কোনো ব্যাটারি ছাড়াই ‘চলবে’ ফোন। ভাবছেন দাম কত হতে পারে? সে চিন্তাটি না করলেও চলবে। কারণ মডেলভেদে ফোনটির দাম মাত্র পাঁচ থেকে দশ ডলারের মধ্যে। দাম স্বল্প, ব্যাটারি ছাড়াই চলবে, তাহলে নিশ্চয় ফোনটিতে কোনো ঘাটতি রয়েছে, মনে এমন সন্দেহ জাগাটা অস্বাভাবিক নয়।
মজার বিষয় হল, সন্দেহটি সঠিক। ‘নোফোন’ নামের ওই ফোনে নেই কোনো ক্যামেরা, গান শোনার সুযোগ এমনকি প্রচলিত ফোনে যা যা রয়েছে তার কিছুই নেই এতে। এটি একটি প্লাস্টিকের টুকরো মাত্র যা শুধু গ্রাহকের মন থেকে স্মার্টফোনের অভাব দূর করার জন্যই তৈরি করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট।
তবে ফোন না হলেও, ফোনের মতো করেই বিক্রি করা হয় ‘নোফোন’। আগ্রহীদের জন্য রয়েছে ‘নোফোন’-এর তিনটি মডেল। সম্পূর্ণ ফিচার ছাড়া অর্থাৎ শুধু ফোন আকৃতির যে প্লাস্টিকের টুকরো মডেলটি রয়েছে, সেটির নাম দেওয়া হয়েছে নোফোন জিরো, মূল্য পাঁচ ডলার।
এরপরেই রয়েছে দ্বিতীয় মডেল যার মূল্য দশ ডলার, গ্রাহকের মনকে স্বান্তনা দেওয়ার জন্য এতে ভুয়া বাটন এবং পোর্ট রাখা হয়েছে। আর যদি এতেও গ্রাহকের মনে স্বস্তি না আসে, তাহলে তিনি ফিচারসমৃদ্ধ মডেল ‘নোফোন সেলফি’ কিনতে পারেন। কারণ ওই ফোনটিতে স্ক্রিনের স্থানে রয়েছে কালো কাঁচ এবং ভুয়া বাটন ও পোর্ট।
তিনটি ফোনের ক্ষেত্রেই গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে যে এগুলো কোনো প্রকারের কাজই করবে না। পৃথিবীর আর কোনো গ্যারান্টি কাজ করুক আর নাই করুক, এই গ্যারান্টি যে কাজ করবে সে বিষয়ে সিনেট নিঃসন্দেহ বলেই মন্তব্য করেছে।
অন্যদিকে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে, তাদের ফোনটি হচ্ছে মানবপ্রজাতির তৈরি সবচেয়ে স্বল্পোন্নত ফোন। তবে ফোন কাজ না করলেও গ্রাহকের ব্যাপারে ‘নোফোন’ খুবই সতর্ক।
এখন পর্যন্ত নোফোন-এর মোট ৪০ হাজার ইউনিট বিক্রি হয়েছে বলেই জানিয়েছে সিনেট। ‘প্রযুক্তির এই যুগে এ ধরনের একটি ভুয়া ফোনের আসলেই খুব দরকার ছিল। কারণ পরিবারের সবাই একসঙ্গে কোথাও খেতে গেলেও, দেখা যায় সবাই সবার ফোনের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন।’
আর তাই হয়তো নোফোন-এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা গুড বলেছেন, “এটি অবশ্যই একটি কৌতুক, কিন্তু এই কৌতুকের পেছনে ভয়াবহ একটি সত্যি লুকিয়ে আছে।”
২০১৪ সালে এক কিকস্টার্টার তহবিলের মাধ্যমে ১৮ হাজার ডলার তহবিল সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ‘নোফোন’।
ঠাট্টার ছলে গুড অবশ্য মার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপল-কেও একচোট নিয়েছেন। “আমি ঠিক নিশ্চিত নই যে আমরা পরবর্তী অ্যাপল হতে পারব কিনা। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভুয়া ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানতো আমরাই।”