ফ্রিল্যান্সিং জগতে নতুন হিসেবে আপনার কোন কাজটা শেখা দরকার?
শুভেচ্ছ জানিয়ে শুরু করছি আজকের পোস্ট । করোনার জন্য সবাই দিশে হারা । কে কোথায় যাচ্ছে কি করচ্ছে আল্লাহ্ জানে। সবাইকে অনুরোধ করবো আপনারা ঘর থেকে বাইরে বের হবেন না। তাহলে অবশ্যই এটা কন্ট্রল করা যেতে পারে । যাহোক চলুন মূল আলোচনায় চলে যাওয়া যাক ।
আমাকে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন “ভাই আমি তো ফ্রিল্যান্সিং জগতে নতুন, তাহলে আমি কোন কাজটা আগে শিখবো? বা আমার কোন কাজটা শিখলে ভালো হবে”? এই রকম প্রশ্ন অনেক দেখেছি । তাই ভাবলাম একটু লিখতে বসি । আশা করি এটা নতুনদের কাজে আসবে, বিশেষ করে যারা কাজ শিখে এখনো বসে আছেন কিছু করছেন না । চলুন তাহলে শুরু করি ।
প্রথমত আপনার কাজ পেতে কয়েক সপ্তাহ/এমনি মাসও লেগে যেতে পারে, অবশ্যই ধৈর্য্য ধরবেন হতাশ না হয়ে ধৈর্য্য ধরে বিড (Bid) করে যাবেন। এখন বলতে পারেন বিড মানে কি (নিচের দিকে আলোচনা করা আছে) ? প্রথম দিকে আপনার কাজের ভাল পোর্টফলিও তৈরি করুন এবং চেষ্ঠা করুন প্রথম কাজটি তুলনামূলক কম মূল্যে বিড করার তাহলে কাজ পাবার সম্ভাবনা বেশি হবে। সম্ভব হলে এই রকম কাজ যদি আগে সম্পন্ন করে থাকেন তাহলে ক্লায়েন্টকে সেই কাজের নমুনা দেখানো যেতে পারে । তাহলে সে যদি আপনার কাজকে পছন্দ করে তাহলে আপানার প্রোজেক্ট পাবার সম্ভাবনা বেড়ে । কোন কাজ না পারলে সেই প্রজেক্টে কখনই বিড করা উচিত নয়। অনেকেই না বুঝে বিড করে থাকেন এবং ভাবেন কাজটি পেলে অন্য কারো সাহায্য নিয়ে সম্পন্ন করে ফেলবেন। কাজ না জেনে খুব বেশি দূর যাওয়া সম্ভব নয়। ইন্টারনেটে অসংখ্য ধরনের কাজ পাওয়া যায়। আপনি যে কাজই করে থাকুন না কেন, চেষ্টা করবেন যাতে পরিপূর্ণভাব সেই কাজের আগে দক্ষ হয়ে তারপর কাজের জন্য আবেদন করা।
সাধারণত যে সকল কাজ তুলনামূলকভাবে একটু কঠিন এবং যে সকল কাজে কম বিড পড়ে, সেধরনের কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পূর্বে সব ধরনের কাজ একটু পর্যবেক্ষণ করে নিন এবং সে অনুযায়ী নিজেকে তৈরি করে নিন।
অবশ্যই কর্তব্য যেটা তা হলো ইংরেজীতে পারদর্শী হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্তত প্রজেক্টের চাহিদা বুঝা এবং সে অনুযায়ী ক্লায়েন্টের সাথে সাবলীলভাবে যোগাযোগ করার ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। একটা প্রজেক্ট সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা না নিয়ে কখনই কাজ শুরু করা উচিত নয়। ক্লায়েন্ট তাদের চাহিদা বিড রিকোয়েস্টের সাথে সম্পূর্ণভাবে উল্লেখ নাও করতে পারে। তাই যতটুকু সম্ভব তাদেরকে প্রশ্ন করুন। তারপর প্রজেক্টের রিকোয়ারমেন্ট আপনার নিজের ভাষায় বায়ারকে লিখে জানান। এতে বায়ারের চাহিদা সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন এবং কাজ করার সময় আপনার পরিশ্রম অনেকখানি কমে যাবে। প্রশ্ন করলে বায়ার খুশি হয় এবং আপনার আগ্রহ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে।
সম্পূর্ণ কাজকে কয়েকটি ধাপে ভাগ করুন এবং প্রতিটি ধাপ শেষ হবার পর পর ক্লায়েন্টকে দেখান। ডেডলাইন সময় শেষ হবার পূর্বেই সম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করুন এবং ক্লায়েন্টের কাছে পাঠিয়ে দিন। ক্লায়েন্টের কাছে কাজ পাঠানোর পূর্বে ভাল করে রিকোয়ারমেন্ট আরেকবার দেখে নিন এবং সম্পূর্ণ কাজ ভাল করে পরীক্ষা করুন। সব সময় চেষ্টা করবেন যাতে কাজ শেষে সর্বোচ্চ রেটিং পাওয়া যায়। ভাল রেটিং পেলে পরবর্তী কাজগুলো খুব সহজেই পাওয়া যায়। ভাল রেটিং পাবার উপায় হচ্ছেঃ সঠিকভাবে কাজটি করা, সময়মত কাজটি শেষ করা, ক্লায়েন্টের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা। রেটিং দেবার পূর্বে ক্লায়েন্টকে জিজ্ঞেস করে নিন যে সে আপনার কাজে সম্পূর্ণ খুশি কিনা এবং আপনাকে সর্বোচ্চ রেটিং দিতে যাচ্ছে কিনা। কাজে এবং কথাবার্তায় সবসময় সৎ থাকতে হবে। কখনও ভুল তথ্য প্রদান করা যাবে না। কোন কারনে কাজ করতে না পারলে বিষয়টি ক্লায়েন্টকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিন, বেশিভাগ ক্ষেত্রেই ক্লায়েন্টের কাছ থেকে যথাযথ সহায়তা পাওয়া যায়।
