Site icon Trickbd.com

গরিলা গ্লাস কী? এগুলো কতটা মজবুত? [ সবকিছু এক পোস্টে, কেউ মিস করবেন না ]

Unnamed

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।


গরিলা গ্লাস কী? এগুলো কতটা মজবুত?

আজকাল স্মার্টফোন কেনার সময় সবাই একটা মজবুত ডিভাইস চায়। কারণ বেশিরভাগ ক্রেতাই একটা স্মার্টফোন কমপক্ষে এক-দেড় বছর ব্যবহার করে থাকেন। স্মার্টফোনগুলোর সবচেয়ে ভঙ্গুর অংশ হলো এর ডিসপ্লে। সাধারণ কাঁচের তৈরী স্ক্রিন সহজেই হাত থেকে পড়ে ভেঙ্গে যায়। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে কয়েক বছর যাবত বিভিন্ন মোবাইল ফোন নির্মাতা কোম্পানি স্মার্টফোনের ডিসপ্লেতে কর্নিং গরিলা গ্লাস নামক এক ধরনের কাঁচ ব্যবহার করছে যেগুলো সাধারণ কাঁচের চেয়ে অনেক বেশি ধকল নিতে পারে।

গরিলা গ্লাস শক্তিশালী- সেটা জানলেও এটা কীভাবে কাজ করে কিংবা এর সম্পর্কে বিস্তারিত অনেকেরই অজানা। চলুন জেনে নিই জিনিসটা কী আসলে!


গরিলা গ্লাস কী?

গরিলা গ্লাস হলো করনিং ইনকর্পোরেটেড নামক একটি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের ট্রেডমার্ককৃত ও প্রস্তুতকৃত এক বিশেষ ধরনের গ্লাস। ১৮৫১ সালে করনিং গ্লাস ওয়ার্কস নামে আমেরিকাতে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে প্রতিষ্ঠানটি নাম পরিবর্তন করে করনিং ইনকর্পোরেটেড হয়েছে। নিউ ইয়র্কের পাশাপাশি জাপান ও তাইওয়ানে তাদের গ্লাস নিয়ে দুটি রিসার্চ সেন্টারও রয়েছে।

গরিলা প্রাণীটি শক্তিশালী হওয়ার কারণেই বোধ হয় এই গ্লাসের নাম গরিলা গ্লাস। সত্যি কথা বলতে গরিলা গ্লাস যে একদমই ভাঙ্গে না তেমনটি নয়। তবে এটা সাধারণ গ্লাসের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। সর্বশেষ ষষ্ঠ প্রজন্মের গরিলা গ্লাস (৬) ১ মিটার উঁচু থেকে অসমতল জায়গায় পরপর ১৫ বার ড্রপ টেস্ট করার পরেও এর স্যাম্পল অক্ষত ছিল।
পঞ্চম প্রজন্মের গরিলা গ্লাসগুলো ১.৬ মিটার উপর থেকে শক্ত জায়গায় পড়লেও আশিভাগ ক্ষেত্রেই অক্ষত থাকে। গরিলা গ্লাস ৬ এর আগের প্রজন্মের চেয়ে দ্বিগুণ পর্যন্ত উত্তম বলে দাবী করে কর্নিং। কোম্পানিটি এগুলোর ডিউরেবিলিটি নিশ্চিত করার জন্য অসংখ্য টেস্ট করে থাকে।

টেকনিক্যালি বলতে গেলে গরিলা গ্লাস হচ্ছে এক ধরনের এলুমিনোসিলিকেট। এগুলো বালু-ভিত্তিক এবং এলুমিনিয়াম, সিলিকন ও অক্সিজেনের কম্পোজিশনে তৈরী রাসায়নিক যৌগ।

প্রাথমিকভাবে গ্লাসটি তৈরী করার পর এটিকে ৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার গলিত সল্ট বাথ এ রাখা হয়। এই তাপমাত্রা আয়ন এক্সচেঞ্জ নামক রাসায়নিক প্রক্রিয়ার সূচনা করে যার ফলে লবণের বড় বড় পটাশিয়াম আয়নগুলো গ্লাসে প্রবেশ করে গ্লাসে থাকা ছোট ছোট সোডিয়াম আয়নকে বাইরে বের করে দিয়ে জায়গা দখল করে। এর ফলে গ্লাসটির ঘনত্ব অনেক বেশি বেড়ে যায় এবং এই অধিক ঘনত্বই গরিলা গ্লাসকে সেই কাঙ্ক্ষিত ডিউরেবিলিটি প্রদান করে।

গরিলা গ্লাস প্রথমে ২০০৮ সালে তৈরী করা হয়। এরপর ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে এটিকে বিভিন্নভাবে আপগ্রেড করা হয়। ২০১৬ সালে পঞ্চম প্রজন্মের গরিলা গ্লাস রিলিজ হয়েছে। ২০১৮ সালে এসেছে গরিলা গ্লাস ৬। পাশাপাশি তারা স্মার্টওয়াচের জন্য গরিলা গ্লাস ডিএক্স প্লাস নামক এক ধরণের গ্লাসও তৈরি করেছে। এমনকি গাড়িতেও গরিলা গ্লাস ব্যবহৃত হচ্ছে। স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৯ সিরিজেও গরিলা গ্লাস ব্যবহৃত হয়েছে।

গরিলা গ্লাস বিশেষ প্রক্রিয়াতে তৈরী করা হলেও সবকিছুর পরেও এটা আসলে কাঁচই। তাই আর দশরকম কাঁচের মতই গরিলা গ্লাসও রিসাইকেল করা সম্ভব। এমনকি পরিবেশের প্রতি এর প্রভাব বিবেচনা করলেও তা জানালা বা বোতলের কাঁচের মতই- আলাদাভাবে কোনোরকম ক্ষতিকর নয়।

এন্টিমাইক্রোবিয়াল গরিলা গ্লাস
এটা এক ধরনের বিশেষ গরিলা গ্লাস যা একই সাথে শক্তিশালী এবং জীবাণু প্রতিরোধী। বিভিন্ন ওয়্যারেবল ডিভাইস ও টাচ স্ক্রিনে ব্যবহারকারীদেরকে জীবাণু থেকে সুরক্ষা দেয়ার উদ্দেশেই এই গ্লাস তৈরী হচ্ছে।

স্মার্টফোন, স্মার্টওয়াচ থেকে শুরু করে অনেক ডিভাইসের ডিসপ্লেই গরিলা গ্লাস প্রোটেক্টেড। দিন দিন এ সংখ্যাটাও বাড়ছে। তবে বেশিরভাগ ডিভাইসে কর্নিং কোম্পানির গরিলা গ্লাস ব্যবহার করা হলেও এর বেশ কিছু বিকল্পও আছে। তার মধ্যে প্রধান হলো আশাহি কোম্পানির ড্রাগনটেইল গ্লাস। ইতিমধ্যে সনি, স্যামসাং, জোলো সহ অনেক কোম্পানি ড্রাগনটেইল গ্লাস তাদের ডিভাইসে ব্যবহার করেছে। তাছাড়া অ্যাপল ওয়াচে ব্যবহৃত স্যাফায়ার গ্লাসও অনেক শক্তিশালী।

তো আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং ট্রিকবিডির সাথে থাকবেন, ধন্যবাদ।