Site icon Trickbd.com

Crypto Currency কে নিয়ে যত মাতামাতি! আসলে Crypto Currency কি? কেন?

Unnamed

Hey Trickbd!
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদে আমিও ভালো আছি।
আজকের টিউটোরিয়াল এ আলোচনা করবো Crypto currency এর সম্পর্কে।

তো চলুন শুরু করা যাক –

Crypto currency mining and crypto currency miner
এ শব্দগুলোর সাথে এখন আমরা খুব বেশি মুখোমুখি হচ্ছি। বলা চলে মাইনিং আর মাইনার শুনতে শুনতে তো মাথাতেই গেথে গেছে। বিশেষত যারা গেমিং করেন বা কম্পিউটার প্রযুক্তির সাথে বেশ সম্পৃক্ত, তাদের কাছে শব্দগুলো আরো পরিচিত।

কিন্তু কি এই মাইনিং আর কারা এই মাইনার?
কি তাদের কাজ?

অনেকেই হয়তো জানেন আবার অনেকেই জানেন না।

মাইনিং ও মাইনার বুঝতে হলে প্রথম আপনাকে ক্রিপ্টোকারেন্সির, ব্লক ও ব্লকচেইন বা চেইন অফ ব্লক বুঝতে হবে।

ক্রিপ্টোকারেন্সি মূলত এনক্রিপ্টেড কারেন্সি বা সহজ ভাষায় লেনদেনের এমন একধরণের ডিজিটাল মুদ্রা, যার এনক্রিপশন বা প্রোগ্রাম এমনভাবে করা হয় যে এই মুদ্রার লেনদেনের প্রেরক আর প্রাপক কাউকেই ট্রেস করা সম্ভব না। অর্থাৎ গোটা এনক্রিপশনটা হয় ডিসেন্ট্রালাইসড বা কোনো ব্যাংক ব্যবস্থার অধীনের বাইরে। সোজা ভাষায় অবৈধ লেনদেনও বলতে পারেন! যদিও ইসরাইল সহ কিছু দেশে এটা বৈধ।


এই ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে যখন কোনো লেনদেন হয়, তখন সেই ট্রাঞ্জেকশন ডেটা টা একটা ৬৪ বিটের/ডিজিটের হেক্সাডেসিমাল এনক্রিপ্টেড ব্লক হিসেবে একপ্রান্ত থেকে ডিজিটাল পাবলিক লেজার (Ledger) এ আপলোড করা হয়। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার পরে গিয়ে সেটা মূল কারেন্সির যে চক্র বা চেইন আছে তাতে যুক্ত হয়। আর এই চেইনই হচ্ছে চেইন অফ ব্লক বা ব্লক চেইন।

প্রতিটা ব্লক পাবলিক লেজারে শেয়ারের পরপরই সেটার এনক্রিপশন হিসেব করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন লোক এক সেকেন্ডও কালবিলম্ব না করে উঠে পড়ে লাগে। এই ব্লকগুলোর ট্রাঞ্জেকশন ঠিকঠাকমত হচ্ছে কিনা, সঠিক জায়গায়, সঠিক প্রক্রিয়ায় হচ্ছে কিনা এইসব নিশ্চিত করার কাজে তারা তখন লেগে পড়ে। এর বিনিময়ে প্রতিটা সফল লেনদেনের পারশ্রমিকস্বরুপ তারা ৬.২ বিটকয়েন বা সমতুল্য কিছু পেয়ে থাকে। ডলার বাজারে বর্তমানে যার মূল্য প্রায় এক লাখ চৌত্রিশ হাজার ডলার!
লেনদেনের মান নিশ্চিত করার এই প্রক্রিয়াকেই মাইনিং বলা হয়।
আর যারা এই কাজ সম্পন্ন করে থাকে, তারাই হচ্ছে তথাকথিত মাইনার।
আর এই কাজ করতে গিয়ে প্রচুর পরিমাণ কম্পিউটিং ক্ষমতার প্রয়োজন পড়ে।
এই প্রচুর পরিমাণ কম্পিউটিং ক্ষমতা কতোটা জানেন?

