Site icon Trickbd.com

চলুন আজকে কম্পিউটারের মেমরি HDD এবং SSD নিয়ে জানা যাক।

Unnamed

আমরা যারা কম্পিউটার ব্যবহারকারী আমরা সকলেই জানি যে, কম্পিউটারের একটি মেমরি রয়েছে। যাকে আমরা হার্ড ডিস্ক বলি বা সংক্ষিপ্ত আকারে HDD বলি। যা কম্পিউটারের জন্মলগ্ন থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে নতুন আরেকটি কম্পিউটার মেমরির আবিস্কার হয়েছে। যার নাম সলিড স্ট্যাট ড্রাইভ বা সংক্ষিপ্তভাবে এসএসডি বলা হয়। এখন বাজারে এই দুইটি আলাদা আলাদা কম্পিউটার মেমরি থাকার কারণে আমরা যারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয় তারা কোনটি ব্যবহার করব এই নিয়ে দ্বিধাদন্ধে পড়ে যাই। তো যারা এই দ্বিধাদন্ধে পড়েন বা বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান, তাদের জন্যই আমার আজকের এই পোস্ট।

যেহেতু আমরা আজকে কম্পিউটারের আলাদা আলাদা ধরনের দুইটি মেমরির বিষয় নিয়ে আলোচনা করব HDD এবং SSD নিয়ে। তাই প্রথমে কম্পিউটারের মেমরি হিসেবে প্রথম সঙ্গী এইচডিডি নিয়ে আলোচনা করব। তারপর নতুন সঙ্গী এসএসডি নিয়ে আলোচনা করব। তারপর বলব যে আপনার কোনটি ব্যবহার করা উচিৎ। তাই পুরো বিষয়টি পরিস্কারভাবে বুঝতে পোস্টটি ভালো করে পড়ুন।

HDD (Hard Disk Drive):

কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের কাছে HDD (Hard Disk Drive) একটি পরিচিত ডিভাইস এবং নতুন বা পুরাতন সকলেই এটি সম্পর্কে জানে। সাধারণত এটি সবার কাছে হার্ড ডিস্ক নামেই পরিচিত। উপরেও বলেছি এখানেও বলছি এটি মূলত কম্পিউটারের একটি স্টোরেজ ডিভাইস। আইবিএম কোম্পানি এই Hard Disk Drive টি ১৯৫৬ সালে প্রথম বাজারে আনে। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত এটি কয়েক ধাপে আপডেট হতে হতে এই পর্যন্ত এসেছে এবং আমরাও ব্যবহার করে আসছি। সার্ভার থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত কম্পিউটারে এর ব্যবহার করা হচ্ছে। মূলত এটি কম্পিউটারে তথ্য সংরক্ষণের স্থায়ী (non-volatile) ব্যবস্থা হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কম্পিউটার ছাড়াও বর্তমানে ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডার, মিউজিক প্লেয়ার প্রভৃতি যন্ত্রে হার্ড ডিস্ক ব্যবহার করা হয়। হার্ড ডিস্কের শুরু থেকে এই পর্যন্ত প্রায় ২০০টিরও বেশি কোম্পানী প্রস্তুত করে আসছে। তবে এর মধ্যে বর্তমানে কয়েকটি খ্যাতিমান কোম্পানী যেমন সিগেট, তোশিবা এবং ওয়েস্টার্ন ডিজিটাল উল্লেখ্যযোগ্য।

সমকেন্দ্রিক একাধিক চাকতি দ্বারা গঠিত হয়ে থাকে হার্ড ডিস্ক। যাকে প্লেটারস বলে। এগুলো চৌম্বকীয় ধাতু দিয়ে আচ্ছাদিত হয়ে থাকে। চৌম্বকীয় মাথার সাথে প্লেটারসগুলো জোড়া দেয়া থাকে। এই দুইটির সাথে আরো একটি সক্রিয় একচুয়েটর আর্ম থাকে। এই একচুয়েটর আর্ম প্লেটারগুলোর উপরিভাগ থেকে তথ্য পড়তে এবং তথ্য জমা করতে ব্যবহৃত হয়। র‍্যানডম অ্যাক্সেস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ডাটাগুলো ড্রাইভে স্থানান্তর হয়। এর মানে হল ডাটা যখন ড্রাইভে রাখা হয় এগুলো পর পর সাজানো হয় না বরং যেকোন খালি জায়গায় ডাটা জমা করা হয়। কম্পিউটার বন্ধ করার পরও হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ ডাটা সংরক্ষণ করে রাখে। কম্পিউটারের হার্ড ডিস্কের স্পিন চালানোর ক্ষমতা প্রায় ৫৪০০ আরপিএম বা ৭২০০ আরপিএম এর হয়ে থাকে। আর কিছু কিছু সার্ভারের ক্ষেত্রে এর ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। ঐসব সার্ভারগুলিতে প্রায় ১৫০০০ আরপিএম পর্যন্ত স্পিন করতে সক্ষম।

মূলত একটি হার্ড ডিস্কের বিচার করা হয় তার ধারণক্ষমতা ও কার্যকারিতা নিয়ে। এই ডিস্কটিতে প্রচুর পরিমাণ তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা যায়। এগুলো এক একটি প্রায় ৫০০ জিবি, ১০০০ জিবি বা ১ টেরাবাইট সাইজের হয়ে থাকে। এর চেয়ে বেশিও রয়েছে। যার ফলে এগুলোতে অনেক পরিমাণ ডাটা সংরক্ষণ করে রাখা যায়।


