Site icon Trickbd.com

অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। তো আজ আমরা অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় সম্পর্কে জানব।

অনলাইনে বেশি ইনকাম করা যায় এমন কাজ করতে চান অথচ স্কিল নাই? অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় খুঁজছেন, যেগুলো করে ভালো টাকা ইনকাম করা যায়? সত্যি বলতে এমন কোনো কাজ নেই, যা করার জন্য কোনো স্কিল দরকার হয় না।

আমি আপনাদের জন্য নিয়ে আসলাম অনলাইনে আয় করার সবচেয়ে সহজ ১০ টি কাজ, যে কাজগুলো আপনি খুব দ্রুতই শিখে নিতে পারবেন, এবং শুরু করতে পারবেন নিজের অনলাইন উপার্জন। একদমই কোনো বাহুল্যজনিত কথা না বাড়িয়ে আসল কথায় চলে যাওয়া যাক।

১. ভিডিও ট্রান্সক্রাইবিং

এই ভিডিও ট্রান্সক্রাইবিং ব্যাপারটা কী আসলে? কীভাবে করে? হ্যাঁ, খুব জটিল কিছু না। আপনি কোনো ভিডিও দেখবেন, সেই ভিডিওতে যে কথাগুলো বলা হচ্ছে, সেই কথাগুলোকেই আপনি টেক্সট বানিয়ে ফেলবেন।

Rev.com নামের জবরদস্ত একটা সাইট আছে, যেখানে আপনি চাইলেই আপনার ভিডিও দিয়ে সেটা ট্রান্সক্রাইব করিয়ে নিতে পারবেন।

এই সাইটে যারা কাজ করে, তারা ঘণ্টা প্রতি এবং মিনিট প্রতি ডলার হিসেবে অর্থ নিয়ে থাকে। চাইলে আপনি নিজেও হয়ে যেতে পারেন সেখানকার একজন পেশাদার ট্রান্সক্রাইবার।

কথা উঠতে পারে, আচ্ছা, ইউটিউবও তো একই কাজ করে। ভিডিও আপলোড দিলেই তা সাথে সাথে অটো ট্রান্সক্রাইব করে থাকে। কিন্তু বিপত্তি হলো, ইউটিউব মেশিন। এবং মেশিন কখনোই যথোপযুক্ত নয়! মানুষ লাগবে অর্থাৎ আপনাকে লাগবেই।

ট্রান্সক্রাইবিং করতে আপনার কি কি দক্ষতা লাগবে?

একদমই বেশি কিছু না। সঠিকভাবে ইংরেজী বুঝতে হবে। অন্য ভাষা জানলে অন্য ভাষার কাজও করতে পারবেন। সঠিকভাবে টাইপ করতে জানতে হবে।

দ্রুত টাইপ করতে পারা একটা বিশেষ দক্ষতা, যা আপনাকে সবসময়ই যেকোনো ক্ষেত্রে অন্যদের থেকে এক ধাপ এগিয়ে রাখবে। সুতরাং, আপনার যদি ট্রান্সক্রাইবিং ব্যাপারটাতে আগ্রহ থাকে তবে অনলাইনে সহজ এই কাজটি করে আয় করতে পারেন।

২. ট্রান্সলেশন

বর্তমানে সবথেকে চাহিদাপূর্ণ কাজ বিবেচনায় ট্রান্সলেশন অর্থাৎ অনুবাদ এখন চাহিদার শীর্ষে। bablecube তো কাউকে কাউকে পুরো বই ট্রান্সলেট করতে দেয়।

এছাড়াও অসংখ্য সাইট আছে, যারা আপনাকে ট্রান্সলেশনের কাজ দেবার জন্য বসে আছে। শুধু দরকার, আপনার একটু আগ্রহ আর কাজের স্পৃহা।

ট্রান্সলেশন নিঃসন্দেহে অনলাইনে আয় করার সবচেয়ে সহজ কাজগুলোর একটি, কিন্তু এজন্য আপনাকে যেকোনো দুটি ভাষা জানতে হবে।