অনেকেই এমন প্রশ্ন করেছেন যে “ভাই বিড মানে কি?” তাহলে চলেন এবার বিড এর মানে খুজে দেখি ।
বিড (Bid) মানে কাজ এর জন্য Application করা। Job Application কে এক এক মার্কেটপ্লেসেএক এক ধরণের নামে ডাকা হয়। তবে সাধারণত ফ্রিল্যান্সারা এটাকে বিড(Bid) বলে থাকে।
বিড নিয়ে যেহেতু আলোচনা শুরুই করেছি তাহলে বিডের পার্টটা শেষ করি এটাই ভালো হবে নাকি? তাহলে চলুন আপনাদেরকে বিড(bid) করার ব্যাপারে কিছু টিপস দেই। আমি মনে করি আপনারা কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন। ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করার জন্য অনকে মার্কেটপ্লেস রয়েছে । তবে কিছু মার্কেটপ্লেস আছে যা সবার কাছে অনেক জনপ্রিয়। তার মধ্যেঃ
- Upwork.Com
- Freelancer.com,
- Fiverr.com,
- Guru.com
- Peopleperhour.com
- 99Design.com
মূলত এই সাইট গুলা সবার কাছে অনেক বেশি জনপ্রিয়। এই মার্কেটপ্লেস গুলোতে অনেক তে কাজ পাওয়া যায় ।
বিড করার ব্যাপারে অনেক ক্রিটিক্যাল বিষয় থাকে। সেগুলো অবশ্যই সতর্কতার সাথে লিখতে হবে । আসুন জেনে নেই কোন বিষয় গুলো জেনে রাখলে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
বিড/প্রপোজাল
প্রোজেক্টের বিড করার জন্য যে বক্স পাবেন সেটাকে একেক মার্কেটপ্লেসে একেক নামে ডাকা হয় । যেমনঃ প্রপোজাল বক্স, কভার লেটার, ইত্যাদি। এবার সুন্দর করে প্রপোজালে আপনার স্কিল লিখুন । তবে মনে রাখবেন, উলটা পালটা প্রোজেক্টে বিড করবেন না । এটাও মাথায় রাখবেন বিড/প্রপোজাল এমন ভাবে লিখতে হবে যেন ক্লায়েন্ট আপনার বিডটি দেখার পরে আপনার দক্ষতা সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে জানতে পারে। তবে কিছু ব্যাপার মাথায় রাখবেন । মনে করেন প্রোজেক্ট পরেছে ডাটা এন্ট্রির আর আপনি বিড করলেন গ্রাফিক্স ডিজাইনের তাহলে কিন্তু সমস্যা । উল্টা পালটা বিড করলে যদি ক্লায়েন্ট রিপোর্ট করে বা যদি কোনো ফ্রিল্যান্সারা রিপোর্ট করে তাহলে সমস্যা হবে আইডিতে । সুতরাং সতর্কতা অবলম্বন করবেন । আগে ভালো করে প্রোজেক্টা পড়বেন এরপরে বিড করবেন । বিড প্রপোজাল লেখার শুরুতে সম্বোধন সূচক কোনো Word দিয়ে শুরু করবেন যেমনঃ Dear (যদি ক্লায়েন্টের নাম প্রোজেক্টে উল্লেখ করে থাকে তাহলে তার নাম ধরে লিখবেন । যেমনঃ Hi Sam) আপনাদের বোঝার জন্য বা বিড এর ব্যাপারে যাতে আরো সুন্দর ধারনা পান এর জন্য নিচে একটা প্রপোজাল এর স্যাম্পল দিলাম ।
Hi Sam, I’m a PDF expert, with over 3 years experience dealing with PDF, I can help fix your scans. I’ve previously worked on the exact same project for another employer {link to my positive review from the previous employer}. When do you need this finished by? I understand how annoying it is, and can get this fixed for you quickly! Please see the sample I fixed and I look forward to working on this project with you.
তবে হ্যাঁ, আপনার প্রপোজাল যেন কপি পেস্ট না হয় সেদিকে নজর রাখবেন। সম্পূর্ণ নিজে থেকে লিখবেন কাজ সম্পর্কে কতটুকু বুঝেছেন বা জেনেছেন সেগুলো লিখে দেওয়ার ট্রাই করবেন। এমন কিছু লিখবেন না যেটা আপনি করতে পারবেন না। অর্থাৎ যা কিছু লিখবেন ১০০% clearly লিখবেন।
আগামীতে কি নিয়ে আলোচনা দেখতে চান অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । পোস্ট ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না ।
ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আরো অনেক পোস্ট আছে আমার নিজের ব্লগে ।
দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করেন Click Here
আজকের মত এখানেই শেষ করছি । আল্লাহ্ হাফেজ ।
লেখাঃ এম এইচ মামুন ।