অবশেষে চালু হচ্ছে ফেসবুক-ভাইবার: সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে সবুজ সংকেত” –
মোবাইল ফোন অপারেটর ও আইআইজি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, এগুলো বন্ধ থাকায় বাংলাদেশে ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহার ৩০ শতাংশের বেশি কমেছে। পাশাপাশি আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও সবুজ সংকেত পাওয়া গেছে। এ কারণে যে কোনো সময় মাধ্যমগুলো খুলে দেয়ার জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশনা দেয়া হবে।
গত বুধবার থেকে বাংলাদেশে বন্ধ রয়েছে ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপসহ ইন্টারনেটে যোগাযোগের কয়েকটি মাল্টিমিডিয়া অ্যাপ।
নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বন্ধ করার পর থেকে কবে নাগাদ এগুলো খুলে দেয়া হবে, তা এখনও নিশ্চিত করেনি সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবারও সাংবাদিকদের প্রশ্নে কোনো দিনক্ষণ বলেননি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় কিছু না বললেও ২/১ দিনের মধ্যে মাধ্যমগুলো খুলে দেয়া হবে বলে জানান মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।
এক ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ফেসবুকসহ অন্যান্য অ্যাপ বন্ধ থাকায় আইআইজি প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার বন্ধ করে দিলেও নানা উপায়ে ফেসবুক ব্যবহার করছেন হাজারও ব্যবহারকারী। এ অবস্থায় নিরাপত্তার কথা বলে এখন আর ফেসবুক বন্ধ রাখার কোনো অর্থ নেই। তার মতে, ফেসবুকসহ অন্যান্য অ্যাপ বন্ধ করে দেয়ার পর তাদের ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহার কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার প্রযুক্তি না থাকায় ব্যবহারকারীরা এসব অ্যাপে ঢুকতে পারছেন। বিটিআরসির হিসাবে, গত সেপ্টেম্বর শেষ নাগাদ দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ৪০ লাখ ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫ কোটি ১৯ লাখের বেশি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। ফেসবুকসহ অন্যান্য অ্যাপ বন্ধ থাকায় ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহার কমেছে মোবাইল ইন্টারনেটেও। কয়েকটি অপারেটর জানিয়েছে, গত কয়েকদিনে ডেটা ব্যবহার গড়ে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমে গেছে।
আইআইজি প্রতিষ্ঠানগুলোর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ২২০ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহার হয়। দেশে ৬টি ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিরিয়াল ক্যাবল (সাবমেরিন ক্যাবলের বিকল্প) সংযোগে ১৫০ জিপিবিএস ব্যবহৃত হচ্ছে, বাকি ৬০ থেকে ৭০ জিবিপিএস ব্যবহার হয় রাষ্ট্রায়ত্ত সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি বিএসসিসিএলের মাধ্যমে। বিএসসিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেন, কী পরিমাণ ডেটা ব্যবহার কমেছে, তার হিসাব এখনও করা হয়নি।
তথ্য-প্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বার সরকারি পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলেন, এর ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং ব্যবসার জন্যও তা ক্ষতিকর। সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধের কারণে তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভ সরকারের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। ফেসবুক বন্ধের কোনো কারণ ছিল না। ঘরে তো ঢোকাই যাচ্ছে, দরজা বন্ধ করে তো লাভ নেই।