বর্তমান আধুনিক যুগে ইমেইল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম, যেটা জনপ্রিয় মানুষ পর্যন্ত ব্যবহার করে। বিভিন্নভাবে অনলাইনে যোগাযোগ করার সহজ হলেও, ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ সত্যিই অসাধারণ! ইমেইল দেখলেই লেখা যায় যে কারোর কাছে চাইলেই পাঠানো যায়।
Email লেখার সঠিক নিয়ম প্রফেশনাল ভাবে: একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট খুলে, সেখানে অন্যের জিমেইলে চাইলেই যখন ইচ্ছা তখন যা ইচ্ছা তাই (ক্ষেত্রবিশেষে) আপনি পাঠাতে পারবেন email । মনে রাখবেন ইমেল বর্তমান সময়ে প্রায় কাজেই ব্যবহার করা হয়।
- তাই আমাদের ইমেইল লেখার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে, পাশাপাশি আপনি যদি ইমেইল লেখার সঠিক নিয়ম না জানেন তাহলে এই ইমেইলের সঠিক ব্যবহার আপনি করতে পারবেন না। যেন আপনি ইমেইল প্রফেশনাল ভাবে পাঠালে কোন রেসপন্সিবিলিটি থাকার সম্ভাবনা থাকে, এইজন্যই আজকের এই আর্টিকেলটি তৈরি করা আশা করি যারা ইমেইল লেখালেখি করতে চান তাদের জন্য আর্টিকেলটি একটি হলে উপকারী হবে!
Email লেখার সঠিক নিয়ম প্রফেশনাল ভাবে!
পরিষ্কার সাবজেক্ট লিখুন: ইমেল লেখার শুরুর ধাপ একটি সুন্দর শিরোনাম! এই শিরোনামটি আপনার কায়দায় লিখলে হবে না, যে প্রতিষ্ঠানে বা যার কাছে আপনি পাঠাচ্ছেন, সে একটু আকৃষ্ট হয়ে আপনার ইমেইলটি খুলে দেখবে এমন একটি শিরোনাম দিবেন।
যেমনঃ আপনার প্রস্তাবে আমরা রাজি!
- উদাহরণটি দেখতে যেমন হলেও, এটি বোঝার সুবিধা হিসেবে দেওয়া। আপনি আপনার নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে যার কাছে যে কারণে পাঠাচ্ছেন, এমন একটি শিরোনাম ভাবুন যেটা তার গুরুত্বপূর্ণ! দেখার সঙ্গে সঙ্গে ইমেইলটি পড়ার আগ্রহ থাকে।
প্রফেশনাল মানের ই-মেইল এড্রেস ব্যবহার করুন: আপনি যে ইমেইল দিয়ে কোন প্রতিষ্ঠান অথবা কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির কাছে নির্দিষ্ট বিষয়ে ইমেইল পাঠাবেন, তখন আপনার ইমেইল টার এড্রেস যেমন তেমন হলে ভালো দেখায় না। এমনকি প্রফেশনাল মানের ইমেইল এড্রেস ব্যবসায়ী কিংবা প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- তবে ব্যক্তিগত ইমেইল এড্রেস পাঠানো যাবে, তবে লোক বিবেচনা কিংবা প্রতিষ্ঠান বিবেচনা করে আপনাকে সেই ডিসিশন নিজেরই নিতে হবে। আপনার professional email address এর উদাহরণঃ admin@trickbd.com আর পার্সোনাল ইমেইল এড্রেস তো বেশিরভাগ নিজের নাম দেওয়াই থাকে। এবং জিমেইল ডট কম তবে এই পার্সোনাল ইমেইল এড্রেস থার্ড পার্টি লোকের কাছে পাঠালেও প্রফেশনাল মানের লোকের কাছে প্রফেশনাল ইমেইল এড্রেস ব্যবহার করা উচিত!
