Site icon Trickbd.com

ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ডের পরিচয় ও পার্থক্য

বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। তাই ডিজিটাল যুগের সমস্ত ব্যবস্থাই ডিজিটাল হতে হবে। আর তাই শিক্ষা, চিকিৎসা এমনকি ব্যাংকিং অর্থাৎ লেনদেন ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে হওয়া চাই।

লেনদেনের ক্ষেত্রে কার্ডের ব্যবহার দিন দিন বেড়ে চলছে। কার্ড ব্যবহার করে কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়া জাস্ট একটি সোয়াইপ করে কেনাকাটা থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়ার বিল পর্যন্ত পরিশোধ করা যায়। তবে কার্ড এর মধ্যেও রয়েছে নানান প্রকার। বেশিরভাগ ব্যবহৃত ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড নিয়ে তর্কের যেন শেষ নেই। আপাতদৃষ্টিতে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড একই মনে হলেও এর মধ্যে রয়েছে বড় ধরনের পার্থক্য। তো বন্ধুরা চলুন আস্তে আস্তে সেই পার্থক্যগুলো জেনে নেয়া যাক।

ডেবিট কার্ড কি?

ডেবিট কার্ড এমন একটি প্লাস্টিকের কার্ড যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা ব্যয় করতে পারেন। এই কার্ডটি সাধারণত ব্যাংক কার্ড অথবা চেক কার্ড নামে পরিচিত। এটি সাধারণত কেনাকাটা বা কোন রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়ার সময় ক্যাশ টাকার বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অনেকেই এই কার্ডটিকে ইলেকট্রিক চেক বলে থাকেন।

ক্রেডিট কার্ড কি?

দেখতে একই রকম হলেও এটি ডেবিট কার্ডের সম্পূর্ণ বিপরীত। এই কার্ডটি মাধ্যমে ব্যবহারকারী ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে খরচ করতে পারেন।অর্থাৎ ব্যবহারকারীর কাছে যদি কোন পণ্য বা সেবা কেনার সময় পর্যাপ্ত টাকা না থাকে তাহলে সে ব্যাংক থেকে তার প্রয়োজন অনুযায়ী নির্দিষ্ট এমাউন্টের টাকা নিতে পারবে। এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হবে।

ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের পার্থক্য

আশা করি উপরের আলোচনা থেকে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে কিছুটা ধারনা লাভ করতে পেরেছেন। তো এবার আমরা জানব ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের পার্থক্য সমূহ।

১ ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের প্রধান পার্থক্য টি হল ডেবিট কার্ড দিয়ে ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা খরচ করা যায়। এবং ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে খরচ করা যায়।

২ ডেবিট কার্ড কে ক্যাশ কার্ড বলা হয়। অন্যদিকে ক্রেডিট কার্ড কে লোন কার্ড বলা হয়।

৩ ডেবিট কার্ডের ক্ষেত্রে ব্যাংক গ্রহকে তার টাকার উপরে মুনাফা প্রদান করে থাকে। অপরদিকে ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে গ্রহক তার খরচ করা টাকার উপরে ব্যাংকে মুনাফা প্রদান করে থাকে।

৪ ডেবিট কার্ডে ইএমআই সুবিধা পাওয়া যায় না। অন্যদিকে ক্রেডিট কার্ডে ইএমআই সুবিধা পাওয়া যায়।

৫ ডেবিট কার্ড ব্যবহারকারীকে কোন প্রকার প্রসেসিং ফি প্রদান করতে হয় না। অন্যদিকে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী কে জয়নিং ফি, প্রসেসিং ফি, লেট পেমেন্ট ফি, বার্ষিক ফি সহ বিভিন্ন ফি প্রদান করতে হয়।

৬ সেভিং বা কারেন্ট যে কোন গ্রাহক ডেভিড কার্ড সংগ্রহ করতে পারেন। অপরদিকে যে কেউ চাইলেই ক্রেডিট কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেনা। তাকে ব্যাংকের নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করেই ক্রেডিট কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। যেমন তিনি নিয়মিত লেনদেন করেন কিনা, অন্য ব্যাংক গুলোতে তার কি পরিমাণ ঋণ রয়েছে ইত্যাদি।

৭ অনলাইনে অনেক জায়গায় ডেবিট কার্ড সাপোর্ট করে না। কিন্তু অনলাইনে সব জায়গাতেই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট করা যায়।

৮ ডেবিট কার্ডের ক্ষেত্রে গ্রাহককে কোন মাসিক স্টেটমেন্ট প্রদান করা হয় না। অপরদিকে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী গ্রাহককে তার লেনদেন সম্পর্কিত মাসিক স্টেটমেন্ট প্রদান করা হয়।

৯ ফান্ড ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ডেবিট কার্ড গ্রাহক শুধুমাত্র তার অ্যাকাউন্টে থাকা ব্যালেন্স ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু ক্রেডিট কার্ডধারী গ্রাহক ব্যাংক থেকে পূর্ব অনুমোদিত অ্যামাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন। তবে যদি ক্রেডিট কার্ড ধারী গ্রাহকের উচ্চ ক্রেডিট স্কোর যুক্ত অ্যাকাউন্ট বা কর্পোরেট একাউন্ট থাকে সে ক্ষেত্রে সে অনেক পরিমাণ অর্থ ব্যবহারের অনুমতি পায়।

১০ ডেবিট কার্ডের ক্ষেত্রে কোনো উল্লেখযোগ্য সুবিধা থাকে না বললেই চলে। অপরদিকে ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট সহ রিওয়ার্ড পয়েন্ট এর মত সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

শেষ কথা

মূলত ডেবিট কার্ড হলো প্রি-পেইড সিম এর মত অর্থাৎ আপনার একাউন্টে যতক্ষণ ব্যালেন্স থাকবে আপনি ততক্ষণ ব্যবহার করতে পারবেন অন্যথায় আপনি এই কার্ডটি ব্যবহার করতে পারবেন না। অন্যদিকে ক্রেডিট কার্ড হল পোস্ট-পেইড সিমের মত এই কার্ডের মাধ্যমে আপনি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী খরচ করতে পারবেন।

আমার ইউটিউব চ্যানেল পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই ঘুরে আসবেন।

Exit mobile version