Site icon Trickbd.com

অংশগ্রহণ করুন বিশ্বের অন্যতম হ্যাকাথন নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন।
আজকের এই পোস্ট এ আপনাদের সাথে আলোচনা করবো নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ নিয়ে। এটি কি, কিভাবে আপনারা এতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন সে সব বিষয়ে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা থাকবে।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ কি?
– NASA Space Apps Challenge মূলত একটি বার্ষিক, বিশ্বব্যাপী হ্যাকাথন যেখানে অংশগ্রহণকারীরা বৈজ্ঞানিক এবং প্রযুক্তিগত সমস্যা সমাধানের জন্য সমাধান তৈরি করে।
এই ইভেন্টটি নাসা আয়োজিত হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অংশগ্রহণকারীরা এতে যুক্ত হতে পারে।
আসুন বিস্তারিত বলি:
নাসা প্রত্যেক বছর একটি নিদ্রিষ্ট থিম সিলেক্ট করে, যেমন এই বছরের থিম হচ্ছে “The Sun Touches Everything”
থিম লঞ্চের পরে ওরা ওই থিমের সাথে রিলেটেড কিছু চ্যালেঞ্জ বলে দেই, আপনাকে ঐ চ্যালেঞ্জ গুলোর মধ্যে যেকোনো একটি’র সমাধান নিয়ে কাজ করতে হবে।
এই বছরের সব চ্যালেঞ্জ: https://www.spaceappschallenge.org/nasa-space-apps-2024/challenges/
এখন পর্যন্ত শুধু চ্যালেঞ্জ গুলোর টাইটেল এবং ডেসক্রিপশন বলেছে, চ্যানেলের বিস্তারিত ১২ সেন্টেম্বার রিলিজ করবে যেখানে চ্যালেঞ্জে কি কি রিসোর্স ব্যবহার করতে পারবেন, কি কি রাখতেই হবে বিস্তারিত তারা আপনাকে বলে দিবে।
কিভাবে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায় ?
– নাসা মূলত ১০ টি ক্যাটাগরির অধীনে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন বাছাই করে থেকে। বিস্তারিত:
অর্থাৎ তাদের দেওয়া সমস্ত চ্যালেঞ্জ থেকে এই ১০ টি ক্যাটাগরি থেকে তারা বাছাই একটি করে গ্লোবাল চ্যাম্পিয়ন বাছাই করবে।
এবার কিভাবে অংশগ্রহণ করবেন সে বিষয়ে আলোচনা করা যাকঃ
রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া: নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জটি বাংলাদেশে BASIS (Bangladesh Association of Software and Information Services) আয়োজন করে থাকে।
ইতি মধ্যেই রেজিস্ট্রেশনের সময় শেষ হয়ে গেছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনার কারণে তারা ৯ দিন সময় বৃদ্ধি করেছে।
রেজিস্ট্রেশন লিঙ্ক: https://nsac.basis.org.bd/registration
যখন আমি এই পোস্টটি লিখছি তখন হতে মাত্র ৭ দিন আছে।
রেজিস্ট্রেশনের জন্য কি কি লাগে ?
এখানে (মানে বেসিস এ) রেজিস্ট্রেশনের জন্য আপনার শুধু টিম ইনফরমেশন লাগবে, এবং আপনার সলিউশনের একটি ডেসক্রিপশন এবং তার সাথে আপনার সলিউশনের প্রোটোটাইপ ভিডিও অথবা প্রেজেন্টেশন
.
-টিম তৈরি: আপনাকে একটি টিম গঠন করতে হবে (সাধারণত ২-৫ জন সদস্যের)। তবে, এককভাবেও অংশগ্রহণ করা যায়।
.
-প্রজেক্ট নির্বাচন: বিভিন্ন ধরণের চ্যালেঞ্জ থেকে একটি প্রজেক্ট নির্বাচন করতে হবে যার উপর আপনার টিম কাজ করবে। বলে রাখি আপনার সমাধান যদি হার্ডওয়ার রিলেটেড কিছু হয় তবে আপনাকে যে পুরো প্রজেক্ট টা বানিয়ে দেখাতে হবে সে রকম কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আপনি আপনার সলিউশনের উপরে একটা প্রেজেন্টেশন কিংবা প্রোটোটাইপ দিয়ে বুঝাতে পারলেই হবে।
.
এর পরবর্তী ধাপে আরেকবার বাংলাদেশ পর্যায়ে আইডিয়া সাবমিট করার অপশন দিবে মূলত ঐটার উপরে নির্ভব করবে আপনার ন্যাশনাল রাঙ্কিং। এবং সেখান থেকে সেরা কিছু টিমকে ৪-৫ অক্টোবর অফলাইন হ্যাকথনে অংশগ্রহণ করতে হবে। বিস্তারিত তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে।