৩. প্রুফরিডিং

Fluentexpress এ যদি আপনি কোনো টেক্সট আপলোড করেন, তাহলে সেখানকার ফ্রিল্যান্সাররা আপনার হয়ে আপনার টেক্সট প্রুফ রিড করে দেবে! নেইটিভদের গুরুত্ব থাকলেও নন নেইটিভরাও কিন্তু এক্ষেত্রে কোনো দিক দিয়ে পিছিয়ে নেই।

অর্থাৎ এই কাজটি করার জন্য আপনার শুধুমাত্র খুব ভালো ইংরেজি দক্ষতা থাকতে হবে।

৪. ওয়েবসাইট টেস্টিং

এই কাজে যে আপনাকে অনেক কোডিং জানতে হবে, প্রোগ্রামিং এ সেরা হতে হবে, কম্পিউটার এর উপর অগাধ জ্ঞান থাকতে হবে, এমন টা মোটেই নয়।

এইমাত্র মনে হয় আপনি সত্যিকার অর্থেই অনলাইনে আয় করার মতো সহজ একটি উপায় খুঁজে পেলেন, তাই না?

শুধুমাত্র একজন ব্যবহারকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে সাইটে কোথায় আরেকটূ উন্নতি করা যেতে পারে কিংবা কোনো ত্রুটি ঠিক করবার আছে কিনা, তাই ওয়েব সাইট কর্তৃপক্ষকে জানালে মিলবে কাড়ি কাড়ি ডলার।

Usertesting.com কিন্তু এমনই একটা সাইট। ওখানে আপনাকে ওয়েবসাইট দেয়া হবে টেস্টিং এর জন্য। আপনি সেই ওয়েব সাইটে গিয়ে শুধু বলবেন, কোনখানে অ্যাড পপ আপ করেছে এবং আপনার কাছে তা বিরক্তিকর লেগেছে কিংবা কোথাও ক্লিক করেছেন, সেখান থেকে অন্য কোথাও চলে গেছে অপ্রত্যাশিতভাবে, এই তো এসবই আর কি!

শুধুমাত্র ব্যবহারকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে রিপোর্ট করাই সবকিছু। এজন্য পেশাদার প্রোগ্রামার হতে হবে এই ধারণা নিতান্তই ভুল। নিচের সাইটগুলো টেস্টিং এর জন্য দেখতে পারেন।

৫. ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট

ধরুন, আপনার একটা কোম্পানি আছে বা কোনো অনলাইন ব্যবসা! আর আপনার এখন প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগকারী দরকার।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টের কাজই দুনিয়াতে থাকা অজস্র সব কোম্পানির মধ্য থেকে আপনার কোম্পানির জন্য সুপ্ত সম্ভাবনাময় বিনিয়োগকারী খুঁজে বের করা। আপনিও কিন্তু চাইলেই হয়ে যেতে পারেন ভার্চুয়্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট। আয় ১০ থেকে ১৫ ডলার প্রতি ঘন্টা!

আর এই কাজ খুঁজে পাওয়া যেতে পারে আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার এর মতো ফ্রিল্যান্সিং মাকের্টপ্লেসগুলোতে। শুধু কমিউনিকেশনের জন্য আপনার ইংরেজীতে সুদক্ষ হতে হবে আর চাইলে মাঝে মাঝে আপনি আপনার বিড চার্জ কমিয়েও চেষ্টা করতে পারেন।

৬. ভিডিও ইডিটিং

এই কাজের যে এখন চাহিদা ঠিক কতখানি তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। হতে পারে কারো টিভি চ্যানেল, কারো ইউটিউব চ্যানেল কিংবা কারো শখ পূরণ।

ভিডিও পাবলিশ করার প্লাটফর্ম বৃদ্ধি পাওয়া এবং এখন আরো বেশি উম্মুক্ত হওয়ার কারণে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং মাকের্ট গুলোতেও ফ্রিল্যান্স ভিডিও ইডিটরদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

ভিডিও ইডিটিং এ যদি আপনি পরমানন্দ খুঁজে পান। তবে অনলাইনে আয় করার এই সহজ উপায়টি কেন বেছে নিচ্ছেন না?