Digiconomist’s Bitcoin Energy Consumption Index এর মতে স্রেফ একটা বিটকয়েন মাইনিং করতে লাগে ১৪৪৯ বা প্রায় সাড়ে চৌদ্দশ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ!
সোজা কথায় সাড়ে চৌদ্দশ ইউনিট বিদ্যুৎ।
যেখানে আমাদের দেশে গড়পড়তা একেকটা পরিবারের মাসিক বিদ্যুৎ খরচ ২০০-৩০০ ইউনিট!

এইযে বিদ্যুতের এই বিশাল ব্যবহার, এই ব্যবহার একটা দেশের উৎপাদিত বিদ্যুতে, এমনকি প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর প্রচুর প্রভাব ফেলে।
শুধুই কি তাই!
এই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ শক্তি যে সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়, সে সিস্টেমে গোটা ব্যাপারটাকে হিসেব বা মাইনিং করতে লাগে কয়েক ডজন থেকে কয়েকশ, এমনকি কয়েক হাজার গ্রাফিক্স কার্ড। অথচ এই গ্রাফিক্স কার্ডগুলো বানানো হয় গেম খেলা, ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস, থ্রিডি মডেলিং/ রেন্ডারিং, প্রোডাকশন হাউসের ব্যবহারের কাজে।

ফলস্বরুপ, মাইনারদের জন্য সৃষ্ট এহেন সংকটে ভুগতে হয়েছে গেমার থেকে শুরু করে স্ট্রিমার, অ্যানিমেটর, থ্রিডি আর্টিস্ট সহ কার্ডের সাথে সম্পৃক্ত স্বাভাবিক লাইনআপের প্রত্যেকটা মানুষকে। কার্ডের বেড়ে যাওয়া আকাশচুম্বী মূল্য চুকাতে হয়েছে তাদেরকে।

অথচ এতকিছুর পরেও কিন্তু মাইনিংয়ে বিনিয়োগ করে লাভ হবে না লোকসান, তা চরম অনিশ্চিত। কেননা সারাবিশ্বে এখন যে প্রায় ১৮০০ রকমের ক্রিপ্টোকারেন্সি আছে, সেসবের প্রত্যেকটারই একটা পরিমাণের সীমা আছে। অর্থাৎ প্রত্যেকটার মাইনিংয়েরই একটা শেষ আছে। তার উপর এই মাইনিংয়ের জন্য বানানো সিস্টেমও এতো বেশি ব্যয়বহুল, যে সে খরচ দিয়ে একটা ভালরকমের প্রোডাকশন হাউসও দিয়ে দেয়া সম্ভব! এতকিছুর পরেও লাভ লোকসানের হিসেবে দোদূল্যতা থেকেই যায়।
অথচ মাইনারদের এই লাভ লোকসানের অনিশ্চয়তার খেলায় কিন্তু অনেকটাই বলির পাঠা হতে হয়েছে সাধারণ জিপিইউ ক্রেতাদের।

আগামী দিনগুলোর জন্য বিশ্বের বড়বড় টেক জায়ান্টরা চেষ্টা চালাচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সি আর মাইনিংকে পুরোদস্তুর বৈধতা দেয়ার। এর প্রভাব কতখানি সুদূরপ্রসারী হবে, কতোটাই বা ভাল আর কতোটা খারাপ হবে, এখন সেটাই দেখার বিষয়।

অসংখ্য ধন্যবাদ পোস্ট টা মনযোগ সহকারে পড়ার জন্য। আজকের টপিকস এ এখানেই বিদায় নিচ্ছি, ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর হ্যাঁ নিয়মিত Trickbd ভিজিট করতে ভুলবেন না কিন্তু।