সবাইকে রিপ্লাই দেবার আগে ভাবুন: বিভিন্ন কার্যক্রমে ইমেইল আমাদের আসা স্বাভাবিক! সুতরাং এই ক্ষেত্রে সকলের ইমেইলে আমাদের উত্তর দিতে হবে এটা জরুরি নয়। তবে চেষ্টা করবেন গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যেকটি ইমেইল ভালোভাবে পড়ার, তারপর প্রয়োজন সাপেক্ষে আপনি উত্তর দিতে পারেন।
- যদিও ইমেইল অনেকের আসলে সময় নিয়ে পড়তে হয়, সেই ক্ষেত্রে আপনি অবসর সময়ে যখন রেস্ট নিবেন কিংবা চা কফি খাবেন তখন সেগুলো করতে পারেন। কারণ ব্যবসায়ী উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ অনেক ধরনের ইমেইল আশা অস্বাভাবিকের কিছু নয়!
ইমেইলে আপনার সিগনেচার ব্লক ব্যবহার করুন: আপনার ইমেইল লেখাকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে সিগনেচার ব্লক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এমনকি আপনার ইমেইলটি ইউনিক এবং পড়ার প্রতি অন্যরকম মন মানসিকতা সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক।
- মানে যার কাছে আপনি পাঠাচ্ছেন সে শুরুতেই আপনার লেখাতে মন দেবে না, তার ইমেইলের ধরনটিতে আগে নজর দেওয়া স্বাভাবিক! সুতরাং ইমেল কে আকর্ষণ করার জন্য আপনি এই ব্লক ব্যবহার করতে পারেন! উদাহরণঃ একটি ব্লক ধরুন ট্রিকবিডি আপনাকে পাঠালো, এজন্য তারা তাদের ইমেইলের ভেতর তাদের ওয়েবসাইটের একটি লোগো ব্যবহার করল!
খেয়াল রাখবেনঃ আপনার এই নির্দিষ্ট ব্লকের কালার সাইজ ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে যেন এক রকমই থাকে!
প্রফেশনাল সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করুন: আমাদের ইমেইল লেখার ভেতর গুরুত্বপূর্ণ শব্দগুলি অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে যেগুলি প্রফেশনাল। যেমনঃ “Hey you guys, ” “Yah, ” or “Hi folks.” তাছাড়া আমরা হয়তো ইনফর্মাল জায়গায় ok কে Yah বলতে পারি। কারন আমাদের ইমেইল পাঠানো টি প্রফেশনাল হতে হবে।
- সম্মোধন করার জন্য আমরা ইমেইল লেখার ক্ষেত্রে লেখা উচিত “Hi Kamal” যেটা অনেকে “kamal” লিখেও দিতে পারে তবে এটা প্রফেশনাল ভাবে নয় সুতরাং সম্বোধনের ক্ষেত্রে আমাদের সঠিকভাবে ইমেইল লেখা দরকার!
একাধিক আশ্চর্যবোধক চিহ্ন বা ইমোজি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন: এখন আমাদের মোবাইল ফোনে ইমুজির প্রচলনটা বেশি, এই ক্ষেত্রে আপনি আপনার ইমেইলের ভেতর ইমোজি লেখা দিবেন না। ক্ষেত্রবিশেষে ব্যক্তিগতভাবে করলেও আলাদা ব্যাপার তবে ব্যবসায়ী কিংবা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছে ইমোজি ব্যবহার না করা উচিত!
হাস্য-রসিকতা থেকে বিরত থাকুন: আপনি যে প্রতিষ্ঠান কিংবা যার কাছে ইমেইল পাঠাবেন তার মন মানসিকতা সবসময় একরকম থাকবে না। সুতরাং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়া আপনি হাসির রসিকতা কখনোই করবেন না। মূল বিষয়টি প্রফেশনাল ভাবে ইমেইল লেখার ক্ষেত্রে হাসির রসিকতা চলে না!