৭. টিচার পে টিচার

আপনি যদি শিক্ষক হয়ে থাকেন কিংবা কারিকুলাম সাজাতে আপনার নিপুণতা আছে, তাহলে আপনি আপনার সাজানো কারিকুলাম কিংবা টিচিং ম্যাটেরিয়াল Teachers Pay Teachers ওয়েবসাইটে আপলোড দিতে পারেন।

যা কেনার জন্য অসংখ্য গবেষক এবং ত্রস্ত ব্যস্ত শিক্ষকেরা যাদের একা হাতে অনেক কিছু সামলাতে হয়, তারা বসে আছেন শুধু আপনার আপলোডের অপেক্ষায়।

৮. ফটোগ্রাফি

বিশ্বে যে প্রান্তেই যান না কেন, প্রায় প্রত্যেকের হাতেই একটা করে স্মার্ট ফোন অন্তত পাওয়া যাবে। স্বল্প খরচ, উন্নত ক্যামেরা, ক্যামেরা লেন্স এসবের বালাই নেই। চাইলেই তোলা যাচ্ছে যেকোনো ছবি। ফটোগ্রাফি করার সুযোগটা এখন ইতিহাসে সবচাইতে সহজলভ্য।

কিন্তু আদতে ফটোগ্রাফি কি খুব সহজ কাজ? না, মোবাইল ফটোগ্রাফি করতেও দরকার নিপুণতার পরিচয়। সুদক্ষ হাত, কৌশল আর এক স্বতন্ত্র দৃষ্টি ভঙ্গী।

শাটারস্টক, ফাইভ হান্ড্রেড পিক্সের কথা কে না জানে, চাইলেই কিন্তু আপনিও এই সাইটগুলোতে আপনার তোলা ছবি অনলাইনে বিক্রি  করে অন্যকে ব্যবহার করতে দিয়ে সহজে আয় করে নিতে পারেন।

আপনার সুবিধার্থেই কিছু উপার্জনের সম্ভাবনা থাকা উল্লেখযোগ্য সাইটের লিঙ্ক সংযুক্ত করে দেয়া হলো:

৯. অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট কন্টেন্ট

বর্তমানে হাইলি পেইড এবং অনেক বেশি উপার্জন সম্ভব এই অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট কন্টেন্ট লিখে! কারন বর্তমান ই-কমার্সের জয়জয়কারে এই অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট কন্টেন্টের চাহিদা বিশ্বের যেকোনো ধরনের কন্টেন্টের চাইতে অনেক বেশি।

১০. বই রিভিউ করে

বই পড়ে মতামত দিয়েও যে আয় করা যায় তা হয়তো আপনি এর আগে শুনেননি। যি, অবাস্তব মনে হলেও এটি সত্য। যদি আপনার প্রচুর বই পড়ার অভ্যাস থাকে, তবে অনলাইনে আয় করার সবচেয়ে সহজ উপায় হিসেবে আপনার শখকেই কাজে লাগাতে পারেন।

ইন্টারনেটে এমন কিছু সাইট রয়েছে যেখানে আপনার পড়া বই সম্পর্কে গোছানো এবং সূদৃঢ় মতামত প্রদানের জন্য টাকা দিয়ে থাকে। এমনই কিছু পেইড বই রিভিউ করার সাইট হলো:

শেষ কথা

আজকের আলোচনার উদ্দেশ্য ছিলো অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় ও কাজের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। আশা করি, আমরা সেই উদ্দেশ্য পূরণ করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হইনি। সবাই ভালো থাকবেন খোদা হাফেজ।