মুখের ব্রন দুর করার কিছু সহজ উপায় তুলে ধরা
হলো।
আমাদের অনেকের জীবনকেই অতিষ্ঠ করে
ফেলেছে ব্রন নামের এই অনাকাঙ্খিত শব্দটা।
বিশেষ করে বয়ঃসন্ধির সময়টাতে এটা আমাদের
খুব ভোগায়।চলুন তাহলে আজ দেখে নেয়া যাক এই
ব্রনের সমস্যা সমাধানের কিছু উপায় সম্পর্কে।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা :
মুখে ব্রণ থাকুক আর না থাকুক দিনে অন্তত
দুইবার মুখ পরিষ্কার করা উচিত। এতে মৃত কোষ ও
অতিরিক্ত তেল পরিষ্কার হয়ে যায়। হাল্কা গরম
পানি ও মাইল্ড ফেসওয়াশের সাহায্যে মুখ ধুয়ে
নিতে পারে কিশোর-কিশোরীরা। মুখে
অতিরিক্ত সুগন্ধীযুক্ত ও ক্ষারযুক্ত সাবান
ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এতে ত্বক শুষ্ক
হয়ে যেতে পারে।
নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার :
সাধারণত যে ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করা হয়
তার অধিকাংশই আমাদের ত্বক শুষ্ক করে
ফেলে। এই শুষ্কতা কমানোর জন্য নিয়মিত
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। বাজারে
তৈলাক্ত, শুষ্ক ও মিশ্র ত্বকের জন্য আলাদা
আলাদা ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায়। ত্বক
অনুযায়ী সেখান থেকে ময়েশ্চারাইজার বেছে
নিয়ে ব্যবহার করতে হবে।
সাজসজ্জার পরিমান :
ত্বকে ব্রণ থাকলে সাজসজ্জা যত কম ব্যবহার
করা যায় ততই ভালো। ফাউন্ডেশন, পাউডার ও
ব্লাশন কম ব্যবহার করা উচিত। আর যদি ব্যবহার
করতেই হয় তাহলে অবশ্যই দিনের শেষে তা
ভালোভাবে তুলে ফেলতে হবে। যদি সম্ভব হয়
তবে তেল, রঙ ও রাসায়নিক উপাদান মুক্ত
প্রসাধনী ব্যবহার করুন। তাই প্রসাধনী কেনার
আগে অবশ্যই পণ্যের গায়ের লেবেল ভালোভাবে
চুলের যত্নে সতর্কতা :
মাথার চুলে সুগন্ধি তেল, পমেড বা জেল লাগান
ঠিক নয়। কারণ এইসব উপাদান যদি কোনোভাবে
মুখে লাগে তবে তা অনেক সময় লোমকূপ বন্ধ করে
দিতে পারে, যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। তৈলাক্ত
চুল থেকে তেল অনেক সময় মুখে লাগে যার
কারণে ব্রণ হতে পারে। তাই চুল পরিষ্কার রাখা
প্রয়োজন। আর যদি লম্বা চুলের অধিকারী হন
তবে সবসময় মুখের ওপর থেকে চুল সরিয়ে রাখুন।
মুখে হাত নয় :
যতটা সম্ভব মুখে হাত কম লাগানোর অভ্যাস
করতে হবে। কারণ আমাদের হাতে নানান রকম
ময়লা ও জীবাণু থাকে। এই হাত মুখে লাগানোর
সঙ্গে সঙ্গে মুখের ত্বক জীবাণুর মাধ্যমে
আক্রান্ত হয়। ফলে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পেয়ে
ব্রণের সৃষ্টি হয়। মুখে ব্রণ হলে কখনো তা হাত
দিয়ে ফাটান উচিত না। এতে ইনফেকশন হওয়ার
সম্ভবনা বেড়ে যায়।
এড়িয়ে চলি রোদ :
সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।
এর কারণে ত্বক পুড়ে যেতে পারে ও লালচে ভাব
হতে পারে। তীব্র সূর্য রশ্মির ফলে ত্বকে
অতিরিক্ত ব্রণ হয়। সাধারণত সকাল ১০টা থেকে
দুপুর ২টা পর্যন্ত রোদের তাপ থেকে দূরে থাকা
ভালো। এক্ষেত্রে বড় হাতার পোশাক, ছাতা বা
টুপি ব্যবহার করা যেতে পারে। অন্যদিকে, ব্রণ
থাকুক আর না থাকুক নিয়মিত এসপিএফ ৩০ বা এর
বেশি মাত্রার সানস্ক্রিন ব্যবহার করা
প্রয়োজন। সানস্ক্রিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাইরে
যাওয়ার অন্তত পক্ষে ২০ মিনিট আগে তা
লাগাতে হবে।
খাবার খাই বুঝেশুনে :
অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ মনে করেন, কিছু কিছু
খাদ্য আছে যা ত্বকে ব্রণ হওয়া থেকে রক্ষা
করে। এর মধ্যে চকোলেট অন্যতম। অন্যদিকে,
তেল–চর্বি সমৃদ্ধ খাবার বা জাঙ্কফুড ত্বকে
ব্রণের সৃষ্টি করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য
খাবার রাখা উচিত।
সুস্থ দেহ :
ব্যয়াম করা শুধু শরীরের পক্ষেই ভালো নয়,
ত্বকের জন্যেও ভালো। নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনে
সুস্থ থাকবে আপনার শরীর। সুস্থ থাকবে ত্বক।
তবে শরীরচর্চার ক্ষেত্রে অল্প কাপড় পরুন এবং
যন্ত্রপাতি কম ব্যবহার করুন। এইগুলোর সঙ্গে
ত্বকের ঘর্ষণে জ্বালাপোড়া হতে পারে। ব্যয়াম
করার পর ভালোভাবে গোসল করুন।
ফুরফুরে মন :
অতিরিক্ত মানসিক চাপ, হতাশা ও দুশ্চিন্তা
ব্রণের জন্ম দেয়। তাই যতটা সম্ভব মনে
প্রফুল্লতা রাখা ভালো। অনর্থক মন খারাপ করে
থাকা নয়, সদা প্রফুল্ল থাকা কিশোর-
কিশোরীকে দিবে ব্রণমুক্ত ত্বক।।
হাতের নাগালে চিকিৎসা :
কোনোভাবেই যখন কিশোর-কিশোরীরে বাগে
আনতে পারছে না ব্রণকে তখন স্মরণাপন্ন হতে
পারেন ডাক্তারের। বাজারে নানান রকমের
ব্রণ কমানোর ওষুধ পাওয়া যায়। তবে যে কোনো
ওষুধ ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া
উচিত। এই ধরনের ওষুধে রয়েছে বেঞ্জয়েল
পারক্সাইড, স্যালিসাইক্লিক এসিড,
গ্লাইকোলিক এসিড ও ল্যাক্টিক এসিড যা
ত্বকের ব্রণ কমাতে সাহায্য করে।