Site icon Trickbd.com

ছাত্রাবস্থায় অর্থ উপার্জন করার সেরা ৫টি উপায়

Unnamed

ছাত্রাবস্থায় অর্থ উপার্জন করার সেরা ৫টি উপায়

বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার অধিকাংশ জুড়েই রয়েছে স্টুডেন্ট। এদের মধ্যে আবার খু্ব সংখ্যক স্টুডেন্টই রয়েছে, যারা পড়াশোনার পাশাপাশি অর্থ উপার্জন করে; নিজের পরিবার সামলায় বা নিজের পড়াশোনার খরচ চালায়। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই তাঁদের পরিবারের প্রতি নির্ভরশীল। হয়তো বা আপনিও এমন একজন মানুষ, যে একজন স্নাতক বা উচ্চমাধ্যমিকে কিংবা যেকোনো শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন। তবে আপনি ওই সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের চেয়ে একটু ভিন্ন। কারণ তাঁরা এখনো বোঝা হয়েই রয়েছে, আর আপনি পরিবারের ওপর আপনার নির্ভরশীলতা একটু হলেও হ্রাস করতে চাচ্ছেন। অর্থ উপার্জন শুরু করতে চাচ্ছেন। যার কারণেই হয়তো— গুগল সার্চ বা ফেসবুক শেয়ার; যেকোনো মাধ্যমে এটির লিংক পেয়ে পোস্টটি অপেন করেছেন। এটা খুবই ইতিবাচক ব্যাপার।

আশা করছি, আপনাকে আমরা নিরাশ করবো না। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আয় করার কিছু বাস্তবসম্মত পদ্ধতি আপনি জানতেই পারবেন। যে টা বলছিলাম, আজকের ব্লগে আমরা জানতে চলে ‘একজন স্টুডেন্ট হিসেবে আয় করার সেরা ৫টি উপায়’। আশা করবো এই পদ্ধতিগুলো যেনে আপনি আপনার জীবনে প্রয়োগ করবেন, এবং আপনার অর্থনৈতিক মন্দা না থাকলেও আগের থেকে স্বাবলম্বী হওয়ার পথে একধাপ এগিয়ে যাবেন। তো বেশি দেরি না করে, চলুন জেনে নিই— একজন স্টুডেন্ট হিসেবে আয় করার সেরা ৫টি উপায়।

• টিউশন করানো

শিক্ষার্থীদের আয় করার জন্য সর্বপ্রথম যেটা রাখতেই হবে, তা হলো— টিউশন করানো। হ্যাঁ, মোটামুটি অনেক সনাতন বলা যায় এই পদ্ধতিটিকে। আমাদের ছোটোবেলা, আমাদের বাবা-মায়েদের ছোটোবেলা, সবসময়ই টিউশন করানো ব্যাপারটা ছিলো। সেই শুরু থেকে এখন পর্যন্ত; সফলতার সাথে এটি এখনো টিকে আছে এবং থাকবে। আপনার হাত খরচ, পড়াশোনার খরচ মেটানোর জন্য টিউশন করানো অন্যতম একটি উপায় হতে পারে। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনি বর্তমানে যে শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন তা থেকে মোটামুটি দুই থেকে চার ব্যাচ জুনিয়রদের পড়াবেন। কিংবা আরো জুনিয়রদের। কারণ আপনি যদি আপনার সমমান শিক্ষার্থীদেরদকে টিউশন করান, তাঁরা আপনাকে নিয়োগ দেবে না। কিংবা নিয়োগ দিলেও বেশ জটিলতার মধ্যে পড়বেন। এই বিষয়টি অবশ্যই খেয়াল করবেন

টিউশন পাওয়ার জন্য যে কাজটি করতে পারেন, প্রথমে কোনো একটি কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে আপনার নাম ঠিকানা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে একটি পোস্টার কম্পোজ করাবেন এবং তা প্রিন্ট করবেন। প্রিন্ট করার পর আপনি যে এলাকাতে টিউশন পড়াতে আগ্রহী, সে এলাকার বিভিন্ন দেয়ালে পোস্টারিং করে দিবেন। এতে আপনার প্রচার হবে। প্রচার হলেই আপনি টিউশন পেতে শুরু করবেন। আশা করবো, প্রচার শুরু করার এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনি কমপক্ষে দু’টো টিউশনের অফার পেয়ে যাবেন। আপনার কাছে যে ডিলটি বেশি গ্রহণযোগ্য মনে হবে, তা গ্রহণ আপনার টিউশন ক্যারিয়ার শুরু করে দিন। মাস শেষে বেশ ভালো একটা অর্থ আপনার হাতে এসে যাবে, বলে আসা করছি। এতে আপনার পড়াশোনাতেও সাহায্য হবে।

