আসসালামু আলাইকুম।সবাইকে জানাই সবিনয় নিবেদন।Trickbd তে এইটা আমার প্রথম পোস্ট।বেশি কথা না বারিয়ে কাজে আসি।আজ আপনারা জানবেন স্মার্ট কার্ড সম্পরকে।
এ অবস্থার জন্য ফরাসি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অবার্থুর টেকনোলজিসকে (ওটি) দায়ী করছে ইসি। তাই প্রকল্পে গতি আনতে এবার দেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর ভরসা রাখতে চায় ইসি। গত জুনে ওটির সঙ্গে ইসির চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। এ কারণে আপাতত ফাঁকা স্মার্ট কার্ড (ব্ল্যাঙ্ক কার্ড) সরবরাহ ও প্রক্রিয়াকরণ বন্ধ রয়েছে।
অবশ্য ফরাসি প্রতিষ্ঠানটি আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত চুক্তি বাড়াতে চায়। এ জন্য তারা সরকারের উচ্চপর্যায়েও যোগাযোগ করছে। তবে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের একটি সূত্র জানায়, স্মার্ট কার্ড দেওয়ার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির মাধ্যমে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা হতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে একাধিক নমুনা কার্ডও ইসিকে সরবরাহ করেছে।
জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত তাদের সিদ্ধান্ত, ওটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ছে না। বিদেশি প্রতিষ্ঠানটি ব্যর্থ হয়েছে। এ অবস্থায় আর কোনো বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি না করে বাংলাদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইসি কাজ করাতে চায়। দেশি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি ইতিমধ্যে ইসিকে কিছু নমুনা দিয়েছে। তিনি বলেন, সবার হাতে স্মার্ট কার্ড পৌঁছাতে একটু সময় লাগবে। তবে কত দ্রুত সবার হাতে কার্ড পৌঁছানো যায়, তাঁরা সে চেষ্টা করছেন।
২০০৭ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির সময় অতিরিক্ত (বাই প্রোডাক্ট) হিসেবে কাগজে ছাপানো একটি পরিচয়পত্র দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু এই পরিচয়পত্রটি মেশিন রিডেবল নয়। স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্লাস্টিক কার্ডে তৈরি, যা মেশিন রিডেবল। এর সঙ্গে একটি চিপ আছে। এখানে ব্যক্তির বর্তমান জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা তথ্যের পাশাপাশি দশ আঙুলের ছাপ ও আইরিশের প্রতিচ্ছবি থাকবে।
ইসি সূত্র জানায়, জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে প্রকল্পটিতে শুরু থেকেই ছিল মন্থর গতি। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির জন্য বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ২০১১ সালে ইসির আইডেনটিফিকেশন সিস্টেম ফর ইন-হ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস প্রকল্পের (আইডিইএ) চুক্তি হয়। তবে কার্যত প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১২ সালের দিকে। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত। পরে বিশ্বব্যাংক এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পে অর্থায়নের চুক্তির মেয়াদ বাড়ায়। এরপর আর চুক্তি বাড়ানোর সম্ভাবনা নেই। বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন না করলে সরকারি খরচে স্মার্ট কার্ড বিতরণের কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
এই প্রকল্পের অধীনে স্মার্ট কার্ডের জন্য ফ্রান্সের অবার্থুর টেকনোলজিসের সঙ্গে ইসির ৮১৬ কোটি টাকার (১০২ কোটি ডলার) চুক্তি হয় ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে দেশের নয় কোটি স্মার্ট কার্ড পারসোনালাইজেশন করে উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তাতে ব্যর্থ হয়। পরে চুক্তির মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি উপজেলা পর্যায়ে মাত্র ১ কোটি ৯৮ লাখ (১২ দশমিক ২০ শতাংশ) কার্ড পৌঁছাতে পেরেছে।
ইসি সূত্র জানায়, এত দিন ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান ওটি ব্ল্যাঙ্ক কার্ড সরবরাহ করত। ঢাকায় আনার পর তাতে ব্যক্তির কিছু তথ্য ভর্তি করে পারসোনালাইজেশন করে উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো ছিল তাদের দায়িত্ব। গত জুন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের হাতে আমদানি করা ব্ল্যাঙ্ক কার্ড আছে ৬ কোটি ৬৩ লাখ ৬০ হাজার। কার্ড দরকার আরও প্রায় ২ কোটি ৩৬ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২৯ লাখ কার্ড আমদানির পথে আছে। ফাঁকা কার্ড আনার পর তাতে ব্যক্তির কিছু তথ্য ভর্তি করে পারসোনালাইজেশন করা হয়। আমদানি করা কার্ডের মধ্যে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কার্ড আছে ১ কোটি ২৪ লাখ ১০ হাজার। আর স্মার্ট কার্ড হাতে পেয়েছেন মাত্র ২ লাখ ৫৭ হাজার ভোটার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ইসির হাতে প্রায় ৭০ শতাংশ ফাঁকা কার্ড আছে। বাকি কার্ডগুলোর সংস্থান করে নিজস্ব জনবল ব্যবহার করে আগামী বছরের জুনের মধ্যে সবার হাতে স্মার্ট কার্ড দেওয়া সম্ভব হবে বলে তাঁরা আশা করছেন।
আইডিইএ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফ্রান্সের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওটি আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে। চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে তারা সরকারের উচ্চপর্যায়েও যোগাযোগ করছে।
আজ এই পর্যন্তই সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।ধন্নবাদ।