অসংখ্য মানুষ অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন। আর সবাইকে সাবধান করেছেন বিশেষজ্ঞরা। অ্যান্ড্রয়েড ফোনে টেক্সট মেসেজ আকারে ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটি মেসেজ পড়তে দিচ্ছেন না। এমনটি স্মার্টফোনের বারোটা বাজিয়ে দেবে। এই মারাত্মক হুমতি অনেকটা মাল্টিমিডিয়া মেসেজের লিঙ্ক আকারে আসছে। এতে ক্লিক করলে ডাউনলোড হচ্ছে ‘মাজার’ নামের ম্যালওয়্যার। এটা মোবাইলে এসে ফোনের সঙ্গে অজ্ঞাতনামা সব ইন্টারনেট সংযোগ সৃষ্টি করে। আর যেসব স্থানে সংযোগ করছে তারা মোবাইলের নিয়ন্ত্রক হয়ে যাচ্ছেন। ফলে নিয়ন্ত্রকরা আপনার টেক্সট মেসেজ পড়তে পারবেন। ফোনের ব্যবহারে নজরদারি করবেন এবং ফোনও করতে পারবনে। এমনকি গোটা ফোন পুরোপুরি অচল করে দেওয়ার ক্ষমতাও পেয়ে যাবনে তারা। ডেনিশ ইন্টারনেট সিকিউরিটি ফার্ম হেইমডাল সিকিউরিটি জানায়, ইতিমধ্যে কেবলমাত্র ডেনমার্কেই এসব মেসেজ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ স্মার্টফোন। তবে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এটি কিভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তা এখনো পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি। আবার যেসব ফোনের ভাষা রাশিয়ান, সেসব মোবাইলে ম্যালওয়্যারটি ডাউনলোড হচ্ছে না। এতে করে এর নির্মাতাদের সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা করে নেওয়া যায়। আবার যেসব ফোনের ডিফল্ট সেটিং হিসাবে ‘প্রিভেন্ট সফটওয়্যার ফ্রম আনট্রাস্টেড সোর্সেস’ ঠিক করা আছে, সেসব ফোনেই এটি ডাউনলোড হচ্ছে। হেইমডাল সিকিউরিটির বিশেষজ্ঞ আন্দ্রা জাহারিয়া জানান, বিশেষ এই ম্যালওয়্যারটি যাবতীয় অঘটনের দ্বার খুলে দেয় স্মার্টফোনে ডাউনলোড হওয়ার পর। আক্রমণকারীরা মোবাইলের আক্রমণের জন্যে আলাদা পথ খুলে নিতে পারেন অনায়াসেই। যত্রতত্র মেসেজ পাঠিয়ে বা কল করে ব্যবহারকারীর বিল অনেক বাড়িয়ে দিতে পারেন তারা। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে কোনো ব্যাংক থেকে পাঠানো অথেনটিকেশন নম্বর পর্যন্ত চলে যাচ্ছে আক্রমণকারীদের হাতে। মাজার-এর মাধ্যমে আক্রান্তের মোবাইল এবং ওয়েব নির্ভর যাবতীয় ক্ষেত্রে পুরো নিয়ন্ত্রণ পাচ্ছে আক্রমণকারীরা। এমনকি এসব তথ্য গোটা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিতে পারেন তারা। সেই সঙ্গে ফোনের সেটিংও চলে যাচ্ছে তাদের হাতে। জাহারিয়া আরো জানান, এই প্রথমবারের মতো এত কার্যকর ম্যালওয়্যার দেখা গেলো যা অ্যান্ড্রয়েডে ছড়িয়ে পড়েছে। সম্ভবত আক্রমণকারীরা এটাকে পরীক্ষামূলকভাবে ছেড়েছেন। এর কার্যকারিতা দেখছেন এবং এতে আরো কৌশল যোগ করতে চাইছেন। এটা প্লে স্টোর ছাড়া অন্য উৎস থেকে অ্যাপ ইনস্টল করতেও উৎসাহ দিচ্ছে। মোবাইল সিরিকিউরিটি প্রতিষ্ঠান প্রুফপয়েন্ট-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেভিড জিভানস জানান, এটাকে রাশিয়ান ম্যালওয়্যার বলেই মনে হয়। এর কন্ট্রোল প্যানেলটা এমন যে, তা ঐতিহাসিকভাবেই অনলাইন ব্যাংকিং সংশ্লিষ্ট সাইবার অপরাধীরা ব্যবহার করে থাকেন। কাজেই বিশ্বের সব স্থানের অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের সাবধান থাকতে হবে টেক্সট মেসেজের ব্যাপারে।
সূত্র : ডেইলি মেইল