• গ্রাফিক্স ডিজাইন করা

বর্তমান যুগ, প্রযুক্তির যুগ। সবকিছু অনলাইকে চলে আসছে। ই-কমার্স সম্পর্কে তো আপনারা সবাই বেশ ভালো ভাবেই জানেন— খেয়াল করলে দেখতে পাবেন, তাঁরা তাদের সোস্যাল মিডিয়াতে তাঁদের প্রোডাক্টকে কাস্টমারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের পোস্টার ব্যাবহার করে। এগুলো তো কাউকে না কাউকে বানাতে হয়। তাই না?
এগুলো যারা বানায় তাদের মূলত বলা হয়— গ্রাফিক্স ডিজাইনার। তাঁরা শুরুতেই এমন ডিজাইন করতে পারেনি। এর জন্য সময় নিয়ে শিখতে হয়েছে। তাঁরা অনেকটা সময় এর ওপর ইনভেস্ট করেছে, তাই তাঁরা এতো আকর্ষণীয় পোস্টারগুলো বানাতে পারে।

এটাতো ছিলো সাধারণ একটা উদাহরণ মাত্র। গ্রাফিক্স ডিজাইনের ভেতর আরো কিছু সাব ক্যাটাগরি রযেছে। আপনি আপনার মনমতো একটা গ্রাফিক্স ডিজাইন সাব-ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে; শেখা শুরু করে দিন। একসময় দেখতে পাবেন আপনিও এমন কাজ করতে পারছেন। এর জন্য আপনাকে পৃথিবীর বহুল প্রচলিত দু’টি সফটওয়্যার— এডোবি ফটোশপ এবং এডোবি ইলোস্ট্রেটর; শিখতে হবে।

শেখার জন্য সবচেয়ে সেরা মাধ্যম হতে পারে গুগল এবং ইউটিউব। আপনি যদি ইউটিউব বা গুগলে ‘ফটোশপ বাংলা টিউটোরিয়াল, ইলোস্ট্রেটর বাংলা টিউটোরিয়াল’ লিখে সার্চ দেন, অসংখ্য ভিডিয়ো টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন। সেগুলো থেকে মন মতো বাছাই করে শেখা শুরু করে দিন।

ছাত্রাবস্থায় এটা শুরু করলে অনেক এগিয়ে যেতে পারবেন। অবশেষে গিয়ে দেখবেন, আপনি পার্ট-টাইম কাজ হিসেবে শুরু করেছিলেন, আর তা এখন আপনার পেশা হয়ে গিয়েছে। এবং আপনি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যতার সহিত জীবন উপভোগ করছেন। গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখাকালেই আপনি চাইলে ভার্চুয়াল বা লোকাল ক্লাইন্টের কাজ করে অর্থ উপার্জন শুরু করে দিতে পারবেন। লোকাল মার্কেটে এই ধরনের কাজ প্রচুর পাওয়া যায়।

• ইউটিউবে ভিডিয়ো বানানো

পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বার ভিজিট করা ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি ওয়েবসাইট হচ্ছে— ইউটিউব। ইউটিউব-এর সাথে আমি বা আপনি; সবাই বেশ ভালোভাবেই পরিচিত। এমন অনেক মানুষও রয়েছে, যারা ইউটিউব স্ট্রিমিং করা ছাড়া একটা দিনও কল্পনা করতে পারে না। দিনের কোন একটা অংশ আমরা সবাই ইউটিউবে ভিডিয়ো দেখে কাটায়।

আপনি যদি না জানেন কীভাবে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হয় তাহলে এখানে ক্লিক করে জেনে নিতে পারেন

বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের, কোটি কোটি তরুণ-তরুণীরা ইউটিউবে ভিডিয়ো কনটেন্ট দেয়। আমরা এই ভিডিয়োগুলো দেখে কিছু শিখি বা আনন্দ পাই। তাঁরা কি শুধু আমাদের বিনোদন দেওয়ার জন্যই ভিডিয়োগুলো আপলোড করছে? অবশ্যই না। তাঁরা ভিডিয়োগুলো বানিয়ে গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে বেশ ভালো পরিমাণ টাকা আয় করছে। আর মজার ব্যাপার হলো, এই কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের মধ্যেই বেশ বড়সড় জায়গা জুড়ে রয়েছে— শিক্ষার্থীরা। তাঁরা পড়াশোনার পাশাপাশি ভিডিয়ো বানাচ্ছে, জীবনটাকে উপভোগও করছে, পড়াশোনার খরচও দিচ্ছে। হয়তোবা আপনি নিজেও একজন স্টুডেন্ট। সে কারণেই এই ব্লগটি এখনো পড়ছেন। আর কী চিন্তা করছেন?

আপনি যদি ক্যামেরা সামনে কথা বলা বা মিডিয়া কনটেন্ট বানাতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, ইউটিউবে ভিডিয়ো কনটেন্ট আপলোড করা শুরু করে দিন। আপনার যে টপিকে ইন্টারেস্ট রয়েছে সে টপিকের ওপর একটি চ্যানেল খুলে আজ থেকেই ভিডিয়ো বানানো শুরু করে দিন। হতে পারে একদিন আপনারও বেশ ভালো বড়ো একটি ফ্যানবেজ গড়ে উঠতে পারে। আর অর্থ উপার্জন তো রয়েছেই।

• ছোটোখাটো ব্যবসা শুরু করা

ইদানীং কালে অনেক তরুণেরন ব্যবসা দিকে ঝুকছে। তবে একেবারে প্রফেশনাল ব্যবসা বললেও ভুল বলা হবে। তাঁরা নিজেদের খরচ চালানোর জন্যই সাধারণত ছোটোখাটো ব্যবসা করে থাকে। এদের মাইক্রো বিজনেস বলা যায়। তাঁদের বেশিরভাগই যে ব্যবসাগুলোর দিকে আগ্রহী তা হলো— টিশার্ট বিজনেস, শখের জিনিস বিক্রি, প্যান্ট বিক্রি, হ্যান্ডমেইড প্রোডাক্ট বিক্রি, ইত্যাদি। তবে এটা ভাববেন না যে, তারা এগুলো নিয়ে দোকানে বসে থাকে। তাঁরা বেশিরভাগই এই বিজনেসগুলো পরিচালনা করে থাকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। বাংলাদেশের কনটেক্সটে ফেসবুকে এই ধরনের ব্যবসা সবচেয়ে বেশি উন্নতি করতে পারে। তারা তাঁদের কাস্টমার রিলেশন শিপ, অর্ডার নেওয়া, কাস্টমারদের প্রোডাক্ট দেখানো সহ বেশিরভাগ কাজই অনলাইনে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সেড়ে ফেলে। এতে তাঁদের লাভও বেশ ভালো পরিমাণই হয়।

আপনার যদি আগ্রহ থাকে, এই ব্যবসায়টি চেষ্টা করে দেখতে পারেন। সফল হওয়ার বেশ ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।

• নোটস বিক্রি করা

যদি আপনি আপনার পড়াশোনা ঠিক রেখে অর্থ উপার্জন করতে চান, আপনাকে হাইলি রেকমেন্ড করবো নোটস বিক্রি করার জন্য। আপনি যেগুলো পড়ছেন সেগুলোকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে কতগুলো কপি করে ফেলুন। এতে আপনার পড়াশোনাও পুরোদমে হবে, টুকটাক অর্থ উপার্জনও হবে। এখন প্রশ্ন থাকতে পারে যে, নোটস কিনবে কে? আপনি প্রচার করেই দেখুন, ক্লাসমেট বা জুনিয়রেরা এইগুলা লুফে নিবে।

শেষকথা

এগুলোই ছিলো ছাত্রাবস্থায় আয় করার কিছু উপায়। আপনি আয় শুরু করার জন্য এখান থেকে যেকোনো একটি পদ্ধতি পছন্দ করে আপনার কাজ শুরু করে দিন। মন দিয়ে কাজ করলে ৬ মাসের মধ্যে বেশ ভালো করতে পারবেন বলে, বিশ্বাস করি।
এতক্ষণ ব্লগটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সাথেই থাকবেন।

একটি অনুরোধ এই ধরনের পোস্ট যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমার ওয়েবসাইট থেকে ঘুরে আসতে পারেন।

ProjuktyTech.Com