যতটা ঘটে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ঠিক ততটা রটে না ড্রোন হামলা বা ল্যাবিয়া সার্জারির মতো ঘটনাগুলো। আর এ ধরনের ঘটনা নিয়ে কেউ ফেইসবুকে পোস্ট দিতে গেলে, অনেক সময় তাদের ব্লকও করে দেওয়া হয়।
ব্লক করার কারণ দর্শিয়ে পাঠানো নোটিফিকেশনে বলা হয়, “আপনি যে কনটেন্টটি শেয়ার করতে চাচ্ছেন, তাতে এমন লিঙ্ক রয়েছে যা আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অনিরাপদ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।”
কিন্তু এই কনটেন্টগুলোতে কী এমন থাকে? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চেষ্টা চালাচ্ছে অলাভজনক একটি সংস্থা অনলাইনসেন্সরশিপ ডটঅর্গ। প্রতিষ্ঠানটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা জিলিয়ান ইয়র্ক বলেন, “আমরা সিদ্ধান্তে নিয়েছি যে, আরও স্বচ্ছতা আনতে আমাদের নিজেদেরই ডেটা সংগ্রহ করা প্রয়োজন।”
২০১৫ নভেম্বরে চালু হওয়া সাইটটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর সেন্সরশিপ নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্যে বানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন। জার্মানির বার্লিনে বসবাসরত আমেরিকান ইয়র্ক আর পশ্চিম তীরের রামজি জাবের এই সাইট চালু করেন।
ফেইসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, গুগল প্লাস, ইউটিউব আর ফ্লিকার- এই ছয়টি সামাজিক মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের যেসব পোস্ট সেন্সরশিপের আওতায় ব্লক বা রিমুভ করে দেওয়া হয়, সেগুলো সম্পর্কে অনলাইনসেন্সরশিপ ডটঅর্গে পোস্টের স্ক্রিনশটসহ অভিযোগ দাখিল করতে পারেন ব্যবহারকারীরা। আর এই অভিযোগ দাখিলের কার্যক্রম তারা করতে পারছেন সম্পূর্ণভাবে পরিচয় গোপন রেখে, শুধু বয়স আর কেন তারা মনে করছেন যা তার কনটেন্ট সেন্সর করা হয়েছে তা উল্লেখ করলেই চলবে।
নভেম্বর থেকে সাইটটিতে ২শ’রও বেশি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। আর অধিকাংশ অভিযোগই এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
প্রথা অনুসারে, ফেইসবুক নগ্নতা, ঘৃণা বা বিদ্বেষ ছড়ায় এমন উক্তি বা ছবি সরিয়ে ফেলে। সেই সঙ্গে সম্প্রতি ব্যাক্তিগত পর্যায়ে অস্ত্র বা মাদক কেনাবেচাও নিষিদ্ধ করেছে এই সোশাল জায়ান্ট। কিন্তু স্পেনের বুলফাইটিং বা ফরাসি ব্যাঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি হেবদো-এর সমালোচনা করে করা কোনো পোস্ট কী সরানো হবে? হ্যাঁ, সাইটটিতে পাওয়া অভিযোগ মতে এমন কনটেন্টও সরানো হয়েছে।
এ তো গেল ফেইসবুকের কথা। একজন নারী বিছানায় শুয়ে আছেন, আর তার পায়জামা ঋতুস্রাবের কারণে ভিজে যাচ্ছে, এমন একটি ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন কনি রুপি কর। কিন্তু সরিয়ে ফেলা হয়েছে ছবিটি।
এ বিষয়ে ফেইসবুক এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।
ব্যবহারকারীদের কোনো পোস্ট যখন সরিয়ে ফেলা হচ্ছে বা ব্লক করে দেওয়া হচ্ছে, তখন অধিকাংশ সময়ই সরানোর কারণ হিসেবে যৎসামান্য ব্যাখ্যা বের করা যায়। উপরের ছবিটি সরানোর কারণ খুঁজতে গিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়, ঋতুস্রাব কি অনুপুযুক্ত?
বিশ্বব্যাপী ছয়জন লোকের চালানো এই সাইটটি এমন সব কারণ খুঁজে বের করবে বলে আশা করা হচ্ছে।