SSD (Solid State Drive):

কম্পিউটারের নতুন মেমরি হিসেবে উত্থানকৃত ডিভাইসটির নাম হচ্ছে Solid State Drive যাকে আমরা বেশিরভাগই সংক্ষিপ্তরূপ SSD নামে চিনে থাকি বা ডেকে থাকি। বর্তমান সময়ে এটি পূর্বের হার্ড ডিস্কের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বাজারে পাল্লা দিচ্ছে। এটি মূলত একটি ফ্ল্যাশ মেমরি। এসএসডি তে মূলত ইউএসবি ড্রাইভের মত মাইক্রোচিপের মধ্যে ডাটাগুলো জমা করা হয়। আশা করি সকলেই পেনড্রাইভ বা USB memory stick এর সাথে পরিচিত। মূলত এই SSD হচ্ছে USB memory stick বা আমাদের পরিচিত পেনড্রাইভ এর একটি বড় এবং উন্নত সংস্করণ। এর মধ্যে হার্ড ডিস্কের মত কোন ডিস্ক বা মুভিং পার্ট নেই বরং তার বদলে আছে মাইক্রোচিপ যার মধ্যে তথ্যগুলো সংরক্ষিত থাকে। সাধারণত SSD কে NAND-based flash memory বলা হয়। এটা non-volatile বা অনুদ্বায়ী ধরনের মেমোরি।
সহজে বলতে গেলে এটা এমন এক ধরনের রিজার্ভেশন সিস্টেম যেখানে আপনি যদি ডিস্ক টার্ন অফ করেন সে ক্ষেত্রেও এটি ভুলে যায় না যে কোথায় কি রেখেছে। যারা NAND GATE- NOR GATE পড়েছেন তাদের জন্য ব্যাপারটা পরিষ্কার। এবং এই যে non-volatile প্রপার্টি, এটি permanent memory এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আবশ্যক। ম্যাক স্পিডের দিক থেকে অনেক দ্রুতগতিতে কাজ করে, কারণ ম্যাক এ হার্ডডিস্ক এর বদলে SSD (Solid State Drive) ব্যাবহার করা হয়। এটির সাইজও বিভিন্ন ধরনের রয়েছে। আমার জানামতে ১২০ জিবি থেকে শুরু করে ১ টেরাবাইট পর্যন্ত রয়েছে। হয়তো এর বেশিও থাকতে পারে।

হার্ড ডিস্ক এবং এসএসডি এর তুলনা:

হার্ডডিস্ক এবং এসএসডি এর তুলনা আমি এখানে সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরছি। কম্পিউটার মেমরির হার্ডডিস্ক এবং এসএসডি মাঝে গঠন দিক, আকারের দিক ও গতির দিক সহ আরো অনেক পার্থক্য রয়েছে। হার্ডডিস্কের তুলনায় এসএসডি এর গতি অনেক বেশি। যার ফলে আপনি আপনার কম্পিউটারটি ব্যবহার করে খুব শান্তি পাবেন। আপনি কম্পিউটারে যত ভারি সফটওয়্যার ব্যবহার করেন না কেন, অনায়াসেই তা ব্যবহার করতে পারবেন কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন ছাড়াই। একটি উদাহরণ দিলেই বুঝতে পারবেন আসলে এসএসডি এর গতি কেমন? এটি ব্যবহার করলে আপনার কম্পিউটার ওপেন করার সময় ওপেন হওয়ার সময় নিবে মাত্র ১০-১৫ সেকেন্ড। আর হার্ডডিস্ক লাগানো কম্পিউটার ওপেন হতে সময় নেয় প্রায় ১ মিনিটের মত। এছাড়াও অন্যান্য ভারি সফটওয়্যার ব্যবহার করতে তো সমস্যার সম্মুখীন হতেই হয়। হার্ডডিস্কের তুলনায় এসএসডি আকারে ছোট, চিকন এবং পাতলা হয়ে থাকে। যার ফলে এটি মাদারবোর্ডে জায়গা কম ব্যবহার করে থাকে। এসএসডি হার্ডডিস্কের তুলনায় সবদিক দিয়ে উপরে থাকার কারণে এর মূল্যও বেশি।

এখন আপনি কোনটি ব্যবহার করবেন?

আমার মতে আপনি এখন নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে আপনার জন্য কোনটি ব্যবহার করা উচিৎ হবে। যেহেতু আমি দুটোরিই বিষয়ে উপরে বিস্তারিতভাবে বলার চেষ্টা করেছি। তারপরও আমি বলব আপনার যদি টাকা পয়সার সমস্যা না থাকে এবং কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা ভালো দেখতে চান, তাহলে আপনার উচিৎ হবে এসএসডি ব্যবহার করা। আশা করি আপনাদের ছোট্ট এই পোস্টটির মাধ্যমে এইচডিডি এবং এসএসডি সম্পর্কে ধারনা দিতে পেরেছি। তো আপনারা যদি এই পোস্টটির মাধ্যমে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই পোস্টটিতে আপনার লাইকটি দিয়ে যাবেন এবং যদি পারেন সুন্দর একটি মন্তব্য করে যাবেন।

ছবি: সংগৃহীত।

আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।

সৌজন্যে : বাংলাদেশের জনপ্রিয় এবং বর্তমান সময়ের বাংলা ভাষায় সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক টিউটোরিয়াল সাইট – www.TutorialBD71.blogspot.com নিত্যনতুন বিভিন্ন বিষয়ে টিউটোরিয়াল পেতে সাইটটিতে সবসময় ভিজিট করুন।