যারা বলেন ভাই কি কাজ শিখবো মূলত এটা তাদের জন্যই । আপনিও দেখতে পারেন ।
আমার পছন্দের লিস্টে ১ম এ আছে ওয়েব ডেভেলপমেন্টঃ
প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার এই সময়ে বিশ্বের ছোট-বড় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ব্যক্তিগত ও সামাজিক ক্ষেত্রে প্রায় সবাই ধীরে ধীরে ইন্টারনেটের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। সবাই চাচ্ছেন তার একটি ভার্চুয়াল ঠিকানা হোক। কারণ, একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান একদিকে যেভাবে এর গ্রাহকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে, অপরদিকে বিভিন্ন শহরে বা দেশে অবস্থিত নিজ নিজ শাখার সাথে আমত্মঃযোগাযোগও সহজে এবং কম খরচে করতে পারে। ওয়েব দুনিয়ায় বর্তমানে মোট ওয়েবসাইটের সংখ্যা নেটক্রাফট জানুয়ারী 2020 ওয়েব সার্ভার জরিপ অনুসারে 295,973,827, জানুয়ারী 2019 সালে 1,518,207,412 এর তুলনায়) কোটি। প্রতিদিনই তৈরি হচ্ছে হাজার হাজার ওয়েবসাইট। এই বিপুল সংখ্যক ওয়েবসাইট তৈরির জন্য ডিজাইনের পাশাপাশি প্রয়োজন ওয়েব ডেভেলপমেন্টের। নতুন ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট কিংবা পুরনো ওয়েবসাইটকে নতুনভাবে ডেভেলপ করার জন্য প্রয়োজন ভালোমানের ওয়েব ডেভেলপার। এ কারণেই অনলাইন মার্কেটপ্লেসসহ লোকাল মার্কেটে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের চাহিদা বেড়েই চলেছে।
একথায় নিঃসন্দেহে বলা যায়, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার, ফাইভারসহ জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য কাজ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট। তবে এ আয়ের পরিমাণ নির্ভর করে ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে নিজেকে কতটা দক্ষ করতে পারছেন তার উপর। একজন প্রফেশনাল ওয়েব ডেভেলপার হতে হলে অবশ্যই এইচটিএমএল, সিএসএস, পিএইচপি, জাভাস্ক্রিপ্ট, জেকোয়ারি, মাইএসকিউএলসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় ভালোভাবে জানতে হবে। এ বিষয়গুলো ভালোভাবে শিখে শত শত কোটি ডলারের ওয়েব ডেভেলপমেন্টের বাজারে যেকেউ প্রবেশ করতে পারেন।
আমার পছন্দের লিস্টে ২য় হলো ওয়েব ও গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ
আঁকাআঁকিতে ঝোঁক বেশি! ক্রিয়েটিভ কিছু করতে চান? সময় পেলেই কমপিউটারের পেইন্ট টুলস, ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর নিয়ে গাছ, পাখি, ফুল, ফল, বাড়ির দৃশ্য, কারও নাম বা ছবি নিয়ে কাজ শুরু করেন। পার্টটাইম বা ফুলটাইম কাজ খুঁজছেন? অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করে অপেক্ষাকৃত বেশি আয় করতে চান? তাহলে ভেবেচিন্তে নেমে পড়ুন গ্রাফিক্স ডিজাইনে। অন্যান্য কাজের চেয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইন পেশাটি সবচেয়ে নিরাপদ ও ঝামেলাহীন। নিরাপদ ও ঝামেলাহীন বলার কারণ হলো অন্যান্য পেশার বিপরীতে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কোনো কাজের অভাব হয় না। এটি একটি সম্মানজনক পেশা। একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার বেশ কিছু কালার, টাইপফেস, ইমেজ এবং অ্যানিমেশন ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হন। এর আউটপুট ডিজিটাল বা প্রিন্ট উভয়ই হতে পারে। নিজেকে ভালোভাবে তৈরি করতে পারলে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কাজের অভাব হয় না। ইন্টার্যাক্টিভ মিডিয়া, প্রমোশনাল ডিসপ্লে, জার্নাল, করপোরেট রিপোর্ট, মার্কেটিং ব্রোশিউর, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, লোগো ডিজাইন, ওয়েবসাইট ডিজাইনসহ বিভিন্ন সেক্টরে কাজের চাহিদা রয়েছে। লোকাল মার্কেট বা অনলাইন মার্কেটপ্লেস যাই বলি না কেনো, প্রতিনিয়ত গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজের পরিমাণ বাড়ছে।
