Lie detector machine এর কথা টিভি,নেটফ্লিক্স এ হয়তো দেখে থাকবেন। কখনো ভেবে দেখেছেন এটি কিভাবে কাজ করে?
বর্তমানে ক্রাইম সিরিজ,মুভি, নেটফ্লিক্স,কোর্ট ড্রামা এর বদৌলতে অনেকেই হয়তো lie detective machine এর ব্যবহার দেখেছেন।মূলত এটি কিভাবে কাজ করে এটি খুবই সহজভাবে কিভাবে আপনাদের বোঝানো যায় সেটি নিয়েই আজকের পোস্ট।
lie detective machine এর কাজ কি? এটি মূলত সাবজেক্ট বা যার উপর টেস্ট করা হয় তার শারীরবৃত্তীয় যেসব পরিবর্তন মিথ্যা বলার ফলে তৈরি হয় তার মেজারমেন্ট বা পরিমাপ করে থাকে। এই মেশিন আবিস্কৃত হয় 1921 সালে। এই মেশিনের উদ্ভাবক William Moulton Marston
এই মেশিন একটি কম্বাইনড সিগন্যাল নিয়ে সত্য মিথ্যা যাচাই করে থাকে।
এটি যদি সহজভাবে বলা হয় তাহলে ৮ টি মেইন জিনিস বা পার্ট নিয়ে একটি Lie detective machine হয়ে থাকে।
•pneumograph
•cardio seismograph
•Electrodermal sensor
•Activity sensor pad
•Thermal camera
•Polygraph machine
আমি খুব বেশি ডিটেইলসএ যাবোনা। এইগুলার প্রাইমারি বা প্রধান কাজ কি সেগুলো নিয়েই আলোচনা করবো।
Galvanograph
এটি আঙ্গুলের ডগায় স্থাপন করা হয়। কারন আমাদের শরীরের যে ঘাম নির্গত হয় তা আঙুলর ডগা দিয়ে সবচেয়ে সহজভাবে নির্গত হতে পারে।যখন কেউ অপরাধ করে থাকে বা মিথ্যা বলে তার মধ্যে সাধারনত স্ট্রেসড বা দুশ্চিন্তা দেখা যায়। কারন এটি হিউম্যান সাইকোলজি। আর এই স্ট্রেস এর ফলে শরীরে যে ঘাম নির্গত হয় তা শনাক্ত করাই এই মেশিনের প্রধান কাজ।এই মেশিন ঘামের সংস্পর্শে আসলে পলিগ্রাফ মেশিনে সংকেত পাঠায়।
Pneumograph
এটি বুকের সাথে লাগানো থাকে।এটি মূলত হৃদস্পন্দনের পরিমাপ করে। যখনই কেউ মিথ্যা বলে তার হৃদস্পন্দন এর গতি হঠাৎ বৃদ্ধি পায় বা কমে যায়। এই হার্টবিটের উঠানামাই এই মেশিন রেকর্ড করে থাকে।
Electrodermal sensor
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মেশিন। এটি সাধারনত বাম হাতের তালুতে লাগানো থাকে। এটি শরীরের Gsr পরিমাপ করে।এটি শরীরে খুবই নগন্য লো ভোল্টের বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে। মিথ্যা বলার ফলে স্ট্রেস তৈরী হয় এবং এর ফলে শরীরের ঘাম তৈরি হয়। এই ঘামের কারনে সাসপেক্টের শরীরে ইলেক্ট্রিক পরিবাহীতার কোন পরিবর্তন হয় কিনা সেটিই এটা পরিমাপ করে থাকে।
cardio seismograph
শরীরের ব্লাড প্রেসার মাপার মেশিন যেমন এটিও ঠিক এমনই।তবে এটি মাপে রক্তের শীরার ভাইব্রেশন। রক্ত যখন শিরা দিয়ে চলাচল করে তখন ভাইব্রেশন তৈরী হয়।এটির মেজারমেন্ট বা পরিমাপ করাই এই ডিভাইসের কাজ।এটি অনেকটা রক্তচাপ পরিমাপের মেশিনের মতো বাহুতে খুবই টাইটভাবে আটকে থাকে যাতে ভাইব্রেশন রেকর্ড করা যায়।
Activity sensor pad
এটির কাজ কি? এটি শরীরের মাসলের মুভমেন্ট এর রেকর্ড করে থাকে। সাধারনত চারটি সেন্সর প্যাড ব্যবহার করা হয় প্রতিটা Lie test এ।দুই পায়ে এবং হাতের কনুইয়ের কাছে এগুলো স্থাপন করা হয়। শরীরের মাসলের পরিমাপ করে এটি সিগন্যাল রেকর্ড করে। যখন কেউ মিথ্যা বলে তার যধ্যে অস্থিরতা দেখা দিলে তা বডি ল্যাংগুয়েজে প্রকাশ পায়। কারো হাত-পা কাঁপলে এই মেশিনে সিটি ধরা পড়ে।
Thermal Camera
এটি শরীরের তাপমাত্রা রেকর্ড করে। খেয়াল করে দেখুন যখন আপনার স্ট্রেসড মনে হয় তখন শরীরের তাপমাত্রারও পরিবর্তন ঘটে। থার্মাল ক্যামেরায় যখন শরীরের তাপমাত্রা পরিবর্তন হয় তখন সেটি ডিটেক্ট করতে পারে।একই সাথে পুরো ইন্টরভিউ ও এটিতে রেকর্ড করা হয়।
Polygraph machine
এটি মূলত উপরের উল্লিখিত ডিভাইসগুলো থেকে যেসব সিগন্যাল গ্রহন করে সেটি গ্রাফে প্রকাশ করে। এটি সাধারনত মনিটরের সাথে কানেক্ট করা লাগে। এটি মেশিন সিগন্যাল থেকে হিউম্যান রিডেবল(human readable ) গ্রাফ তৈরি করে রেজাল্ট দেয়। সকল কিছুর রিডিং এই মেশিন দ্বারাই প্রসেসড হয়।
Lie detective test এর সময় সাধারনত ৩ প্রকার প্রশ্ন করা হয় controlled, relevant, comparison. এগুলো কি?
প্রথমে সাধারনত মেশিনের অ্যাকুরেসির জন্য করা হয়। এখানে সাধারনত যেগুলোর উত্তর সত্যি সেগুলো মেশিন লাগানো অবস্থায় টেস্ট করা হয়। অতপর ধীরে ধীরে ক্রাইম রিলেটেড প্রশ্ন শুরু করা হয়। সাসপেক্ট যখন মিথ্যা কথা বলে তখন সেটি এই মেশিনের সাহায্যে ধরা পড়ে। এভাবে সত্যি উদঘাটন হয়।
Lie detector কতটুকু অ্যাকুরেট?
প্রথমত lie detector মেশিন কখনোই নির্দিষ্ট করে বলে দিতে পারে না সাসপেক্ট মিথা কথাই বলছে। কারন দুনিয়ার এমন কিছু আবিস্কার হয়নি যেটা মানুষের মাইন্ড পড়তে পারে। এটি বরং ভিন্নভাবে কাজ করে।
মিথ্যা বলার ফলে শরীরের symptom দেখা দেয়। সেগুলো পরিমাপ করাই lie detector মেশিনের কাজ। এখন এই মেশিন সঠিকভাবে পরিমাপ করতে পারে কিনা এ নিয়ে দুনিয়াজুড়ে বিতর্ক আছে।
প্রথমত মানুষের নার্ভ সিস্টেম এক না। নির্দোষ কাউকে যদি সাসপেক্ট করে এই টেস্ট করা হয় তাহলে খুব স্বাভাবিক সে স্ট্রেসড থাকবে। এর ফলে শরীরেরর অভ্যন্তরীন পরিবর্তন হয়। যেটি lie detective machine এর ফলাফল অন্যদিকে ডাইভার্ট করে দিতে পারে। আবার এটিও সত্যি অনেক কেসেই lie detector machine দ্বারা অপরাধী শনাক্ত করা গেছে। কিন্তু যেহেতু এটি একটি মেশিন এবং শুধুমাত্র শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের উপর lie test করে থাকে তাই এটি নিয়ে ভিন্নমত আছে পৃথিবী জুড়েই …
আজ এই পর্যন্তই। আজকে খুবই সংক্ষেপে lie detector টেস্ট এর আলোচনা করলাম যাতে আপনারা অল্প সময়েই বিষয়টি বুঝতে পারেন। আজ এই পর্যন্তই।খোদা হাফেজ।