.
আপনাকে আপনার সলিউশনের উপরে ২৪০ সেকেন্ডের (৪ মিনিটের) মধ্যে একটি ভিডিও বানাতে হবে, যেটি দেখে মূলত ন্যাশনাল লেভেলের জজরা রাঙ্কিং ঘোষণা করে। রঙ্কিনের এখানে আরেকটা বিষয় আছে। রেজিস্ট্রেশনের সময় আপনাকে একটি অপশন দিবে আপনি কোন রেজিওন থেকে পার্টিসিপেট করতে চান।
বলে রাখি এটি রাজশাহী, ঢাকা, সিলেট, খুলনা সহ ৯ টি রেজিওনে থেকে রিজিওনাল চ্যাম্পিয়ন, এবং রানারআপ ঘোষণা করে। ঢাকাতে কম্পিটিশনের বেশি হওয়ায় অনেকে ঢাকার বদলে অন্য রেজিওন সিলেক্ট করে পার্টিসিপেট করে।
.
এবং আরেকটি ভিডিও বানানো লাগবে ৩০ সেকেন্ডের যেটি সাবমিট করতে হবে নাসার ওয়েবসাইটে এবং ঐটার উপরে নাসার জজরা ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করবে।
.
অর্থাৎ: আপনি এখন একটা টিম বানাবেন, ওদের দেওয়া একটা চ্যালেঞ্জের উপরে আইডিয়া ডেভেলপ করে প্রোটোটাইপ বানাবেন সেটা দিয়ে আপাতত রেজিস্ট্রেশন করবেন। তারপর ১২ অক্টোবরে পূর্ণ চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করলে সেটা অনুযায়ী আপনার আইডিয়া সম্পূর্ণ করে তার উপরে ২৪০ সেকেন্ড (সর্বোচ্চ এর কম হতে পারে) এবং ৩০ সেকেন্ডের। টোটাল ২ টি ভিডিও যার একটি ন্যাশনাল রাঙ্কিং (এবং তার উপরে নির্ভর করছে আপনার অফলাইন হ্যাকাথন এ অংশগ্রহণ) এবং আরেকটির উপরে গ্লোবাল চ্যাম্পিয়ন।
.
২৪০ সেকেন্ডের ভিডিওর জন্য আপনারা গত ৩ বছরের দেশের যে সব রিজিওনাল চ্যাম্পিয়ন এবং রানার আপ টিম আছে তাদের বানানো ভিডিও গুলো দেখতে পারেন, তাহলে আপনি একটা আইডিয়া পেয়ে যাবেন ন্যাশনাল লেভেলের জাজদের কিভাবে ইমপ্রেস করা যায়। এই চ্যানেলে অনেক ভিডিও দেওয়া আছে।
লিঙ্কঃ https://www.youtube.com/@nasaspaceappschallenge-ban4746
.
যদি ন্যাশনাল লেভেলে ভালো রঙ্ক না আসে ?
– সমস্যা নাই, সে ক্ষেত্রে আপনি অনলাইনে হ্যাকথন এ পার্টিসিপেট করে আপনার আইডিয়া নাসার সাইটে আপলোড করতে পারবেন।
কিভাবে এই হ্যাকাথন আপনার ক্যারিয়ারের জন্য সহায়ক হতে পারে?
– নেটওয়ার্কিং: আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ।
– স্কিল ডেভেলপমেন্ট: বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে নতুন স্কিল অর্জনের সুযোগ।
– প্রশংসাপত্র: সফলভাবে অংশগ্রহণ করলে নাসা থেকে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের সাফল্য:- ২০২১-২০২৩ টানা ৩ বার সহ এখন পর্যন্ত সর্বমোট ৪ বার বাংলাদেশের টিম গ্লোবাল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
২০১৮:- Team Name: Team Olik
Project Name: Lunar VR
Location: Sylhet, Bangladesh
২০২১:- Team Name : MOHAKASH
Project Name : ARSS-Advanced Regolith Sampler System
Location : Khulna, Bangladesh
Winning Catagory: Best Mission Concept
২০২২:-Team Name: Diamond
Project Name: Diamond In The Sky
Location: Cumilla, Bangladesh
Winning Catagory: Most Inspirational
২০২৩:-Team Name: Team Voyagers
Project Name: Aqua Explorer
Location: Rajshahi, Bangladesh
Winning Catagory: Best Use of Storytelling
আজকের পোস্ট এই পর্যন্তই, পোস্টের কোন অংশে ভুলক্রটি হলে সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

এই পোস্ট সহ যেকোনো প্রয়োজনে আমার সাথে যোগাযোগ করতেঃ
Facebook My Telegram Channel

সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন আর নিয়মিতো ট্রিকবিডির সাথেই থাকুন এই প্রত্যাশায় বিদায় নিচ্ছি ,ধন্যবাদ।
আল্লাহ হাফেজ