্গালিদের এই একটাই দোষ তারা ফ্রি পেলে আলকাতরা খায় কিন্তু ফ্রি আলতা পায়ে মাখে না!!
আমরা আসলে সবকিছুতেই ফ্রি খুজতে পছন্দ করি আবার যখন সত্যি সত্যিই ফ্রি পায় তখন তার খুত ধরতে ওস্তাদ যেই স্বভাবটা ত্যাগ করা উচিত; জ্ঞান বা শিক্ষা যেখান হতেই পান সেখান হতে গ্রহণ করুন তাতে শিক্ষকের নাড়ী নক্ষত্র বিশ্লেষণ করতে সময় ফুরালে শিখবেন কখন??
সুতরাং চিপ মেন্টালিটি এবং কনফিউজড মাইন্ড পরিহার করুন, নজর বড় করুন যেন তা আকাশ ছুয়ে যায়।
আসুন শুরু করি:
আসুন অনলাইনে কাজের হালখাতা হিসেবে আজ আমরা শিখবো কিভাবে ফ্রিতে একটি ওয়েবসাইট (মূলত ব্লগসাইট) হতে আর্নিং করা যায় (হয়তো এটা সবাই জানেন তবুও ইনস্পাইরেশন ইজ ইম্পরট্যান্ট ইলিমেন্ট ফর ইউ)।
সবার আগে www.blogger.com ওয়েবসাইটে যান এবং আপনার create your blog ক্লিক করুন; এবার আপনার জিমেইল এড্রেস এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে সাইনআপ করুন। পরের ধাপে creat a limited blogger profile সিলেক্ট করুন। ব্লগার প্রোফাইলের জন্য একটি নাম দিন> continue to blog> creat new blog> এবার ব্লগের শিরোনাম এবং url সিলেক্ট করুন তবে তা যেন সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়> creat blog> এইবার কিছুক্ষণের মধ্যে ওয়েবসাইট তৈরী হয়ে যাবে> এরপর Theme এ যান> নিচের simple এর মধ্যে লাল রং এর টেম্পলেট চয়েজ করুন> apply to blog ক্লিক করুন > Get it ক্লিক করে কনফার্ম করবেন> এরপর Moblie এর নিচের সেটিংস আইকন ক্লিক করুন>No. Show desktop theme on mobile devices চুজ করে save ক্লিক করুন( এইটা ব্লগ ভিউয়ার লুক, গ্যাজেট অপ্টিমাইজেশন সুইটনেস এবং এড প্লেসমেন্ট পারফেকশন এর জন্য তাৎপর্য্যপূর্ন); ব্যাস আপনার ওয়েবসাইট তৈরী!!!
এবার ইমেইল ভেরিফাই করুন করে আপনার রিভিনিউহিটস সাইটে যান এবং সাইনইন করুন> সাইট মেনু আইকন ক্লিক করে placement এ যান> New placement > select shadow box> প্লেসমেন্ট এবং ডিসক্রিপশনে লিখুন advertisement > save ক্লিক করুন> এরপর <\> আইকনে ক্লিক করলে একটা জাভাস্ক্রিপ্ট কোড পাবেব সেটা কপি করে নিন।
এবার আবার আপনার ব্লগসাইটে ফিরে যান এবং Layout ক্লিক করুন> sidebar-right-1 অংশে add a gadget ক্লিক করুন> HTML/Javascript সিলেক্ট করুন> টাইটেলে লিখুন Advertisement এবং কনটেন্ট ঐ কপি করা কোডটি পেস্ট করে save ক্লিক করুন।
ব্যাস আপনার ওয়েবসাইট আর্নিং উপযোগী হয়ে গিয়েছে।
শেষকথা
আপনি যখন ইন্টারনেট ১০ ডলার উপার্জন করে দাম্ভিকতাতে ভাব দেখাবেন ঠিক তখনই আমেরিকাতে থাকা একজন ফ্রিল্যান্সার তার স্কিল দেখিয়ে ঐ সময়টুকুতে ১০০ ডলার ইতিমধ্যে আর্ন করে ফেলেছে সুতরাং অহংকার সর্বদাই পরিহার করবেন।
শুভকামনা এবং ভালোবাসা রইলো সবার জন্য।
[এই পোস্ট’টি আপনাকে অনলাইন থেকে টাকা এনে দিবে না তবে অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করতে আমাদের সচারাচর ভুলগুলা এড়িয়ে একটু হলেও যদি সঠিক পথের আলো দিয়ে থাকে তবে বান্দা স্বার্থক]