ঘরের কোথায় রাউটার রাখলে ওয়াই-ফাই সিগন্যাল ভালো পাবেন

এক সকালে ‘ইন্টারনেটের লোক’ এসে সংযোগ দিয়ে গেলেন।

ইন্টারনেটের নীল তার ওয়াই-ফাই রাউটারে যুক্ত করে বললেন, কোথায় রাখব? ‘রাখেন এক জায়গায়।’ পরের তিন বছর রান্নাঘরের তাকে তেল-লবণ-হলুদের সঙ্গে কাটিয়ে দিল সেই রাউটার।

এরপর গতি কম মনে হলে ইন্টারনেট সেবাদাতার সঙ্গে ফোনে হম্বিতম্বি করেছি, কম্পিউটার হাজারবার রিস্টার্ট দিয়েছি,

দেয়ালে মাথা পর্যন্ত ঠুকেছি, তবে রাউটার সরিয়ে জুতসই কোথাও রাখার কথা মাথায় আসেনি।

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারের বেলায় এখন সিংহভাগ বাসা বা অফিসে ওয়াই-ফাই রাউটার লাগানো হয়।

তবে ওই ইন্টারনেটের লোক এসে যেখানে লাগিয়ে দিয়ে যান, রাউটার সেখানেই থাকে।

ওয়াই-ফাই রাউটারে ইন্টারনেট গতি নির্ভর করে অনেক কিছুর ওপরে।

আমরা বলছি না রাউটারের অবস্থান ইন্টারনেটের গতির একমাত্র নির্ণায়ক। তবে গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই। বিশেষ করে বড় বাড়ির ক্ষেত্রে।

আজ চলুন সেই অবস্থান নিয়ে আমরা আলোচনা করি।

আগে রাউটার ঠিক করুন

রাজধানীর বেশির ভাগ অ্যাপার্টমেন্টের আকার ছোট, হাজার দেড়েক বর্গফুটের বেশ কম।

এই অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে একটি ওয়্যারলেস অ্যাকসেস পয়েন্টই যথেষ্ট।

মানে শুধু রাউটার হলেই হবে। তবে সেটা যদি অনেক পুরোনো মডেলের হয়, তবে হালনাগাদ করে নেওয়াই বরং ভালো।

সে ক্ষেত্রে ৮০২.১১এসি এবং ডুয়েল ব্যান্ড সমর্থিত কি না দেখে নিতে পারেন।

এতে কভারেজ নিয়ে তুলনামূলক কম ঝামেলায় পড়তে হবে।

তবে বাড়ি বড় হলে কিংবা এক রাউটারে একাধিক তলায় ইন্টারনেট সংযোগ দিতে চাইলে ‘মেশ নেটওয়ার্ক’ তৈরি করতে হবে।

অর্থাৎ রাউটার এক জায়গায় রেখে ওয়াইফাই এক্সটেন্ডার দিয়ে বাড়ির সব জায়গায় সংযোগ ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

বাড়ির কোনো কোনায় যদি সিগন্যাল না পৌঁছে, তবে সেখানে নতুন একটি এক্সটেন্ডার লাগিয়ে নিলেই হলো।

তবু মূল রাউটার কোথায় রাখবেন, সেটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

কোথায় রাখবেন রাউটার

বাড়িতে নতুন ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার সময় রাউটার সচরাচর যে পথে ইন্টারনেটের তার বাড়িতে ঢুকেছে, তার আশপাশে কোথাও রাখা হয়। এখানে বলে রাখা ভালো,

যিনি সংযোগ দিয়ে যান, সংযোগ দেওয়াই তাঁর কাজ। কোথায় রাউটার রাখলে আপনার কাজের সুবিধা হবে, তা আপনাকেই ভেবে ঠিক করতে হবে।

মাঝামাঝি রাখা ভালো

রাউটার সব দিকেই সিগন্যাল পাঠিয়ে থাকে। আপনি যদি দক্ষিণ দিকের ঘরটার এক কোনায় রাখেন,