ডিজাইনারদের বেতন নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ডিজাইনার স্যালারিজের মতে, একজন ডিজাইনার প্রতি বছরে গ্রাফিক্স ডিজাইন বা এ সম্পর্কিত চাকরি বা কাজ করে এক লাখ ডলার আয় করতে পারেন। সেই হিসেবে বাংলাদেশী প্রায় ৮০ লাখ টাকা আয় করতে পারেন। এছাড়া অনলাইন মার্কেটপ্লেসে একটি লোগো ডিজাইন করলে পাঁচ ডলার থেকে শুরু করে দুই হাজার ডলার পর্যন্ত পাওয়া যায়। তবে দক্ষতার ক্ষেত্রে ও বেশি ক্রিয়েটিভ কাজ হলে তা পাঁচ হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে বা বেশিও হতে পারে । এছাড়া একটি ওয়েবসাইটটের ফাস্ট পেজ ডিজাইন করার ক্ষেত্রে ৫০ ডলার থেকে শুরু করে তিন হাজার ডলার পর্যন্ত পেতে পারেন। ৯৯ডিজাইনস ডটকম, ফ্রিল্যান্সার, আপওয়ার্কসহ অনেক অনলাইন মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেখানে এ কাজগুলো পাওয়া যায়। তাই ওয়েব ও গ্রাফিক্স ডিজাইন হতে পারে একজন ফ্রিল্যান্সারের সবচেয়ে উপযোগী পেশা।
আমার পছন্দের লিস্টে ৩য় হলো কনটেন্ট রাইটিংঃ
অনলাইনে আয় করার সহজ ও সম্ভাবনাময় উপায় হলো লেখালেখি, যাকে আর্টিকেল রাইটিং বা কনটেন্ট রাইটিং বা কনটেন্ট ডেভেলপিং বলা হয়। যারা ইংরেজিতে ভালো তারাই লেখালেখিকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারেন। কনটেন্ট রাইটাররা বিভিন্ন কাজের জন্য কনটেন্ট লিখে থাকেন। ওয়েব কনটেন্ট ছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য বিজনেসজ প্ল্যান, ফান্ডিং এর জন্য গ্র্যান্ট রাইটিং, রিসোর্স বই, ব্রোশিউর, লিফলেট বা অন্যান্য প্রচারণার কাজে কনটেন্ট ডেভেলপ করা হয়ে থাকে। একজন কনটেন্ট ডেভেলপারের অনেক কাজের ক্ষেত্র রয়েছে। ক্ষেত্রগুলো হলো- কপিরাইটিং, ব্লগ লেখা, ওয়েব কনটেন্ট, প্রেস রিলিজ রাইটিং, বিজনেস প্ল্যান, গ্র্যান্ট রাইটীং, টেকনিক্যাল রাইটীং, ট্রান্সলেশন, ট্রান্সক্রিপশন, সামারাইজেশন, রিজিউম রাইটিং, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ইত্যাদি। লেখার বিষয়টি নির্ভর করে লেখকের দক্ষতা, রুচি, সহযোগিতা সর্বোপরি যে সাইট বা বিষয়ের জন্য লেখা হচ্ছে তার চাহিদার ওপর। তবে বিষয়বস্তু যা-ই হোক না কেনো, একজন ওয়েব কনটেন্ট রাইটারকে কোনো নির্দিষ্ট টপিক নিয়ে রীতিমতো গবেষণা করে ডাটাবেজ তৈরি করতে হয়। উন্নত বিশ্বে একজন কনটেন্ট রাইটারকে সাংবাদিক বা গবেষক হিসেবেও অভিহিত করা হয়। বিষয়বস্তু অনুযায়ী ঠিক করে নিতে হয় লাইন অব অ্যাকশন। লেখা অবশ্যই প্রাঞ্জল ও গুরুত্বপূর্ণ হতে হবে। রাইটার হিসেবে মনে রাখতে হবে যারা ওয়েবসাইটে আপনার লেখা পড়বেন, তারা মিনিট প্রতি বা ঘণ্টাপ্রতি নির্দিষ্ট পয়সা খরচ করে পড়বেন। সুতরাং তারা চাইবেন সবচেয়ে কম সময়ে প্রয়োজনীয় জিনিস পড়তে। তাই তথ্যনির্ভর, সংক্ষিপ্ত বিষয়ভিত্তিক লেখাই আপনাকে লিখতে হবে। কনটেন্ট লেখার ক্ষেত্রে কোনোভাবেই অন্যের লেখা কপি করা যাবে না। এতে লেখক হিসেবে আপনার গ্রহণযোগ্যতা যেমন বাড়বে, তেমনি উপার্জনের পথও প্রশস্ত হবে। কনটেন্ট রাইটার হতে গেলে আপনাকে অবশ্যই ইংরেজিতে ভালো হতে হবে। প্রয়োজন শুদ্ধ বানান। আমেরিকান স্পেলিং শুদ্ধভাবে জানতে হবে। গ্রামার সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্রিটিশ ও আমেরিকান গ্রামার সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা ভালো। আর ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য প্রয়োজনীয় যে বিষয়গুলো রয়েছে, যেমন ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ সমন্বয়, প্রোপোজাল লেখা, আপডেটেড থাকা এসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
বাংলাদেশে এমন অনেক ফ্রিল্যান্স লেখক আছেন যারা ঘণ্টায় ১০ থেকে ৬০ ডলার পর্যন্ত আয় করে থাকেন। এছাড়া দেশী-বিদেশী ইন্টারনেট মার্কেটিং অথবা কনটেন্ট মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানেও আপনি ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা বেতনে চাকরি করতে পারেন। তাই কনটেন্ট রাইটার হিসেবেও ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।
এই ছিলো আজকের আলোচনাতে । আগামী পোস্ট দেখতে চাইলে আমাদের সাথেই থাকুন ।
কষ্ট করে পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।
#Happy_Freelancing <3
#Freelancer_Bangladesh <3
লেখাঃ এম এইচ মামুন এবং নাসের ভাই ।