স্মার্টফোন আমাদের অবাক করে
দিচ্ছে। চমৎকার সব প্রযুক্তি,
শক্তিশালী সব হার্ডওয়্যার, যেন
ধীরে ধীরে বিশাল আকারের
সেই সুপারকম্পিউটার আমাদের
হাতের মুঠোয় ভরে দিচ্ছে কেউ!
কিন্তু একটু ভেবে দেখুন, এই প্রযুক্তি
কিন্তু একদিনে আসেনি। এই
প্রযুক্তিগুলোর পেছনে রয়েছে
আগের সেই ক্ল্যাসিক বা বার
ফোনগুলো যেগুলোর ডিসপ্লেও
ছিল সাদা-কালো ১২৮ বাই ১২৮
পিক্সেলের! তবে যতই সাধারণ
হোক না কেন, সেই
স্মার্টফোনগুলোই কিন্তু তখন
ফোনের রাজ্যে রাজত্ব করে
গিয়েছে, ঠিক এখন যেমন
গ্যালাক্সি এস৬ এজ, ওয়ান প্লাস টু
ডিভাইসগুলো করছে! তাই আমার
মনে হলো কেন না সর্বকালের
সেরা কিছু ফোনের তালিকা করা
যাক! তাই করে ফেললাম।
চলুন, আমার করা তালিকাটি
আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
Nokia 3310
যখন প্রসঙ্গ আসে সর্বকালের
সর্বশ্রেষ্ঠ মোবাইলের তালিকা
তখন সম্ভবত নকিয়ার নকিয়া ৩৩১০
মোবাইলটির ধারে কাছেও অন্য
কোন মোবাইল ঘেষতে পারবেনা।
এই ফোনটি এতই জনপ্রিয় ছিল যে
বর্তমান প্রজন্মেরও প্রায় সবাই এই
মডেলগুলো কোথাও না কোথাও
দেখেছে। আর প্রশ্ন করলে হয়তো
আমাদের পরিবারের সদস্যদের
স্মৃতির পাতাতেই পাওয়া যাবে
এই ফোনগুলোকে। সেসময় এই ফোনটি
এবং এই মডেলটির ঠিক আগের
মডেলটি (নকিয়া ৩২১০) খুবই
জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। বলতে
গেলে এই ফোনগুলোই নকিয়াকে
এগিয়ে দিয়েছিল সবচাইতে
বেশি।
এই মোবাইলটিই সর্বপ্রথম নকিয়ার
এক্সপ্রেস অন কভার এবং আইকনিক
গেম ‘স্নেক’ নিয়ে এসেছিল।
পাশাপাশি ইটের মত শক্তিশালী
বিল্ড কোয়ালিটি এবং চমৎকার
ব্যাটারি লাইফ খুব দ্রুতই তখনকার
প্রযুক্তির দুনিয়ায় ফোনটিকে এক
অঘোষিত রাজার সম্মান দিয়েছিল
বৈ কি।
Motorola RAZR V3
নকিয়ার তৈরি নকিয়া ৩৩১০ এর পর
আমি আমার তালিকায় রাখতে
চাই মটোরোলার তৈরি রজার ভি৩
ফোনটিকে। এই ফোনটির পূর্বে
স্লিম ফোনের কনসেপ্ট সে সময়
অনেকটা এলিয়েনের মতই অদ্ভুত
কিছু ছিল। এমনকি ৩২১০ এবং ৩৩১০
কে এই ফোনটির সাথে তুলনা করলে
এই আল্ট্রা স্লিম ডিভাইসটির
কাছে সেই ফোনগুলোকে
সত্যিকার অর্থেই যেন মনে হতো
ইটের মত!