তবে ওয়্যারলেস কভারেজের প্রায় অর্ধেকটা বাড়ির বাইরেই থেকে গেল।

অবশ্য পথচারীদের সেবায় ইন্টারনেট বিতরণ কর্মসূচি হাতে নিলে ভিন্ন কথা।

আর যদি পুরো বাড়িতে সমান হারে কভারেজ চান, তাহলে মাঝামাঝি কোথাও রাখলেই বরং ভালো।

তবে নির্দিষ্ট কোনো ঘরে প্রয়োজন হলে রাখুন। আর সে কাজটি ইন্টারনেটের সংযোগ নেওয়ার সময়েই করা ভালো।

কারণ, পর্যাপ্ত লম্বা তার থাকতে হবে, যেখানে রাউটার রাখবেন সেটির আশপাশে পাওয়ার আউটলেটও থাকতে হবে।

উঁচু কোথাও রাখুন

রাউটার থেকে নিচের দিকেও সিগন্যাল আসে। তাই উঁচু কোথাও সেটি রাখা ভালো।

তাই বলে ছাদের সঙ্গে স্কচটেপ দিয়ে আটকে রাখতে হবে না।

হয়তো বইয়ের তাকের ওপর রাখলেন কিংবা দেয়ালে কোথাও আটকে দিতে পারেন।

মাইক্রোওয়েভ থেকে দূরে রাখুন

নতুন রাউটারগুলো আধুনিক প্রযুক্তির।

তবু যত বেশি দেয়াল কিংবা বড় ও পুরু বাধা পেরিয়ে যাবে, সিগন্যাল তত দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

তা ছাড়া, কাছাকাছি অন্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি থাকলে তাতেও সিগন্যাল বাধা পেতে পারে।

বিশেষ করে একই তরঙ্গের হওয়ায় মাইক্রোওয়েভ ওভেনের কাছাকাছি রাখবেন না।

অ্যানটেনাও গুরুত্বপূর্ণ

অ্যানটেনা ছাড়াও যেমন রাউটার আছে, আবার কোনোটিতে আটটি পর্যন্ত অ্যানটেনাও পাওয়া যায়।

এই অ্যানটেনাগুলো সিগন্যাল নির্দিষ্ট দিকে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।

আর তাই একাধিক অ্যানটেনা থাকলে সব কটি এক দিকে নির্দেশ করে রাখার মানে হয় না।

বিপরীতমুখী করে রাখুন, ওপর-নিচ করে দিন, মোটকথা সব দিকে সিগন্যাল ছড়িয়ে দিতে যা করতে হয়, তা-ই করুন।

সব শেষে স্মার্টফোন নিয়ে এ–ঘর ও–ঘর করে বোঝার চেষ্টা করুন কোথায় নেটওয়ার্ক সবল আর কোথায় দুর্বল।

এরপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন।

5 thoughts on "ঘরের কোথায় রাউটার রাখলে ওয়াই-ফাই সিগন্যাল ভালো পাবেন"

  1. Anwarul Azim Author says:
    Post-টার সবই অসাধারণ। কিন্তু শেষের তথ্যতে সামান্য ত্রুটি আছে। আমাদের বাসাবাড়িতে সবাই Omnidirectional Router ব্যবহার করি। আর Omnidirectional Antenna-র কাজ হচ্ছে উপর আর নিচ বরাবর সামান্য ফাঁপা অংশ রেখে তার চারপাশে Sphere তৈরি করা। এর অর্থ Antenna-কে সোজা করেই রাখতে হবে, ডানে, বামে, নিচে রাখলে Router এর ডানে-বামে আর ভালো Coverage/Bandwidth কোনোটাই পাওয়া যাবে না। যদি একেবারে Basic ভাবে বলা যায়, তাহলে আপনার Router এর Antenna যেদিকে থাকবে তার সাথে 90° Angel করে সবদিকে Router Bandwidth Through করবে। অর্থাৎ, উপর করে রাখলে ডানে-বামে পাবেন, Surface-এর সাথে লাগিয়ে দিলে উপর-নিচে পাবেন, আর কোনো একদিকে আড়াআড়ি (যেমন: 45°) করে রাখলে ডানে-বামে এক দিকের উপরের কোণা থেকে অন্যদিকের নিচের কোণায় (Z -এর মাঝের অংশটার মতো মতো) পাবেন।
  2. Ys Abubokor Contributor says:
    হুবহু কপি
  3. Ys Abubokor Contributor says:
    কিরে ছাগ’লের বাচ্চা রিপ্লাই দেস না কেন?
  4. Ys Abubokor Contributor says:
    গা’জাখুর

Leave a Reply