ইসরায়েলের নাম শোনেনি এমন বাংলাদেশি পাওয়া দুর্লভ। আমাদের পাসপোর্টেই তো লিখা থাকে, “You can go to any country but Israel.”
আপনি কি জানেন, ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পেছনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো একজন বিজ্ঞানীর?
শাঈম ওয়াইজম্যান ছিলেন কেমিস্ট্রির পাগল। পড়াশোনা করেছিলেন জার্মানিতে। ১৮৯৯ সালে তিনি পিএইচডি করেন অর্গানিক কেমিস্ট্রিতে। তাকে বলা হয়- The father of industrial fermentation. প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ব্রিটেনে বেশ চাপ পড়ে। এই যুদ্ধ অনেকাংশেই ছিলো বিজ্ঞানীদের মধ্যকার আবিষ্কারের লড়াই। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বেশি প্রচলিত ছিলো ডিনামাইট জাতীয় বিষ্ফোরক। কিন্তু, এই বিষ্ফোরক তৈরির প্রধান উপাদান “Acetone” তৈরি করা ছিলো বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সেসময় মানুষ এটা তৈরি করত রাসায়নিক উপায়ে, যার উৎপাদন ক্ষমতা ছিলো খুবই অল্প। তাই, এর অভাবে ব্রিটিশরা হারতে চলছিলো।
সেই সময় শাঈম ওয়াইজম্যান করে ফেললেন এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। তিনি Clostridium acetobutylicum নামক একটি ব্যাকটেরিয়া খুঁজে বের করলেন যা Acetone উৎপাদন করতে পারে। এই আবিষ্কারের ফলে আর কেমিক্যালের উপর নির্ভর করতে হয়নি। আর যেহেতু ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি ঘটে অনেক তাড়াতাড়ি, তাই এই পদ্ধতির উৎপাদন ক্ষমতাও হলো অনেক বেশি। বড় বড় ফর্মেন্টার ব্যাবহার করে শুরু হলো Acetone তৈরি। একই সাথে বাড়তে থাকল ব্রিটেনের বিস্কোরকের চালান। এক আবিষ্কারই শেষ পর্যন্ত ব্রিটেনের যুদ্ধ জয়ের কারণ।
ব্রিটেনের রাণী যুদ্ধের পর শাঈম ওয়াইজম্যানকে পুরষ্কার দিতে চাইলেন। ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন জায়োনিস্ট, যারা ইহুদিদের জন্য একটি পবিত্র ভূমি দাবি করে। তিনি তার আবিষ্কারের প্রতিদান স্বরূপ চেয়ে বসলেন ইহুদিদের জন্য একটি রাষ্ট্র। সেই রাষ্ট্রই আজকের ইসরায়েল।
একটা ব্যাকটেরিয়ার আবিষ্কার ব্রিটেনকে যুদ্ধে জিতিয়ে ইসরায়েলের মতো একটি রাষ্ট্র পর্যন্ত তৈরি করে দিল! সত্যিই অবাক করার মতো।