আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। অনলাইন থেকে ইনকাম করার অনেক উপায় রয়েছে। তবে আমরা অনেকেই সহজ কাজ করে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে বেশি ভালোবাসি।
আজকেরে আর্টিকেলে আমরা অনলাইন থেকে ইনকাম করার সহজ কিছু মাধ্যম নিয়ে আলোচনা করব। অনলাইন থেকে ইনকাম করার সবচেয়ে উপযোগী ও সহজ উপায় নিয়েই আজকের পোস্ট।যদি আর্টিকেলটি পড়তে ইচ্ছুক হন অবশ্যই একটু মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
অনলাইন থেকে ইনকাম করার সহজ উপায়?
প্রথম উপায়ঃ
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনলাইন থেকে আয়: অনলাইন থেকে ইনকাম করার সবচেয়ে সহজ একটি মাধ্যম হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে আপনার যদি কোন ধারনা না থাকে তাহলে, হয়তোবা প্রথম প্রথম আপনার কাছে কঠিন মনে হবে।তবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনলাইন থেকে আয় সম্পর্কে বিস্তারিত নলেজ চলে আসলেই, আশা করি অনেক সহজ মনে হবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল কোন কোম্পানির সার্ভিস অথবা প্রোডাক্ট প্রচার করা। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল কোন কোম্পানির প্রডাক্ট প্রচার করতে হবে। আপনার প্রচারকৃত পণ্য অথবা প্রোডাক্ট কেউ ওই কোম্পানি থেকে ক্রয় করলে, কম্পানি হতে আপনার একাউন্টে কিছু বোনাস অথবা কমিশন দেয়া হবে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করার জন্য যা যা প্রয়োজন?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম: সাধারণত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করার জন্য বেশকিছু জিনিস আপনার থাকতে হবে। তা না হলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করা সম্ভব হবে না।
*কম্পিউটার অথবা ডেস্কটপ বা পিসি অথবা স্মার্টফোন থাকতে হবে।
*অনলাইনে থাকার জন্য ইন্টারনেট কানেকশন অথবা ওয়াইফাই থাকতে হবে।
*নিজের ইচ্ছেশক্তি, পরিশ্রম, ধৈর্য, সততা ইত্যাদি আপনার ভিতরে থাকতে হবে।
উপরের এই জিনিসগুলো আপনার কাছে থাকলে অবশ্যই আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনলাইনে আয় করতে পারেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে কোন কোম্পানির সাথে যুক্ত হতে হবে। ওই কোম্পানি থেকে আপনাকে একটি লিংক দেওয়া হবে।
আপনাকে এই লিঙ্ক প্রচার করতে হবে । এখন আপনার লিংক অনেক জায়গায় শেয়ার করতে হবে,আপনার দেওয়া লিংকে ক্লিক করে যদি কেউ ওই কোম্পানি থেকে কোন প্রোডাক্ট ক্রয় করে। তাহলে ওই কোম্পানি থেকে আপনার একাউন্টে টাকা জমা হবে।নির্দিষ্ট পরিমান টাকা আপনার একাউন্টে জমা হলেই ওই টাকা আপনি তুলে নিতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম হল অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম। আপনারা চাইলে এই প্ল্যাটফর্মের যুক্ত হয়ে অনলাইনে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে খুব সহজে আয় করতে পারেন। তার জন্য আপনাকে তাদের নিয়ম নীতি গুলো দেখতে হবে এবং মেনে কাজ করতে হবে। তাহলেই আপনি অনলাইন থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে পারেন।
দ্বিতীয় উপায়ঃ
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনলাইন থেকে আয়: ফ্রিল্যান্সিং বিশ্বের সবথেকে বড় একটি প্লাটফর্ম অনলাইনে আয় করার জন্য। বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করা কোন ব্যাপারই না।আর আপনি যদি অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে চান তাহলে, আপনার ভেতর কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। এই যোগ্যতা না থাকলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন না।
যেমনঃ গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েবসাইট ডেভলপ, ভিডিও এডিটিং, অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ ইত্যাদি সহ আরো অনেক কাজ রয়েছে ফ্রিল্যান্সিংয়ে। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য এই ধরনের কিছু যোগ্যতা আপনাকে ধরে থাকতে হবে। তাহলে খুব সহজেই আপনারা ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং করে কিভাবে আয় করা যায়?
