Site icon Trickbd.com

অনলাইন ইনকাম, ফ্রিল্যান্সিং ও খুঁটিনাটি (পার্ট -১)

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম,
অনলাইনে ইনকাম, ফ্রিল্যান্সিং, ই কমার্স, ড্রপ শিপিং, সিপিএ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আরো কত কি নাম?

সবকিছু নিয়ে আলোচনা করতে আমার আজকের আয়োজন, অনলাইন ইনকাম ফ্রিল্যান্সিং ও খুঁটিনাটি !!

পৃথিবীর সকল অর্থের উৎস কিন্তু একটাই সেটা ব্যবসা হোক সেটা অনলাইনে কিংবা অফলাইনে, এখন আপনি হয়তো বলতে পারেন আমি তো চাকরি করছি একটু লক্ষ্য করে দেখুন আপনি যে কোম্পানি জন্য চাকরি করছেন সে কোম্পানিটি নিশ্চয়ই কোন না কোন ভাবে কোন না কোন ধরনের ব্যবসার সাথে জড়িত।

এখন কথা হচ্ছে ,আমরা কিভাবে অনলাইন থেকে ইনকাম করবো?
এটা বেশ সহজ আবার বিশাল কঠিন।

অনলাইনে আপনি দুই ভাবে ইনকাম করতে পারেন, প্রথমত ব্যবসা এবং দ্বিতীয়ত ফ্রিল্যান্সিং।
যেহেতু ক্ষেত্র গুলো অনেক বিশাল আলোচনা করতে করতে অনেক সময় লেগে যাবে তাই আজ শুধু অনলাইনে ব্যবসা গুলো কিভাবে করতে হয় সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব।

ফরেক্সঃ 

একেবারে সহজ বাংলা ভাষায় বলতে গেলে, আমাদের ঢাকা স্টক একচেন্জ এর মত শেয়ার মার্কেটের অনলাইন ভার্সনটি হচ্ছে ফরেক্স বা ফরেন এক্সচেঞ্জ।

এখানে আপনি মুদ্রা, তেল , স্বর্ণ এ জাতীয় সকল দ্রব্যের মাঝে প্রতিনিয়তযে মূল্য পার্থক্য সৃষ্টি হয় সেই মূল্য পার্থক্য কে কেন্দ্র করে আপনার ব্যবসাকে চালাবেন।

কি বুঝতে কষ্ট হচ্ছে? ঠিক আছে সহজ ভাষায় বলছি
ধরে নেন আপনি 100 ডলার আজ কিনলেন আট হাজার পাঁচশত টাকা দিয়ে, আগামীকাল 100 ডলারের মূল্য হয়ে দাঁড়ালো 8600 টাকা আপনি যদি এই 100 ডলার আজ বিক্রি করে দেন তাহলে আপনি 100 টাকা লাভ করতে পারছেন। 

খুব সহজভাবে বলতে এভাবেই আপনি টাকা কামাতে পারেন,

এবার কিভাবে শিখবেন কোথা থেকে শিখবেন এখন ইচ্ছে হচ্ছে তাই না?

খুব সহজ শোনাচ্ছে? জিনিসটা মোটেও সেরকম না পৃথিবীর প্রায় 90 ভাগ ফরেক্স ট্রেডার কোন না কোনভাবে লস আছে। 
এমনকি অনেক ফরেক্স ট্রেডার তাদের সর্বস্ব খুইয়েছেন এই মার্কেটে।

ফরেক্স করার জন্য নিম্ন পক্ষে এক বৎসর নিয়মিত চর্চা করতে হবে, এটা যতটা না অংক বুদ্ধি ও যুক্তির খেলা তার চাইতে অনেক বেশি ধৈর্যের খেলা।

শেষ কথা, দীর্ঘ 11 বছর ফরেক্স ট্রেডিংয়ের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। দূরে থাকবেন ভালো থাকবেন, একবার ফরেক্স মার্কেটে ঢুকলে বের হওয়া বেশ কঠিন, তার থেকে বেশি কঠিন সেখান থেকে লাভ বের করে আনা।

ই কমার্সঃ

এই নামটি সাথে কমবেশ সবাই পরিচিত, নামটি শুনলেই কিছুটা আন্দাজ করা যায়।

আপনি আপনার পণ্য অথবা সেবাটি অনলাইনে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে বিক্রি করবেন, কাস্টমার আপনাকে অনলাইনে অর্ডার দিবে আপনি তাকে পণ্য বা সেবা টি তাকে পৌঁছে দিবেন একদম সোজাসাপটা তাই না?

কিন্তু এখানে কথা আছে , আপনার পণ্য বা সেবা টি কার কাছে বিক্রি করছেন, কোথায় বিক্রি করছেন, কিভাবে বিক্রি করছেন, আপনার পণ্য বা সেবা কতটুক গুণগতমানসম্পন্ন ?
এসব কিছুর উপর নির্ভর করছে আপনার ব্যবসা সফলতা কিংবা ভরাডুবি।

শুধুমাত্র ফেসবুকে যারা ব্যবসা করে তাদেরকে বলা হয় এফ কমার্স, আমাদের বাংলাদেশ অনেক তরুণ-তরুণীর এখন এফ কমার্স এর মাধ্যমে সফল ক্যারিয়ার গড়ে তুলছেন। 
দিনশেষে এখানেও মার্কেটিং স্ট্রাটেজি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ড্রপ শিপিং :