ডিজাইনটি এতই জনপ্রিয়তা
পেয়েছিল যে মটোরলা
প্রতিষ্ঠানটি বেশ কিছু সময় ধরে এই
ফোনটি তৈরি করেছিল। ফোনটি
যে শুধু আল্ট্রা-স্লিমই ছিল তাই
কিন্তু নয়, এটি ছিল একটি ফ্লিপ
ফোন যা ব্যবহারকারীদের মন খুব
ফোনটির কারণে তখন মটোরোলার
প্রতিদ্বন্দ্বীদের ফোনের নতুন
ডিজাইন নিয়ে বেশ মাথা
ঘামাতে হয়েছিল বলেই জানা
যায়।
Nokia N95
একটা সময় ছিল যখন নকিয়া,
মটোরলা এবং রিম (বর্তমানে
ব্ল্যাকবেরি) প্রতিষ্ঠানগুলো
ফোনের দুনিয়ায় তুমুল ব্যবসা
করেছে। স্মার্টফোনের ধারণাটা
তখনও খুব একটা স্পষ্ট ছিলনা। তবে
মজার বিষয় হচ্ছে, নকিয়ার এন৯৫
ডিভাইসটির মাধ্যমেই বলা চলে
‘ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনের’ ধারা
প্রচলিত হয়েছিল।
নকিয়ার এন৯৫ ডিভাইসটিই
মোবাইলের জগতে চমৎকার
ক্যামেরার সূচনা ঘটিয়েছিল বলা
চলে। চমৎকার ক্যামেরা,
শক্তিশালী ওএস, অনেক ধরণের
কাস্টমাইজেশন অপশন, ডিসেন্ট লুক –
সব মিলিয়ে সে সময়ের ডিভাইসের
রাজা বলে আখ্যায়িত করলেও কি
খুব বেশি ভুল হয়ে যাবে?
Apple iPhone 3G
সর্বকালের সেরা ফোনগুলোর
তালিকায় আইফোনকে না রাখলে
তালিকাটি পূর্ণ হতেই পারেনা।
অ্যাপলের আইফোন ৩জি
স্মার্টফোনটির মাধ্যমেই আমরা
পরিচিত হয়েছিলাম প্রথম টাচ-
ফ্রেন্ডলি অপারেটিং
সিস্টেমের সাথে। এছাড়াও সেই
আইফোন ৩জি আমাদের পরিচয়
করিয়ে দিয়েছিল চমৎকার সব
ফিচারের সাথে যে ফিচারগুলো
কোন না কোনভাবে বর্তমানের
আইফোনের জনপ্রিয়তার পেছনে
কাজ করে আসছে।
T-Mobile G1
আইওএস এর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা
করতেই তখন বাজারে এসেছিল
অ্যান্ড্রয়েড-পাওয়ার্ড ডিভাইস
টি-মোবাইল জি১। টি-মোবাইল
জি১ স্মার্টফোনটি তৈরি
করেছিল তাইওয়ানের
ম্যানুফ্যাকচারার প্রতিষ্ঠান
এইচটিসি। প্রথম এই অ্যান্ড্রয়েড
স্মার্টফোনটিই অ্যান্ড্রয়েডের
দুনিয়ার আদি পিতা – এমনটাই সব
মেনে থাকেন। আর অ্যান্ড্রয়েড যে
বর্তমানে স্মার্টফোন রাজ্যের
অধিপতি সেটা নিশ্চয়ই আর নতুন
করে জানাতে হবেনা আপনাকে।
Samsung Galaxy Note
স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট
ডিভাইসটির জনপ্রিয়তার পেছনে
অনেকগুলো কারণ কাজ করে থাকে।
তবে, ফ্যাবলেটের দুনিয়ায় প্রথম
ডিভাইস – এই কারণটিই সম্ভবত এই
ডিভাইসটির জনপ্রিয়তার মূল কারণ।
বর্তমানে আপনি খেয়াল করলেই
দেখবেন যে বড় স্ক্রিনের
ডিভাইসগুলো এখন বেশ জনপ্রিয়তা
পাচ্ছে কেননা এতে বিভিন্ন রকম
কাজ খুব সহজেই করা যায়। আর
স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট
ডিভাইসটিতেও ছিল বড় এবং
চমৎকার ডিসপ্লে ইউনিট।
এছাড়াও, স্মার্টফোনটির ব্যাটারি
ব্যাক আপ ছিল বেশ ভালো।
