আস্ সালামু আলাইকুম।
“জুম্মা মোবারক”
সকলে কেমন আছেন নিশ্চয়ই ভালো
উপরের টাইটেল নিশ্চয়ই দেখেছেন হ্যা এমনটাই হতে যাচ্ছে।
সূত্রঃ প্রথম আলো
মাশরাফির সঙ্গে কথা বললে নতুন তথ্য
পাওয়া যাবেই। জীবন, শৈশব-কৈশোর
এবং আরও অনেক কিছু সম্পর্কে। কাল
যেমন জানা গেল, ১০ বছর বয়সে তিনি
একবার তিনতলা থেকে পড়ে
গিয়েছিলেন। তবে তেমন কিছুই হয়নি,
শুধু
পিঠের হাড় ভেঙেছিল, ‘পড়ার পরও
আমার
মাথাটা সোজা হয়ে ছিল। পেছনে
ছিল
পাথর। মাথা যদি পাথরে গিয়ে
ঠেকত,
কী হতো অবস্থা ভাবুন!’ শেখ আবু
নাসের
স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে ফিরে গেলেন
দুরন্ত কৈশোরে।
মাশরাফির স্মৃতিবিভ্রম না ঘটে
থাকলে
১০ বছর বয়সের ওই ঘটনা থেকেই
হয়তো
তাঁর ‘আয়রনম্যান’ হওয়ার শুরু। এরপরও
তো
অঘটন কম ঘটেনি! কখনো গাছ থেকে
পড়েন, কখনো সিঁড়ি কিংবা রিকশা
থেকে, বলে পা পিছলেও
হাসপাতালে
গেছেন। হাঁটু কাটাকুটির কথা বাদ
দিয়ে
শুধু এগুলোর তালিকা করেও দেখা
যাচ্ছে
মাশরাফির জীবন কী ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ!
তারপরও এখনো মেরুদণ্ড সোজা
করে বল
হাতে ছোটেন। ‘আয়রনম্যান’ই তো!
তো সেই লৌহমানব আজ থেকে নতুন
একটা পরীক্ষায় নামতে যাচ্ছেন।
বলতে
পারেন শেষ পরীক্ষা। না, জিম্বাবুয়ে
সিরিজেই তাঁর সব শেষ হয়ে যাচ্ছে
না।
তবে খেলোয়াড়ি জীবনের একটা
পর্বের
শেষের শুরু তো হচ্ছেই।
২০১৯ বিশ্বকাপের সময় বয়স হবে প্রায়
৩৫
বছর। মাশরাফির খেলোয়াড়ি জীবন
সেই
পর্যন্ত যাওয়ার সম্ভাবনা এখনই নাকচ
করে দিলে পরে বোকা বনে যেতে
হতে
পারে। পারবেন না পারবেন না করেও
তো অনেকগুলো বছর ভালোভাবেই
পারলেন। তবে ক্যারিয়ারজুড়েই যে
রকম
চোটাঘাতে ভুগেছেন, এখন থেকে
তিন
বছর পর বিশ্বকাপ খেলার মতো
ফিটনেস
টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর মাঝে
আরেকটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
পেলেও মাশরাফির তাতেও খেলার
সম্ভাবনা নেই। ২০ ওভারের
ক্রিকেটকে
বিদায় জানাবেন এই বিশ্বকাপে
খেলেই।
ঘোষণাটা আসতে পারে বিশ্বকাপের
আগে, কিংবা পরপরই। ভারতের এই
টুর্নামেন্টটাই তখন হয়ে যাবে
মাশরাফির
ক্যারিয়ারের শেষ বড় আসর।
খুলনায় আজ শুরু চার ম্যাচের
জিম্বাবুয়ে
সিরিজ বাংলাদেশ দলকে ভাসাবে
টি-
টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভেলায়।
মাঝে
এশিয়া কাপ আছে। নাটক-সিনেমার
নায়কদের মতো চড়াই-উতরাই
পেরিয়ে
এগিয়েছে যাঁর ক্যারিয়ার, তাঁর টি-
টোয়েন্টির শেষ পর্বটাকে নাটকীয়
করতেই কিনা এবার এই টুর্নামেন্টটাও
হবে ২০ ওভারের ম্যাচের।
বাংলাদেশের
ক্রিকেটে মাশরাফির নাম সোনার
হরফেই লেখা থাকবে। মালা গেঁথে
পর পর
তিনটি টি-টোয়েন্টির আসর আরও বড়
প্রাপ্তির হাতছানি নিয়ে আসছে
সামনে।
ওয়ানডের মতো এই তিন টি-
টোয়েন্টি
টুর্নামেন্টেও যদি বাংলাদেশের
বাঘের
চেহারাটা ফুটিয়ে তুলতে পারেন, তখন
তো ‘ম্যাশ’ নামক মহামানবের কীর্তি
ধরে রাখতে একটা আলাদা জাদুঘরই
বানাতে হবে।
মাশরাফির নিজের জন্যও
ক্যারিয়ারের
এই পর্বটা বেশ রোমাঞ্চকর হওয়ার
কথা।
সারা জীবন বলেছেন ‘টি-টোয়েন্টি
কোনো ক্রিকেটই না।’ কাল
সিরিজ-পূর্ব
সংবাদ সম্মেলনেও সেই বিশ্বাসটাই
পুনর্ব্যক্ত করলেন, ‘টেস্টের বিকল্প
আসলে
কিছুই নয়।’ অথচ এই মাশরাফিই এখন
পর্যন্ত
হওয়া তিন বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন
দলের
অধিনায়ক! নিজে যে খেলাটা পছন্দ
করেন না, কোন জাদুবলে, কোন
মহামন্ত্রে সেখানেও উজ্জীবিত করে
তোলেন ১১টি প্রাণ? টি-
টোয়েন্টিতে
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্জন
বলতে
কিছুই নেই। কিন্তু মাশরাফি এখনো
আছেন বলেই সেখানেও সোনালি
স্বপ্ন
দেখা যায়। ওয়ানডে দলকে আমূল
বদলে
দেওয়া অধিনায়ক কেন টি-
টোয়েন্টির
তুঙ্গে
তুলে দিতে পারবেন না? ওয়ানডের
মতো
বিশ্ব টি-টোয়েন্টির মানচিত্রেও
বাংলাদেশের নাম কেন জ্বলজ্বল
করবে
না তাঁর সময়েই!
না, মাশরাফি এখনই প্রত্যাশার সীমা
অতটা বাড়াচ্ছেন না। বিশ্বকাপ নিয়ে
তাঁর মধ্যে বাড়তি আবেগও নেই। এ আর
নতুন কী! চোট এবং দুর্ভাগ্যের ফেরে
দেশের মাটিতে ২০১১ বিশ্বকাপে
খেলতে
না পারার পর থেকেই ‘বিশ্বকাপ’
শব্দটার
আলাদা মাহাত্ম্য নেই মাশরাফির
কাছে।
কিন্তু এটাই যদি হয়ে যায়
ক্যারিয়ারের
শেষ বড় আসর, তা-ও কি তাঁকে
আবেগাক্রান্ত করবে না? কাল
সন্ধ্যায়
পরিবারকে রূপসা সেতু দেখাতে নিয়ে
যাওয়া মাশরাফি প্রশ্নটা শুনে
থামলেন।
মুঠোফোনে স্বর এরপর একটু ভারী,
‘আসলে কোথায় শেষ হবে নিজেও
জানি
না। তবে এটুকু বুঝি, হঠাৎ করেই শেষ
হয়ে
যাবে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই
দেখবেন আমি আর খেলছি না। আমার
সবকিছু এ রকম হঠাৎ করেই হয়।’
কথাটা মুখে বললেন বটে, কিন্তু মনের
মধ্যে ক্যারিয়ারের দিগন্তটাকে
সোনালি রেখায় ফুটিয়ে তোলার
আকাঙ্ক্ষা কি নেই? নিজের জন্য না
হোক, বাংলাদেশের ক্রিকেটের
জন্য
হলেও ‘শেষ’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে
হবে
মাশরাফিকে। যে পরীক্ষার শুরু তাঁর
নিজের মাঠে, আজ থেকেই।
অধিনায়ক মাশরাফি
ওয়ানডে
ম্যাচ ২৮
জয় ২০
হার ৮
সাফল্য (%) ৭১.৪২
টি-টোয়েন্টি
ম্যাচ ৭
জয় ২
হার ৫
সাফল্য (%) ২৮.৫৭
সৌজন্যঃ
ট্রিক প্রিয় ডট কম