রক্তের চাপ নির্ণয়ের বর্তমান পদ্ধতিটি
যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য হলেও এটি খুব
বেশি দ্রুত নয়। আরেকটি দুর্বলতা হলো,
এই যন্ত্র দিয়ে রক্তচাপের পরিমাণ
নিরবচ্ছিন্নভাবে পাওয়া যায় না। নতুন
প্রযুক্তি উদ্যোগ (স্টার্টআপ) ‘ব্লুমিও’
এবার নতুন এক উপায়ে রক্তচাপ
পরিমাপের চেষ্টা করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিষ্ঠানটি এমন যন্ত্র
তৈরি করছে, যা হাতের ওপর চাপ না
দিয়ে সহজে কম সময়ে নির্ভুল এবং
নিরবচ্ছিন্নভাবে রক্তচাপ মেপে
দেবে। এ যন্ত্রে রাডারের মতো
প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। যা বিদ্যুৎ
চৌম্বকীয় তরঙ্গের মাধ্যমে রক্তের
চাপ পর্যবেক্ষণ করবে।
ব্লুমিওর সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান
নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাথেরিন
লিয়াও জানিয়েছেন,
প্রাথমিকভাবে বাহুবন্ধনীর আকারে
এটি বানানোর চেষ্টা চলছে, যা
হৃৎপিণ্ডের সমান উচ্চতায় হাতের
ওপরের অংশে পরা যাবে। ২০১৭
বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করার
আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি। এর দাম ২০০
থেকে ৪০০ ডলারের মধ্যে থাকতে
পারে। উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদ্রোগের
রোগীদের মধ্যে যাঁরা
নিরবচ্ছিন্নভাবে রক্তচাপের পরিমাপ
জানতে চান, তাঁদের মধ্যে পণ্যটি
ব্যাপক সাড়া ফেলবে বলে আশা করছে
এই প্রতিষ্ঠান।
যদি সত্যিই নিখুঁতভাবে এমন এক যন্ত্র
উদ্ভাবনে সক্ষম হয় প্রতিষ্ঠানটি,
তাহলে এটা হবে জীব-
পদার্থবিজ্ঞানের জগতে বড় এক
অগ্রগতি। ব্লুমিও এমন এক সেন্সর তৈরি
করছে, যা রক্তচাপের গতিপথ বের
করতে পারবে। লিয়াও জানান, এই
যন্ত্রে দুটি রাডার অ্যানটেনা ব্যবহার
করা হবে। এগুলোর কাজ হবে প্রতিটি
হৃৎস্পন্দনের (হার্টবিট) চাপ-তরঙ্গ
লিপিবদ্ধ করা এবং দুটি অ্যানটেনার
মধ্যবর্তী দূরত্বে তরঙ্গের গতি
বিবেচনায় এনে রক্তচাপকে
বীজগাণিতিক আকারে রূপ দেওয়া।
এরপর রক্তচাপের পরিমাপ এবং
হৃৎস্পন্দনের তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে
তৎক্ষণাৎ চলে যাবে আইফোনের পর্দায়।
ব্যবহারকারীর রক্তের চাপের একটা
প্রাথমিক ধারণা নিয়ে নেবে। এরপর
মাঝেমধ্যে এটি ব্যবহার করে
রক্তচাপের পরিবর্তনটা দেখা যাবে।
তবে যন্ত্রটি তৈরির কাজ এখনো
প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের
খাদ্য এবং ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) থেকে
দ্বিতীয় শ্রেণির চিকিৎসা যন্ত্রের
স্বীকৃতি চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট
অব টেকনোলজির গবেষক রিচ ফ্লেচার
জানিয়েছেন, এই প্রযুক্তির সাহায্যে
সর্বোচ্চ নিখুঁত মান পাওয়া না গেলেও
রাডার ব্যবহার করে রক্তচাপ নির্ণয়ের
দরকারি যন্ত্র তৈরি করা খুবই সম্ভব।
সূত্র: এমআইটি টেকনোলজি রিভিউ