ট্রিকবিডি বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সাইটগুলোর মধ্যে একটি। প্রতিদিন দেশের নানান প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পাঠক এখানে আসে নতুন কিছু শিখতে এবং জানতে। তাই এখানে লেখা প্রকাশের জন্য অনেকেই যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে। প্রায় প্রত্যেকটা পোষ্টেই কন্ট্রিবিউটররা আম্রে ট্রেইনার বানান, আম্রে ট্রেইনার বানান বলে চেঁচামেচি করে চলেছে। অনেকে ফেসবুকের মাধ্যমে আবেদন করছে, কেউ কেউ আবার আডমিনদের কাছে ইমেইল পাঠাচ্ছে (আমার মত ??)।
তবে সমস্যা হল লেখা শুধু লিখলেই প্রকাশিত হয়ে যাবে এমন কোনো কথা নেই। বরং লেখা প্রকাশের জন্য এখানে এপ্রুভড হতে হয়। এপ্রুভ হওয়াকে আমরা বলি ট্রেইনার হওয়া। শুধু মাত্র ট্রেইনারদের লেখাই ট্রিকবিডিতে প্রকাশিত হয়।
তাই নিজের লেখাকে ট্রিকবিডিতে দেখতে হলে আগে আপনাকে ট্রেইনার হতে হবে। ট্রেইনার হওয়াটা একদিক থেকে সহজ আবার খানিকটা কঠিনও। তবে কিছু নিয়ম ফলো করলে খুব সহজেই ট্রেইনার হওয়া সম্ভব। আজ আমি সেইসব নিয়ম নিয়েই কথা বলব।
তবে তার আগে আমি ট্রিকবিডিকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে ট্রেইনার বানানোর জন্য, বিশেষ করে রানা ভাইয়াকে। আমি জানি আমার লেখার মান পুরোই থার্ড ক্লাস, তাই ভাবতেও পারি নি নিজের লেখাও কখনও এখানে দেখতে পাব। ট্রিকবিডিতে লিখতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত, উত্তেজিত আবার একই সাথে গর্বিত।
যাই হোক আর কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। চলুন কাজে চলে যাওয়া যাক।
ট্রিকবিডিতে এপ্রুভ পাওয়ার কিছু কৌশল
সকল নিয়ম মেনে পোষ্ট করুন: লেখা প্রকাশ হওয়ার প্রথম শর্ত হল সকল নিয়ম মেনে লিখতে হবে। বিশেষ করে ইদানিং যে সব নিয়ম তৈরী করা হয়েছে সেগুলো অবশ্যই মানবেন। নইলে ট্রেইনার হওয়ার আশা ছেড়ে দিতে হবে।
লেখাকে জঙ্গল বানাবেন না: নিজের লেখাকে ফ্রেশ রাখার চেষ্টা করুন। শুধু শুধু লিংক, আজাইর্যা স্ক্রিন শট, ফালতু কথা লিখা বন্ধ করুন। অনেকেই বলবেন, স্ক্রিন শট তো এড করতেই হবে। তাদেরকে আমি বলব, অবশ্যই স্ক্রিন শট এড করবেন। তবে তার মানে এই নয় যে পোষ্ট শুধু স্ক্রিন শট দিয়েই ভরে ফেলবেন। বিশেষ করে যেখানে স্ক্রিন শটের প্রয়োজন নেই সেখানে এড না করাই ভাল।
আর্টিকেলের সাইজ ৪০০ থেকে ৬০০ শব্দের মধ্যে হওয়াই ভাল। তবে মনে রাখবেন ২০০ শব্দের নিচে যেন না হয়। আমার ধারনা ২০০ শব্দের নিচে আর্টিকেল লিখার অর্থ ট্রিকবিডিকে অপমান করা।
