কেমন হবে যদি মোবাইলকে চার্জই করতে না হয়? যদি অসহ্যকর চার্জার কেবলের ভোগান্তি না পোহাতে হয়! এমনকি কোনো ব্যাটারিও দরকার না হয়!!
আরে নাহ, ব্যাটারিতো লাগবেই?
তবে এই পোস্ট কিসের জন্য? কেন লোভনীয় টাইটেল দিয়ে আপনাদের এখানে নিয়ে এলাম! শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন, ভাল লাগলে একটা লাইক দিবেন না হলে কমেন্ট বক্সে মতামত জানিয়ে যাবেন(গালি বাদে?)।
আসসালামু আলাইকুম; আশা করি সবাই ভাল আছেন। চলুন শুরু করা যাক আজকের পোস্টটি…..
আমরা অনেকেই প্রতিনিয়ত ওয়াইফাই ব্যবহার করে চলছি। যেদিকে তাকাই সেদিকে ওয়াইফাই। চারিদিকে ওয়াইফাইয়ের ছড়াছড়ি। কেমন হত যদি একেই ইলেক্ট্রিসিটিতে কনভার্ট করা যেত! তাহলে তো আমরা খুব সহজেই আমাদের ফোনসহ যেকোনো ডিভাইস চার্জ করতে পারতাম।
তো ওয়াইফাই দিয়ে কি ডিভাইস গুলোতে পাওয়ার দেয়া আদৌ সম্ভব?
হ্যা সম্ভব; এমনকি কিছু মানুষ দাবি করেছেন যে তারা ওয়াইফাই রাউটার থেকে ২০ ফিট দূরত্বে রেখে একটি ক্যামেরাতে পাওয়ার দিতে সক্ষম হয়েছেন! ক্যামেরাটি ওয়াইফাই সিগনালের মাধ্যমে একটি ক্যাপাসিটর চার্জ করত যা দ্বারা প্রতি ৩৫ মিনিটে একটি ফটো তোলার উপযোগী পাওয়ার উৎপন্ন করা সম্ভব ছিল। তো এর থেকে আমরা এটা বুঝতে পারলাম যে ওয়াইফাই সিগনালের দ্বারা ডিভাইসে পাওয়ার দেয়া সম্ভব।
এটা তো খুবই কম পাওয়ারের ডিভাইস কিন্তু এটা দিয়ে কি ফোন চার্জ করা সম্ভব?
এটা হয়তবা খুবই প্র্যাক্টিক্যাল হবে না কারণ একটা ফটো তোলার জন্য কেউ নিশ্চয় ৩৫ মিনিট অপেক্ষা করবেনা! কিন্তু প্রত্যেক জিনিসেরই একটা শুরু আছে। এন্ড্রয়েড কিন্তু শুরুর দিকে শুধুমাত্র ক্যামেরাতে ব্যবহার করা হত যা এখন আপনার আমার হাতে থাকা স্মার্টফোনগুলোতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু এটা জেনে রাখুন যে একটা ফটো তুলতে ৩৫ মিনিটে যতটুকু পাওয়ার উৎপন্ন করা হয়েছিল, আপনার ফোন চালাতে এর চেয়ে প্রায় দশলক্ষ গুন পাওয়ারের প্রয়োজন পড়বে!
এক্ষেত্রে দূরত্বের কি কোন প্রভাব রয়েছে?
অবশ্যই;
তবে কথা হল আমাদের ছোট্ট ফোন কেবল ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের কিছু অংশ কালেক্ট করতে পারবে। বেশি পাওয়ার কালেক্ট করতে হলে আমাদের ফোনের সাইজ বড় করতে হবে। ওই যে আজকাল ১৭০০-১৮০০ টাকায় বিশাল টর্চ+১০০০০mAh+বিশাল স্পিকারওয়ালা ফোনগুলো দেখতে পাওয়া যায়, অনেকটা সেগুলোর মত!
ওয়াইফাই যদি মোবাইল চার্জের জন্যে ব্যবহার করি তাহলে ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় কি কোনো সমস্যা হবে?
এটা হল আসল কথা। উওরটা হল, হ্যা অবশ্যই হতে পারে। একই সাথে ইলেক্ট্রিসিটি আর ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করলে এর বিপরীত প্রতিক্রিয়া হতেই পারে যার ফলে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
তাহলে কি ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে ডিভাইসে পাওয়ার দেয়া সম্ভভ নয় বলছেন?
সেটা আমি বলিনি ঠিকই কিন্তু ফোনের ক্ষেত্রে সেটি খুবই অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। এটি দিয়ে হয়তবা ছোট ছোট ডিভাইসগুলোতে পাওয়ার দেয়া সম্ভব কিন্তু ফোনগুলোতে পাওয়ার দেয়া সম্ভব নয়।
কিন্তু দুইটি উপায়ে ফোনেও পাওয়ার দেয়া সম্ভবঃ
১. উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ওয়াইফাই রাউটার যেটা দিয়ে শুধুমাত্র পাওয়ার সাপ্লাই করা হবে।
২. ফোনের পাওয়ারের চাহিদা ১০ লক্ষগুন কমিয়ে আনতে হবে। আর যদি এমনটা হয় তাহলে আপনি আপনার বর্তমান ব্যাটারি একবার কারেন্ট দিয়ে চার্জ করলে ১০ লক্ষ দিন চালাতে পারবেন!?
দাড়ান! নিকোলাস টেসলা তো ওয়ারলেস পাওয়ার আবিষ্কার করেছিলেন, তাই না!
হ্যা তিনি একধরনের পাওয়ার সিস্টেম আবিষ্কার করেছিলেন বটে যেগুলোতে কোন তারের(ওয়্যার) প্রয়োজন হবে না। আর তার আবিষ্কারের জন্য প্রয়োজন ছিল বড় বড় ট্রান্সমিটার। তাছাড়া তিনি তার আবিষ্কার সম্পন্ন করে যেতে পারেননি। আর তিনি ওয়াইফাই বা ওয়াইফাই দিয়ে পাওয়ার সাপ্লাই আবিষ্কার করেন নি তাই তার থিওরি এখানে দিয়ে লাভ নেই।
ওয়্যালেস চার্জার তাহলে কি? এটি কি একই রকম না?
এগুলোর মধ্যে অনেকটা মিল রয়েছে কিন্তু এরা সম্পূর্ণ আলাদা। ওয়্যারলেস চার্জারের প্যাডগুলো ম্যাগনেটিক ফিল্ড ব্যবহার করে চার্জ করে এবং ফোনগুলো কিন্তু এগুলোর সাথে একদম লেপ্টে থাকে।
পরিশেষে সকল পাঠকের উদ্দেশ্য বলি যে, বেশ অনেকদিন পর লিখলাম আর লেখাগুলোতে ভুল ত্রুটি থাকতেই পারে কারণ আমিও আপনাদের মতই মানুষ, দেবতা নই?। তো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং পড়বেন। আর অবশ্যই আপনাদের মতামত এবং কেমন লাগল তা কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না।
ফেসবুকে আমিঃ তাজুল ইসলাম
সর্বদা ট্রিকবিডির সাথেই থাকুন।