ব্যবহারকারীদের মাঝে খুব সহজেই
জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এই
স্মার্টফোনটি।
Samsung Galaxy S II
অনেকেই মনে করে থাকেন আজকের
স্মার্টফোন জায়ান্ট স্যামসাং এর
থাকে দুটি ডিভাইস, একটি হচ্ছে
স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট এবং
অন্যটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২।
এস২ ডিভাইসটির পূর্বে প্রযুক্তি
বাজারে আমরা পেয়েছিলাম
এইচটিসি ডিজায়ার এর মত চমৎকার
ডিভাইস কিন্তু গ্যালাক্সি এস২
ডিভাইসটি ছিল এইচটিসি
ডিজায়ারের চাইতেও স্লিম,
শক্তিশালী।
Motorola Moto G
স্যামসাং যখন একের পর এক হাই-এন্ড
স্মার্টফোন এবং ফ্ল্যাগশিপ
ডিভাইসের পেছনে ব্যস্ত তখন
মটোরলা লো-এন্ড ব্যবহারকারীদের
দিকে নজর দিয়েছিল। এবং এরই
ফলশ্রুতিতে RAZR V3 মডেলটির পর
সেই একই দাপটে প্রযুক্তির বাজারে
হামলা করেছিল নতুন এই মটো জি
ডিভাইসটিকে সঙ্গী করে।
চমৎকার ডিজাইন, প্রায় স্টক
অ্যান্ড্রয়েড প্লাটফর্ম, শক্তিশালী
হার্ডওয়্যার এবং ডিসেন্ট
পারফর্মেন্স – এক কথায় লো-এন্ডের
ফোন হিসেবে ব্যবহারকারীদের
পছন্দের তালিকায় এখনো রয়েছে
মটো জি স্মার্টফোনটি। আর এরই
ধারাবাহিকতায় প্রথম এই মটি জি
স্মার্টফোনটির বিভিন্ন ভার্সনের
দেখা পেয়েছি আমরা। এমনকি এ
বছরেও মটো জি’র নতুন একটি চমৎকার
সংস্করণ বের হয়েছে যা
ব্যবহারকারীদের কাছে বেশ সুনাম
এবং জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম
হয়েছে।
Samsung Galaxy Note 4
নতুন প্রজন্মের ডিভাইসগুলোর মধ্যে
অন্যতম একটি ডিভাইস যা সত্যিকার
অর্থেই গ্যালাক্সি নোটের
মর্যাদা রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে।
গ্যালাক্সি নোট ৪ ডিভাইসটি
একটি শক্তিশালী ডিভাইস যাতে
একজন ব্যবহারকারী খুব সহজেই ল্যাগ
ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড এক্সপেরিয়েন্স
করতে সক্ষম হবেন।
এছাড়াও অন্যান্য ডিভাইসের
সাথে তুলনা করলে দেখা যায়
ডিভাইসটির ক্যামেরা অনেক
ভালো ছবি তুলতে সক্ষম। ক্যামেরা
ইউনিটটিকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য
স্যামসাং এতে যুক্ত করেছে
অপটিক্যাল ইমেজ
স্ট্যাবিলাইজেশন সুবিধাও।
Samsung Galaxy S6 Edge
স্যামসাং যেন একের পর এক
স্মার্টফোন বিশ্বকে তাক
লাগিয়ে দিচ্ছে। গ্যালাক্সি এস৫
ডিভাইসটি বাজারের আনার পর খুব
একটা সফলতা না পাওয়ায় গত প্রায়
১৮ মাস ধরে কোরিয়ান এই
ম্যানুফ্যাকচারার প্রতিষ্ঠানটি
কিছুটা খারাপ সময়ই কাটিয়েছে।
কিন্তু এরপর স্যামসাং গ্যালাক্সি
এস৬ এবং এস৬ এজ প্লাস
ডিভাইসগুলো দিয়ে আবার
প্রতিষ্ঠানটি ফিরে এসেছে
তাদের মূল রুপে।