ধু মৌখিক সমর্থন জানিয়ে নয়, আদালতেও অ্যাপলের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে এফবিআইয়ের বিরুদ্ধে লড়তে সহযোগিতা করবে গুগল। বিষয়টি সম্পর্কে ওয়েব জায়ান্ট খ্যাত এই প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কোনো ঘোষণা দেয়নি, তবে এর সঙ্গে জড়িত এক সূত্র গুগলের এই পদক্ষেপ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন।
ওই সূত্রের বরাতে জানা গেছে, গুগল আগামী সপ্তাহ নাগাদ অ্যাপলের পক্ষে আদালতে ‘ফ্রেন্ডস অফ কোর্ট’ নথি দাখিল করার পরিকল্পনা করছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি এক মার্কিন আদালত অ্যাপলকে নির্দেশ দিয়েছিল, সান বার্নার্ডিনো হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা সৈয়দ রিজোয়ান ফারুকের আইফোন ৫সি আনলক করে এফবিআই-কে তদন্তে সহযোগিতা করার। এ বিষয়ে কোনো আপত্তি থাকলে তা জানানোর জন্যও পাঁচদিন সময় দেওয়া হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটিকে।
এই অচলাবন্থার মূল সমস্যা হল, এফবিআই আবদার করে বসেছে কেবল ওই একটি ফোন নয়, সকল আইফোনের জন্যই যখন-তখন আনলকের একটি ‘পথ’ বানিয়ে দিতে হবে অ্যাপলকে। যদিও এফবিআই বলছে, এই তদন্তের জন্য কেবল একবারই ব্যবহার করা হবে ওই সুবিধা।
অ্যাপল অবশ্য ফেব্রুয়ারির ১৭ তারিখেই জানিয়ে দিয়েছিল, তারা এই কাজ করবে না। গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে লেখা এক চিঠিতে টিম কুক জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার অ্যাপলকে নিজ গ্রাহকের ডেটা হ্যাক করতে বলছে। এতে করে অ্যাপলের গ্রাহক নিরাপত্তা প্রক্রিয়ায় একটি ব্যাকডোর তৈরি হবে, পরবর্তীতে যেটির সুযোগ চাইলে চীন-রাশিয়া-ইরানসহ যে কোনো দেশের হ্যাকাররা গ্রহন করতে পারবে।
নিজ নথিতে অ্যাপল আদালতকে ইতোমধ্যেই জানিয়েছে, “সরকারের এই অনুরোধ প্রতিষ্ঠানটির উপর বাজে রকমের চাপ সৃষ্টি করছে এবং মার্কিন সংবিধানে বাকস্বাধীনতার মূল নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।” এ ছাড়াও আদালতকে প্রতিষ্ঠানটির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আদালত নিজ সীমারেখা লংঘন করছে, কারণ কংগ্রেস এরকম আইন প্রত্যাখান করে দিয়েছে, যেখানে সরকারের কথা মেনে প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন কাজ করে দেওয়ার প্রস্তাবনা ছিল, যা এই মামলার ক্ষেত্রে অ্যাপলকে করতে বলা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে অ্যাপলের ভাষ্য ছিল, “এ ধরনের কোনো আইন নেই এবং এটি মার্কিন সংবিধান বিরোধী।”
এর জবাবে আবার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৭৮৯ সালের অল রাইটস অ্যাক্ট (All Writs Act)-অনুযায়ী সরকারকে সহযোগিতায় বিচারকদের এরকম নির্দেশ দেওয়ার অধিকার রয়েছে। এমনকি ওই আইনের বদৌলতে নির্দেশ মানতে অ্যাপলকে বাধ্যও করাতে পারবে বিচারক এমনটাই জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ।