স্মার্টফোন হাতে পেতে কিশোর ও তরুণেরা যে কতটা মরিয়া হয়ে উঠছে সম্প্রতি এরই এক ভয়াবহ বাস্তবতার দেখা মিলেছে ভারতে। দেশটির উত্তর প্রদেশে শুধু একটা স্মার্টফোন আর যৎসামান্য বাড়তি অর্থের জন্য তিন কিশোর রক্ত বিক্রি করতে গিয়েছিল। মাত্র ৫০০ রুপিতে প্রতি ব্যাগ রক্ত বিক্রি করতে সম্মত হয়েছিল তারা। ৭ আগস্ট রক্ত বিক্রির সময় ভারতের উত্তর প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় তিনজনকে আটক ও ওই ব্লাড ব্যাংকটি বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন— রক্ত বিক্রি করতে যাওয়া ওই তিন কিশোরের এখনো রক্ত দেওয়ার বয়সই হয়নি।
রক্ত বিক্রি করতে যাওয়া কিশোরদের একজন বলেছে, সে একটা ফোন কেনার জন্য কিছুদিন ধরে টাকা জমা করছিল। এরই মধ্যে ওই ব্লাড ব্যাংকের এক এজেন্ট এসে তাকে রক্ত বিক্রি করলে টাকা পাবে এমন কথা বলে। সে আর এই লোভ সামলাতে পারেনি।
১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরটির বাবা চার বছর আগে মারা গেছেন। তার মা একটি ক্লিনিকে তিন হাজার টাকা বেতনে কাজ করেন। এ ছাড়া সে মাসে দুই হাজার টাকা বেতনে একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করে। পাঁচজনের পরিবার চালানোর জন্য যা যথেষ্ট নয়। স্মার্টফোন কেনার ইচ্ছা ছিল তার আর এর জন্য প্রয়োজন ছিল টাকার। ব্লাডব্যাংকের এজেন্টের টাকা হাতে পাওয়ার এমন প্রস্তাব শুনে লোভ সামলানো তার পক্ষে কঠিনই হয়ে পড়ে। কিশোরটি জানিয়েছে, ‘রক্ত দিলে কোনো শারীরিক দুর্বলতা তৈরি হবে না— এ বিষয়ে ক্লিনিকের এজেন্ট তাকে নিশ্চয়তা দিয়েছিল।’
ভারতে ১৮ বছর বয়স থেকে বৈধভাবে রক্ত দেওয়া যায় তবে এ ক্ষেত্রে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১৩ থাকতে হয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, ওই কিশোর সহ উদ্ধারকৃত তিনজনের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১২-এর নিচে ছিল।
স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে কিশোর ও তরুণদের মধ্যে মরিয়া হয়ে ওঠার লক্ষণ অবশ্য এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২০১২ সালে চীনের এক তরুণ আইফোন কেনার জন্য নিজের কিডনি বেচতে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবসায়ীদের ফাঁদে পা দিয়েছিল।