ফ্রিল্যান্সিং কি এবং কিভাবে আয় করবেন এ বিষয়টা আমি একটি উদাহরনের মাধ্যমে খুব সহজেই বোঝানোর চেষ্টা করব। ধরুন আপনার একটি কোম্পানি আছে। এখন আপনার কোম্পানির একটি লোগো তৈরি করতে হবে। এর জন্য আপনাকে কাউকে দিয়ে এই লোগোটি বানিয়ে আনতে হবে।
এখন আপনার কোম্পানির লোগো আপনি প্রচার করার মাধ্যমে একজন আপনার কাজটি করে দিতে রাজি হল। এবং ওই ব্যক্তি আপনার প্রয়োজনীয় লোগো তৈরি করে দিল। এখন যে লোগোটি তৈরি করে দিল সে হল ফ্রিল্যান্সার। আর আপনি ছিলেন ক্লাইন্ট। সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং এভাবেই অনলাইন থেকে করা হয়।আশাকরি বুঝতে পেরেছেন ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে কাজ করে এবং আপনি কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইনে আয় করতে পারবেন।
তৃতীয় পদ্ধতিঃ
ইউটিউবিং করে অনলাইন থেকে আয়: অনলাইনে আজকাল ইনকাম করার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হলো ইউটিউবিং করে আয়। যে কেউ চাইলেই ইউটিউবিং করে অনলাইন থেকে আয় করতে পারে। ইউটিউবিং করতে কোন যোগ্যতা লাগেনা।যোগ্যতা এমনিতেই ইউটিউবিং শুরু করতে করতেই হয়ে যাবে এর জন্য এক্সট্রা কোন যোগ্যতার প্রয়োজন নেই।
ইউটিউব থেকে টাকা কিভাবে ইনকাম করা যায়?
ইউটিউব থেকে ইনকাম: ইউটিউবে সাধারণত ইনকাম করার জন্য আপনাকে ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম এর সাথে যুক্ত হতে হবে। ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম এর সাথে যুক্ত হয়ে খুব সহজেই আপনি ইউটিউব থেকে আর্নিং করতে পারেন। এই ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম এর সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। তাহলে আপনি ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম এর সাথে যুক্ত হওয়ার আবেদন করতে পারবেন।
ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম হয় শর্তসমূহ: প্রথমত আপনার ইউটিউব চ্যানেলের 1000 সাবস্ক্রাইব হতে হবে। এবং দ্বিতীয়তো আপনার ইউটিউব চ্যানেলে 4000 ঘন্টা ওয়াচ টাইম হতে হবে। এই দুটি শর্ত বারো মাসের ভিতরে পূরণ করতে পারলেই, আপনি মনিটাইজেশন এর জন্য আবেদন করতে পারেন।অর্থাৎ ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম এর সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন।
আপনার আবেদনটি কিছুদিনের মধ্যেই জিমেইল এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।যদি আপনার চ্যানেল টি তাদের শর্তসাপেক্ষে নিয়মগুলো মেনে থাকে অবশ্যই মনিটাইজেশন পেয়ে যাবেন। মনেটিজেশন মানে আপনি ইউটিউব থেকে ইনকাম এর উপযোগী এবং শুরু করতে পারবেন। আশা করি বোঝাতে পেরেছি কিভাবে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম অনলাইন থেকে করতে পারেন।
চতুর্থ পদ্ধতিঃ
ব্লগিং করে অনলাইনে আয়: বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন থেকে আয় করার একটি মাধ্যম হলো ব্লগিং করে ইনকাম। আপনি চাইলেই খুব সহজে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিজে ব্লগিং করে অনলাইন থেকে আয় করতে পারেন। ব্লগিং মানে লেখালেখি বা আর্টিকেল লেখা। আর এই ব্লগে লেখালেখি করার জন্য আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।
আর এই ওয়েবসাইট তৈরি করার পর আপনাকে অনেকগুলো ইউনিক পোস্ট করতে হবে। আপনার পোস্ট গুলো কপি মুক্ত হলে এবং ইনকাম করার উপযোগী হলে এডসেন্স এর জন্য আপনি আবেদন করতে পারেন। আপনার ওয়েবসাইটটি যদি এডসেন্সের নিয়ম নীতি গুলো মানার উপযোগী হয় তাহলে, আপনার আবেদনটি একসেপ্ট হবে অর্থাৎ এডসেন্স এপ্রুভ হয়ে যাবে।
আর আপনার এডসেন্স এপ্রুভ মানে অনলাইন থেকে আয় শুরু। অ্যাডসেন্সে অ্যাপ্রভে হলে আপনার ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দিয়ে আপনি আয় করে নিতে পারেন। যত লোক আপনার ওয়েব সাইটের বিজ্ঞাপন গুলো দেখবে গুগোল অ্যাডসেন্সে ততো আপনার ইনকাম হবে।আর আপনার গুগল এডসেন্স একাউন্টে 10 ডলার হলেই গুগল থেকে একটি চিঠি আসবে আপনার এড্রেসে।
চিঠিতে আসা কৃত কোডটি সাবমিট করলেই অ্যাডসেন্সে আপনার এড্রেস টি ভেরিফাই হয়ে যাবে। তারপর যখন গুগোল অ্যাডসেন্সে 100 ডলার জমবে তখন, সে টাকা আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে খুব সহজে তুলে নিতে পারবেন।আশা করি বুঝতে পেরেছেন কিভাবে ব্লগিং করে অনলাইন থেকে খুব সহজেই আয় করতে পারবেন সেটা।
পরিশেষে বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই এই আর্টিকেল একটি লাইক দিবেন। যদি আর্টিকেল সম্পর্কিত কোনো মতামত অথবা প্রশ্ন থাকে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন।আজকের আর্টিকেলটি এ পর্যন্তই আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।