হ্যালো বন্ধুরা আশা করি সকলে অনেক ভালো আছেন। আপনাদের কে আমাদের এই সাইটে আমার পক্ষ থেকে জানাই স্বাগতম। আজকের পোস্ট এ আমি আপনাদের সাথে ফ্রিল্যান্সিং এর কয়েকটি বিষয় নিয়ে কথা বলবো। তো চলুন দেরি না করে পোস্ট টি শুরু করে দেওয়া যাক।
ফ্রিল্যান্সিং মানে কি?
ফ্রিল্যান্সিং মূলত জব এর মতোই। আমরা যদি কোন কোম্পানিতে জব করতে চাই তাহলে আমরা কি করি? ওই কোম্পানি সার্কুলার দিলে তখন আর জবের জন্য এপ্লাই করি। সিভি সাবমিট করি। জব হয়ে গেলে সে কোম্পানিতে নির্দিষ্ট একটি দায়িত্ব পালন করতে থাকি। সে কাজের বিনিময়ে মাসিক স্যালারি জেনারেট হয়। ফ্রিল্যান্সিং হলো এ ধরনের একটি জব। অনলাইনে বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন মানুষদেরকে হায়ার করে থাকে। সে কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন কাজ করে দেয়ার জন্য।
যেমন ধরেন একটা নতুন কোম্পানি লঞ্চ হলে তাদের নতুন লোগো ডিজাইন দরকার। তারা তখন গ্রাফিক ডিজাইনারদের কে হায়ার করিয়ে নেয়। আবার একটা কোম্পানির ওয়েবসাইট এ কয়েকটি আর্টিকেল এর প্রয়োজন। একজন আর্টিকেল রাইটার কে হায়ার করে অনলাইনে সে কোম্পানি তাদের জন্য আর্টিকেল লিখিয়ে নেয়। যেমন আমি একজন আর্টিকেল রাইটার। আমি বিভিন্ন ওয়েবসাইটের জন্য আর্টিকেল লিখে দেই। এটার মাধ্যমে আমি ফ্রিল্যান্সিং করি।
অনলাইনে আপনার যে দক্ষতা বা স্কিল আছে যে বিষয়টা আপনি জানেন অথবা আপনি ভবিষ্যতে শিখে নিবেন সেই দক্ষতা দ্বারা আপনি বিভিন্ন কোম্পানিতে সহযোগিতা করবে
ফ্রিল্যান্সিং এ বাংলাদেশ
ফ্রিল্যান্সিং এ বাংলাদেশের তরুন-তরুনীদের ভিড় দিন দিন বাড়ছে। পড়ালেখা শেষ করে অনেকেই চাকরি পাচ্ছেন না। আবার অনেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি ইনকামের আশায় আগ্রহী হচ্ছেন ফ্রিল্যান্সিং এ। কেউ কেউ আবার চাকরির পাশাপাশি একটু বাড়তি ইনকামের আশায় ঝুঁকছেন ফ্রিল্যান্সিং পেশা’র দিকে।
বর্তমানে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশেও ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় পেশার নাম। সারা এশিয়া মহাদেশে পাশের ভারত এর পর পরই রয়েছে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার দের স্থান। বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সারদের অনেক সুনাম রয়েছে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে।
জনপ্রিয় সোসাল মিডিয়া গুলোতে আপনি যদি ‘ফ্রিল্যান্সিং বাংলাদেশ’ লিখে খোঁজ করেন তাহলে অনেক গ্রুপ ও পেইজ এবং কমিউনিটি খুঁজে পাবেন। অনলাইন ও ফ্রিল্যান্সিং এ আপনার ক্যারিয়ার পাকাপোক্ত করতে সেগুলোতে যুক্ত হোন।
বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি?
জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে বর্তমান বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং পেশা তৃতীয় অবস্থানে আছে। সেদিক দিয়ে বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। দিন দিন এই পেশার প্রতি নতুন দের পাশাপাশি প্রবীণ অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন। অন্যান্য চাকরির বিশেষ করে সরকারি চাকরি তে এপ্লাই করতে বয়স অনেক বিরাট একটি বাঁধা। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং পেশায় বয়সের কোন বাঁধা নেই। যে কোন বয়সের যে কেউই স্কিল অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবে। সুতরাং বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ খুবই সম্ভবনাময়।
বর্তমানে বাংলাদেশে কতজন ফ্রিল্যান্সার আছে?
ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা বাংলাদেশে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর তাই বাংলাদেশে ঠিক কতজন ফ্রিল্যান্সার আছে তা হুবহু বলা কঠিন। ২০২১ সালের হিসাব মতে বাংলাদেশে বর্তমানে ৬,৫০,০০০ ফ্রিল্যান্সার আছে। তাহলে বলা চলে বর্তমানে বাংলাদেশে ৬ লক্ষ ৫০ হাজার বা, ৭ লাখের মত ফ্রিল্যান্সার আছে।
ফ্রিল্যান্সিং কেন করব?
যারা নতুন তাদের সবার মনে একটা সাধারণ প্রশ্ন থাকতে পারে। আর সেটা হল ‘ফ্রিল্যান্সিং কেন করব?’ আসলেই তো ! কেন করবো ফ্রিল্যান্সিং?
একজন স্টুডেন্ট হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং কেন করব?
আপনি যদি একজন স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিজের খরচ নিজে চালাতে এবং বাবা-মা কে অর্থনৈতিক সাপোর্ট দিতে স্কিল ডেভেলপমেন্ট করুন ফ্রিল্যান্সিং এর উপর।
একজন চাকুরীজীবী হয়েও ফ্রিল্যান্সিং কেন করব?
আপনি যদি একজন চাকুরীজীবী হয়েও থাকেন তাহলে একটু বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে এবং পরিবারে স্বচ্চলতা আনতে স্কিল ডেভেলপমেন্ট করুন ফ্রিল্যান্সিং এর উপর।
আপনি যদি একজন পেশাদার বা, প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকেন তাহলে Freelancers Bangladesh এ গিয়ে আপনার পেশার স্বীকৃতি বুঝে নিন।
ফ্রিল্যান্সিং করার সাইট
ফ্রিল্যান্সিং সাইট অনেক গুলো আছে। তবে নতুনদের জন্য সহজে ও দ্রুত সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হবার জন্য ফাইভার ফ্রিল্যান্সিং সাইট কেই আমি সাজেস্ট করবো। কারণ এখানে মাত্র ৫ ডলার দিয়ে ইনকাম শুরু করার মাধ্যমে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করা সম্ভব। তবুও এখানে আমি ফ্রিল্যান্সিং সাইট অর্থাৎ জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের নাম দিলাম।
জনপ্রিয় ও সেরা কিছু ফ্রিল্যান্সিং সাইট এর তালিকাঃ
১. Upwork.com
২. Fiverr.com
৩. PeoplePerHour.com
৪. Guru.com
৫. Freelancer.com
৬. Toptal.com
৭. WeWorkRemotely.com
৮. SimplyHired.com
১০. FreelanceWriting.com
এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ফ্রিল্যান্সিং সাইট আছে যেগুলো তে আপনি ফ্রিতে একাউন্ট খোলার মাধ্যমে আপনার স্কিল অনুযায়ী জবে এপ্লাই করে কাজ পেতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলোতে দিন দিন ফ্রিল্যান্সারদের ভিড় বাড়ছে। শুধু ফ্রিল্যান্সার নয়, যারা কাজ দিবে অর্থাৎ বায়ার বা, ক্লায়েন্ট দেরও ভিড় বাড়ছে।
ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা কিভাবে তুলতে হয়?
ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা কিভাবে তুলতে হয়? ফ্রিল্যান্সিং এ সাধারণত ডলার এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইউরো তে আপনাকে লেনদেন করতে হবে। এখন এই ডলার বা ইউরো থেকে কিভাবে টাকা হিসেবে পাবেন? ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা তুলতে হলে আপনাকে আপনার ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট এর সাথে পেমেন্ট মেথড এড করে নিতে হবে। একেক মার্কেটপ্লেসের পেমেন্ট মেথড একেক ধরনের। যেমন কোথাও পে-পাল, কোথাও পেওনিয়ার ইত্যাদি।
তবে সব গুলো ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে টাকা আপনারা লিগ্যাল ভাবে খুব সহজে ব্যাংক মানি ট্র্যান্সফারের মাধ্যমে নিতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনাকে নিজের দেশের এমন কোনো ব্যাংক এ একাউন্ট খুলতে হবে যেটায় ইন্টারন্যাশনাল মানি ট্র্যান্সফার হয়।
তো বন্ধুরা আশা করি পোস্ট টি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। এই আরটিকেলটি সর্বপ্রথম প্রকাশ করা হয়েছে ShopTips24.CoM ওয়েবসাইটে। আবার দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্ট এ। সে পর্যন্ত সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেয।