আপনার করা ই-মেইলের রেকর্ড থেকে যাবে, বহু বছর পরও তা নিয়ে আপনি বিপদে পড়তে পারেন। তাই ভাষার বিষয়ে সচেতন থাকুন। ছবিটি প্রতীকী। আগে মানুষ কত সুন্দর করে গুছিয়ে চিঠি লিখত। এখন চিঠির বদলে চলে এসেছে ই-মেইল, চ্যাটিং। মানুষ এখন নানা কাজে ই-মেইল ব্যবহার করছে। কেউ মেইল করছেন ব্যবসার কাজে, কেউ করছেন যোগাযোগের জন্য। তবে মেইল যে উদ্দেশ্যেই লেখা হোক না কেন, মেইলের কিছু আদবকেতা জানা জরুরি। মেইল লেখার সময়ে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি দরকার। তা না হলে প্রেরক সম্পর্কে একটা বাজে ধারণা তৈরি হতে পারে।
ই-মেইলে কী লেখা উচিত আর কী উচিত নয়, সে সম্পর্কে জেনে নিন:
জরুরি বা ‘আর্জেন্ট’ কথাটা না লেখা:
ই-মেইলে সচরাচর জরুরি কথাটা না লেখা ভালো। মিথ্যাবাদী রাখালের গল্পটা নিশ্চয় জানেন। জরুরি মেইলের নামে যদি আজেবাজে মেইল পাঠানো হতে থাকে, তবে সত্যিকারের জরুরি মেইলের সময় প্রাপক তাঁর গুরুত্ব না-ও দিতে পারেন।
‘সাবজেক্ট’ প্রাসঙ্গিক করুন:
ই- মেইলের ‘সাবজেক্ট’ বা বিষয় লেখার সময় আপনি ভাবুন যে আপনার বার্তার একটা ‘শিরোনাম’ দিচ্ছেন। বিষয় দেখেই যেন প্রাপক মেইলটি খুলে পড়তে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বিশেষত প্রাপকের সঙ্গে সম্পর্ক যদি এমন না হয় যে প্রেরকের নাম দেখেই সে চিঠি পড়বে, তাহলে তো ‘সাবজেক্ট’ আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ‘সাবজেক্ট’ না লেখাটা একটা মারাত্মক ভুল। কেননা বিষয় লেখা নেই এমন মেইলগুলো স্পাম-ফিল্টারে আটকে স্পাম বক্সে চলে যেতে পারে। আর ‘ইম্পর্ট্যান্ট’ বা ‘হাই ইটস মি!’ ধরনের কিছু লেখা মানে স্পাম হিসেবে গণ্য হওয়ার ব্যবস্থা প্রায় নিশ্চিত করা।
ভাষা ব্যবহারে সচেতন হোন:
ক্যাপসলক চেপে না লেখা: ই-মেইল লেখার সময় ক্যাপসলক চেপে বা সব অক্ষর বড় করে না লেখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। হঠাৎ সব বড় হাতের অক্ষরে লেখা মেইল দেখে ভড়কে যেতে পারেন প্রাপক। এ ছাড়া মেইল পড়তে গিয়ে বিরক্ত হতে পারেন। সচরাচর আশ্চর্যবোধক চিহ্ন না ব্যবহার করাও ভালো।
উদ্দেশ্যহীন মেইল পাঠাবেন না: মনে রাখবেন, ই-মেইল হচ্ছে যোগাযোগের একটি মাধ্যম বা সেবা। এটা হুটহাট করে উদ্দেশ্যহীনভাবে কাউকে পাঠানো ঠিক নয়। যদি কোনো গ্রুপ মেইল পান, তবে এর জবাব দেওয়ার সময় ‘রিপ্লে অল’ দিচ্ছেন কি না তা খেয়াল রাখুন। এলোমেলো উদ্দেশ্যহীন লেখাটি সবার গ্রহণের জন্য উপযোগী হবে কি না ভাবুন।
পরচর্চা করবেন না:
মেইলের সিসি দেওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন থাকুন। একজনের কথা লিখে অন্যজনকে সিসি করলে তা বিরক্তির কারণ হতে পারে। অনেকেই চান না, তাঁর অনুমতি ছাড়া অন্যর বিষয়ের মেইলে তিনি সিসিতে থাকুন।
বিসিসি দেওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা:
অনেকেই মেইল পাঠানোর সময় বিসিসি দেন। ‘সিসি’ বা ‘কার্বন কপি’ পাঠানো হলে প্রাপকদের সবাই দেখবেন যে আর কে কে এই চিঠি পাচ্ছেন। আর ‘বিসিসি’ বা ‘ব্লাইন্ড কার্বন কপি’ পাঠানো হলে কেউই দেখবে না যে আর কাকে এই চিঠি পাঠানো হলো। কিন্তু ‘বিসিসি’ ব্যবহার যত কম করা যায়, ততই ভালো। বিবিসিতে মানুষের মধ্যে অবিশ্বস্ততা ও গোপনীয়তার বিষয়টি ফুটিয়ে তোলে। মেইল করার ক্ষেত্রে পৃথকভাবে পাঠানো ভালো।
ভোররাতে মেইল পাঠাবেন না:
ভোরের দিকে মেইল পাঠালে অনেকেই বিরক্ত হন। মেইল প্রেরক সম্পর্কে একটা বাজে ধারণা তৈরি হয়। অনেকেই ভাবতে পারেন, প্রেরক রাত জেগে কাজ করেন কিংবা ইন্টারনেট আসক্ত। যদি ভোরে কাজ করা লাগে, তবে মেইল লিখে পরে তা কাজের সময় পাঠানো ভালো।
একাধিক ব্যক্তিগত মেইল না পাঠানো:
একই বিষয়ের ওপর একাধিক ব্যক্তিগত মেইল না পাঠানো উচিত। অনেকেই মোবাইল ফোন থেকে মেইল পাঠাতে গিয়ে একই মেইল বারবার পাঠান যা পেশাদার আচরণের মধ্যে পড়ে না। যদি তড়িঘড়ির মধ্যে মেইল পাঠানো লাগে, তবে মেইলটি একঝলক হলেও দেখে নিন।
প্রথম প্রকাশ :: BDSelfi24.CoM