ড্রপ শিপিং হচ্ছে ই কমার্স এর পরের অংশ, কিভাবে? আপনি যখন ড্রপ শিপিং করবেন তখন আপনার নিজস্ব কোন পণ্য থাকবে না।
আপনি অন্য কারো পণ্য নিজস্ব প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন করে বা প্রচারণা করে যখন কোন গ্রাহক বা ক্রেতা সন্ধান পাবেন তখন সেই ক্রেতার তথ্যাবলী আপনার সাপ্লায়ার এর কাছে আপনি পাঠিয়ে দিবেন তখন সে গ্রাহকের ঠিকানা মোতাবেক গ্রাহকের অর্ডার করা পণ্যটি পৌঁছে দেবে।

তাতে আপনার লাভ কোথায়? আপনার সাপ্লায়ার এর সাথে ইতিপূর্বেই প্রত্যেকটি পণ্য এর দাম সম্বন্ধে আলোচনা/ চুক্তি করা থাকবে। 

আপনার সাপ্লায়ার শুধু তার নির্ধারিত মূল্য টি তার কাছে রেখে অতিরিক্ত লভ্যাংশ টি আপনার হাতে পৌঁছে দিবে।

খুব সহজ তাই না? এত সহজ হলে সাপ্লাইর নিজে করছে না কেন, এটা কিন্তু ভাবার বিষয়!

আপনি ড্রপ শিপিং দেশে অথবা দেশের বাইরে অন্য কোন একটি দেশে পরিচালনা করতে পারেন, নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ, মার্কেটিং স্ট্রাটেজি এবং দক্ষ ম্যানেজমেন্ট করতে পারলে ড্রপ শিপিং থেকে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

তবে মনে রাখবেন ড্রপ শিপিং করতে গিয়ে লাল বাতি জ্বলছে এমন মানুষের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ 


আপনি অন্য কোন ব্যক্তি /প্রতিষ্ঠান কিংবা সরবরাহকারীর পণ্যের বিবরণ অথবা পণ্য সম্বন্ধে মতামত দান করে যদি কোন গ্রাহক/ ক্রেতাকে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন সে পণ্যটি কিনতে, এবং সে যদি সে পণ্যটি কেনে তাহলে আপনি সেই পণ্যের বিক্রয় উদ্ধৃত লভ্যাংশ থেকে একটি নির্দিষ্ট হারে কমিশন পাবেন।

আরো সহজভাবে বলতে ,আপনার ওয়েবসাইট/ পেজ/ চ্যানেল অথবা অন্য যে কোন প্ল্যাটফর্ম থেকে যদি কেউ একটি সুনির্দিষ্ট লিংকে ক্লিক করে কোন পণ্য কেনে তাহলে আপনি পেয়ে যাচ্ছেন সেই পণ্যের লভ্যাংশের একটি অংশ আর এ কে বলা হচ্ছে আফিলিয়েট মারকেটিং।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে হাজারো তরুনের চোখে স্বপ্ন দেখিয়েছেন আমাদের বাংলাদেশের আল-আমিন কবির, ফারহান খালেদ, ফখরুল ইসলাম এছাড়াও আরো অনেকে।

এখানে লক্ষ্যের বিষয় আমরা শুধু ভালো করা মানুষদের নাম গুলি জানি, যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে গিয়ে ভালো করতে পারেননি তাদের নাম গুলো কিন্তু আমরা জানি না।

সিপিএ মার্কেটিংঃ 


হালের সময়ে খুব জনপ্রিয় সিপিএ মার্কেটিং যার সম্পূর্ণ অর্থ আসে কস্ট পার একশন , এটাকে একদম সহজ ভাষায় বুঝিয়ে দিচ্ছি।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ আপনি কমিশন পাবেন পণ্য বিক্রি হওয়ার পর, আর সি পি এ মার্কেটিং এ আপনি কমিশন পাবেন ক্রেতা বা গ্রাহককে সেই ওয়েবসাইটে বা প্লাটফর্মে পৌঁছে দেওয়ার পর।
তাতে এবার বিক্রি হল কিনা হল তা আপনার মাথা ব্যথা না।

সিপিএ মার্কেটিং সম্বন্ধে দুটি কথা না বললেই নয়,
ঢাকা শহরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সিপিএ মার্কেটিং, এক ক্লিকে টাকা কপি-পেস্ট করলেই লাখ লাখ ডলার আরো কত কি শতভাগ ইনকামে নিশ্চয়তা রঙ বে রঙের বাহারি নানা ধরনের বিজ্ঞাপন

সিপিএ মার্কেটিং করলে নাকি সপ্তাহে 1 লক্ষ লক্ষ ডলারের হাতছানি

আসলে কি সত্য?

ডেটিং সাইট পর্নোগ্রাফি নিয়ে কাজ করলে খুব সহজে অল্প সময় সফলতা দেখা যায় কিন্তু দিন শেষে আপনি কি নিজেকে দক্ষ একজন সফল হিসেবে জাহির করতে পারবেন?
আপনি কি সামনের মানুষটাকে বুক ফুলিয়ে বলতে পারবেন আসলেই আপনি রাতের আঁধারে কম্পিউটার স্ক্রিনে কি করছেন? নানা বাহারি রঙের বেশ ধরে নিজের পরিচয় গোপন করে লুকিয়ে লুকিয়ে অন্যকে যৌন প্রলোভন দেখিয়ে নিজের কার্যসিদ্ধি কে দক্ষতা নয় প্রতারণা বলে।
তা যেমন নৈতিকভাবে খারাপ ঠিক তেমনিভাবে সম্পূর্ণরূপে হারাম।

না এখানেই শেষ নয় আরও আছে, এত এত বছর লেগেছে এই অনলাইনের বিশাল সাম্রাজ্য তৈরী হতে একদিনে ছোট্ট কয়টা কথায় কি তা বলা সম্ভব? অনলাইন ইনকাম ফ্রিল্যান্সিং ও খুঁটিনাটি আরো নানা বিষয় নিয়ে প্রত্যেকদিন একটি করে পোস্ট করবো। 

ধন্যবাদ