নিস্বার্থ ভাবে লিখুন: আমাদের বড় সমস্যা হল আমরা নিজের দিক ছাড়া আর কারো দিক দেখতে পারি না। তাই লেখার মাঝে আমার সাইট ভিজিট করুন, আমার চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন ইত্যাদি ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেই। তবে ট্রেইনার হতে হলে এই সব অভ্যাস ত্যাগ করা উচিত। লিখতে হবে শুধু জানানোর উদ্দেশ্যে।
নিজের ইচ্ছায় লিখুন: নিজেকে লেখার জন্য ঠেলবেন না। নিজ ইচ্ছায় লিখুন। মজা করে, হালকা ভাষায়, নিজের মত করে লিখুন।
বি.দ্র: ট্রেইনার প্যানেলে যোগ দিতে হলে কমপক্ষে তিনটি পোষ্ট লিখে ট্রেইনার হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদনের লিংক
কন্ট্রিবিউটর থাকাকালীন যা করবেন এবং করবেন না
ট্রেইনার হওয়ার জন্য কন্ট্রিবিউটরদের কিছু নিয়ম ফলো করা উচিত বলে আমি মনে করি।
অবশ্যই করবেন: যেসব আর্টিকেল পড়ে উপকৃত হয়েছেন সেসব আর্টিকেলে মিনিংফুল কমেন্ট করুন। এতে লেখক আর এডমিনদের নজর আপনার উপর পড়বে। অনেক টিউনারই নিজের ফেসবুক আইডি শেয়ার করে। তাদের সাথে ফেসবুকে কথা বলুন, জানতে চান কিভাবে তারা টিউনার হয়েছে। এতে ট্রেইনার হওয়াটা সহজ হয়ে যাবে।
কখনই করবেন না: কমেন্টে ঝগড়াঝাঁটি বকাবাজি বন্ধ করুন। অন্যদের সাথে খারাপ ব্যবহার করবেন না। কাউকে নিচু করে কথা বলবেন না। কেউ আপনাকে কাটুক্তি করলে তাকে এড়িয়ে চলুন।
লিখতে থাকুন: লেখা প্রকাশ না হলে হতাশ হবেন না। বরং নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন আর লিখতে থাকুন। একসময় না একসময় লেখা প্রকাশ হবেই।
ট্রেইনার হওয়ার পর
চলুন দেখে নেয়া যাক ট্রেইনার হওয়ার পর কি করা উচিত এবং উচিত না।
অবশ্যই করবেন না: যেগুলো করা উচিত নয় সেগুলোই আগে বলি। কারন বেশিরভাগ সময় এগুলোই আমরা করে থাকি। টিউনার হয়েছেন বলেই আচ্ছা মত রেফার লিংক দিয়ে পোষ্ট মারবেন না। এতে ব্যান খেয়ে যাবেন। টিউনার হয়ে কন্ট্রিবিউটরদের ছোট করে দেখবেন না। তারা সবসময়ই আপনাকে লিখতে উৎসাহীত করবে। তাই তাদের যথাসম্ভব হেল্প করুন।
অবশ্যই করবেন: নিয়মিত পোষ্ট করতে থাকুন। সুন্দর সাজানো গোছানো লেখা লিখতে চেষ্টা করুন। অন্য টিউনারদের সাথে ভাল ব্যবহার করুন। তাদের প্রতিযোগী নয় বরং সহযোগী ভাবুন।
মনে রাখবেন: ট্রিকবিডি আমাদের সবার সাইট। তাই একে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখাটাও আমাদের দায়িত্ব। আর প্রায় টিউনারই এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। এটা হওয়া উচিত নয়। আপনি যখন ট্রেইনার হবেন তখন ধরেই নিবেন আপনার ওপর একটি দায়িত্ব এসে পড়েছে। আর সেই দায়িত্ব আপনাকে অবশ্যই পালন করতে হবে।
সমাপ্তি
আমি ট্রিকবিডিতে নতুন লেখক। তবে ট্রিকবিডির সাথে আছি একদম শুরুর সময় থেকেই। ট্রিকবিডির প্রতি ভালবাসা আর নতুনদের সাহায্য করার উদ্দেশ্যেই এই লেখাটা লিখলাম। আশা করি কেউ মাইন্ড করবেন না।