ইন্টারনেটের ব্যবহার এখন আর বিলাসিতা নয়। বরং জীবনের অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু ফেসবুকে ঢোকা নয়, ই-মেইল, ই-শপিংসহ নানা কাজের প্রাথমিক উপাদান হলো ইন্টারনেট। অনেকের অফিসের কাজের পুরোটাই হয় অন্তর্জালের ভার্চ্যুয়াল জগতে। হয়তো ২৪ ঘণ্টাই থাকতে হয় অনলাইনে। কিন্তু এই ইন্টারনেট ব্যবহারেরও কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম আছে। এগুলো মেনে না চললে পড়তে হয় বিপদে। আসুন জেনে নিই এমনই কিছু অভ্যাসের কথা, যা অনলাইনে বিপদে ফেলতে পারে আপনাকে—
১. অপরিচিত ই-মেইল এলেই কি খোলেন?
আমাদের ই-মেইল অ্যাকাউন্টে প্রতিদিন কত ধরনের মেইল আসে। কেউ কেউ আছেন, প্রেরক পরিচিত হোক বা অপরিচিত—নতুন মেইল এলেই ক্লিক করে ফেলেন। অনেক হ্যাকার এসব অপরিচিত ই-মেইলে পাঠান ম্যালওয়্যার বা র্যানসমওয়্যার। মূলত অ্যাটাচমেন্ট বা কোনো লিংকের মাধ্যমে মেইলে এসব ম্যালওয়্যার পাঠানো হয়। হুট করে মেইলে ক্লিক করলে এসব ম্যালওয়্যার আপনার কম্পিউটারে ইনস্টল হয়ে যেতে পারে। এতে করে আপনার লগইনের তথ্য থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত ও আর্থিক অনেক তথ্যও বেহাত হয়ে যেতে পারে। তাই অপরিচিত কোনো উৎস থেকে ই-মেইল এলে ক্লিকের আগে সতর্ক হোন। দেখুন এটি কোনো ব্যাংক বা আপনার পরিচিত কারও কাছ থেকে এসেছে কি না। কোনো অপরিচিত লিংকে ক্লিক করার বদলে ওই লিংকটি যে ওয়েবসাইট থেকে এসেছে, সেখানে চলে যাওয়া তুলনামূলকভাবে নিরাপদ।
২. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশি শেয়ার করেন?
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ করে ফেসবুকে শেয়ারের ক্ষেত্রে অনেকে নিজের জীবনের একটি ছোট্ট মুহূর্তও বাদ দেন না। এত বেশি বেশি শেয়ার কিন্তু ভালো না। এতে করে ইন্টারনেটে ওত পেতে থাকা চোরের দল আপনার ব্যক্তিগত তথ্যগুলো জেনে ফেলতে পারে। এরপর সেসব ব্যবহার করেই জেনে যাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থাকা আপনার অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড। ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার ঘটনা এখন আকসারই হচ্ছে। তাই সময় থাকতেই সাবধান হওয়া ভালো। প্রথমেই ইলেকট্রনিক ডিভাইসের লোকেশন শেয়ার বন্ধ রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, নিজের জন্মদিন বা জীবনের বিশেষ কোনো ঘটনার তারিখ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানানো থেকে বিরত থাকুন।
৩. ওয়াই-ফাই পেলেই কি খুশি?
অনেক কফিশপ বা দোকানে বিনা মূল্যে ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এ দেশে তো এখন গণপরিবহনেও ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। তবে ফ্রি হলেই সবকিছু যে ভালো হবে, তা কিন্তু নয়। নেটওয়ার্কে ঢুকতে পাসওয়ার্ড লাগুক বা না-ই লাগুক, এসব পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। কারণ এ ধরনের উন্মুক্ত নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা হ্যাকারদের পছন্দের জায়গা এবং তারা ইচ্ছে করলেই হ্যাক করে চোরা চোখে দেখতে পারে আপনার সব কাজ। যদি পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতেই হয়, তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢুকবেন না বা ব্যাংকিংয়ের কাজ করবেন না। এতে নিরাপদ থাকবে আপনার স্পর্শকাতর ব্যক্তিগত তথ্য।
৪. আগন্তুকদের বন্ধু বানান?
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুত্বের অনুরোধ এলেই কেউ কেউ অতি উৎসাহে গ্রহণ করেন তা। কিন্তু একটু বুঝেশুনে বন্ধু করাই ভালো। বাস্তব জীবনে কি এত সহজে কাউকে বন্ধু বানান আপনি? নিশ্চয়ই না। এবার সেই নীতি নিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। কারণ অনেক হ্যাকাররা বন্ধু হয়েই সর্বনাশ করতে পারে আপনার। কেউ আবার হয়রানি করেন মেসেজ দিয়ে। সুতরাং বন্ধুত্বের আহ্বানে সাড়া দিন দেখেশুনে।
৫. একই পাসওয়ার্ডে একাধিক অ্যাকাউন্ট?
ধরুন, আপনার ই-মেইলের অ্যাকাউন্ট আছে। আছে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, লিংকডইন আরও কত কি! যদি সবগুলো অ্যাকাউন্টে একই পাসওয়ার্ড থাকে, তবে তা বিপদের কারণ হতে পারে। হ্যাকাররা একটি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেই জেনে যাবে আপনার সব অ্যাকাউন্টের তথ্য। সুতরাং আলাদা আলাদা প্ল্যাটফর্মের জন্য লাগবে ভিন্ন ভিন্ন পাসওয়ার্ড। কয়েক মাস পরপর সেগুলো পরিবর্তনও করতে হবে। মনে রাখতে একটু কষ্ট হবে হয়তো। এতটুকু ত্যাগ তো স্বীকার করতেই হবে!
৬. সফটওয়্যার হালনাগাদ আছে তো?
কম্পিউটার ও স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম ও ব্যবহৃত বিভিন্ন সফটওয়্যার হালনাগাদ করা থাকতে হবে। সফটওয়্যারের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত এগুলো হালনাগাদ করে থাকে। সেগুলো ইনস্টল করা না হলে অনলাইনে অনিরাপদ হয়ে যেতে পারে কম্পিউটার বা স্মার্টফোন। সেই ফাঁকে হানা দিতে পারে ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার। সুতরাং আপডেট করুন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের সব সফটওয়্যার।
আমাদের সাইটে রেজিস্ট্রেশন করলে Admin করা হবে অফার সিমিত সময়ের জন্য।
গরিবের সাইটে একহলেও ভিজিট করবেন ধন্যবাদ