অবশ্যই তার কালচার বা সংস্কৃতি জানুন: আপনি নিজ দেশে কিংবা বৈদেশিক কোন প্রতিষ্ঠান ব্যবসার উদ্দেশ্যে ইমেইল পাঠাচ্ছেন! অবশ্যই আপনাকে এ বিষয়টি মানে কালচার এবং সংস্কৃতি এগুলি ভালোভাবে বুঝে আপনাকে ইমেইল লেখা উচিত। যদি আপনার নিয়মিত কথা হয়েও থাকে সেই ক্ষেত্রে বিষয়টা আলাদা। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক অনুযায়ী আপনার ইমেইল লেখার বিষয়ই বস্তু একরকম থাকা উচিত।
ভুল করে মেইল চলে আসলেও ভদ্রতা দেখানোর চেষ্টা করুন: ভদ্রতা সেটা সকলের ভেতরে পাওয়া যায় না। তবে এই ক্ষেত্রে এটা ইমেইল হলেও আপনাকে এর গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ প্রফেশনাল মানের ব্যক্তি কখনোই অভদ্রতা নিজের ভেতরে রাখে না। হতে পারে কেউ আপনাকে পরীক্ষা করার জন্য এমন মাধ্যম অবলম্বন করতে পারে। এমনকি কারো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্বন্ধে ভুলবশত আসলেও আসতে পারে তবে ভদ্রতা বজায় রাখা বুদ্ধিমানের কাজ।
ইমেইলের বানান যাচাই করুন: দেখুন ইমেইল লেখার সাথে সাথেই পাঠানো উচিত নয়। আপনার লেখার বানানগুলি যদি অশুদ্ধ কিংবা ভুল হয় কোন কারনে, তাহলে সেটা প্রফেশনাল মানের গুরুত্ব বহন করবে না। পাশাপাশি যার কাছে আপনি পাঠাচ্ছেন সেও আপনার পাঠানো ইমেইল এর প্রতি গুরুত্ব কমিয়ে দিবে!
ই-মেইল এড্রেস পরে দিন: আপনার সাথে যোগাযোগ কিংবা অন্যান্য কারণে ইমেইল এড্রেস ব্যবহার করার প্রয়োজন হওয়া স্বাভাবিক! কিংবা ব্যবসায়ী কাজেও কোন প্রতিষ্ঠানের কিংবা এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে যাওয়ার জন্য আলাদা ইমেইল এড্রেস ব্যবহার করতে, আপনার ইমেইল লেখার শেষের দিকে কোন ইমেইল অথবা এই ধরনের যোগাযোগের ঠিকানা রাখা উচিত।
দেখুন ঠিক ব্যক্তি সিলেক্ট করেছেন কিনা: সব দিকে নজর রাখতে হয় একটি ইমেইল এড্রেস এখনকার সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনার প্রোফেশনাল ইমেইল পাঠানো টি যেন সঠিক প্রতিষ্ঠান অথবা লোকের কাছে পৌঁছায় সেদিকে নজর রাখবেন। অর্থাৎ যার কাছে পাঠাবেন তার ইমেইল এড্রেস ঠিক আছে কিনা যাচাই ভালোভাবে করতে হবে।
ক্লাসিক ফন্ট ব্যবহার করুন: সাধারণ স্বাভাবিকভাবে আপনার লেখার ধরন ঠিক রাখুন। হিজিবিজি করে ইমেইল এড্রেস লেখা উচিত নয়, আপনার ইমেইল এড্রেস এর শুরু যেমন হবে মাঝখানেও ঠিক তেমনি এমনকি শেষটা ও ধরন গঠন বুঝে ফন্ট ব্যবহারের প্রয়োজন হলে, সেটিও অযথা না ব্যবহার করে আপনাকে সঠিকভাবে ইমেইল লেখা জরুরী।
নেতিবাচক শব্দ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন: আমরা হুট করে যেকোনো শব্দ মাথায় আসলে সেটা লিখে দিন। আপনার প্রয়োজন হচ্ছে ফেল লেখার। আপনি এটা লিখলে তার মনে একটু হলেও আঘাত আনতে পারে। সুতরাং ফেল না লিখে আপনি বিনয়ের সাথে তাকে বিষয়টি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করুন। সম্মোধন করার পাশাপাশি আপনাকে নম্রতা, ভদ্রতা বজায় রেখে বিনয়ের সাথে তার সাথে প্রত্যেকটি বিষয়ে আলোচনা করুন। (যেগুলি আপনার ইমেইল লেখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সেগুলি)
সার্বিক বিষয়ে সতর্ক হোন: আপনার ইমেল লেখার প্রত্যেকটি কাজ এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আপনার সার্বিক বিষয়টি, আপনি কেন কোন উদ্দেশ্যে তাকে ইমেইল পাঠাচ্ছেন!!! আপনি চাইলে কোন আর টাই লিখুন সে আপনার এই ইমেইল লেখাটি পড়ে কিছু বুঝতে পারবে কিনা তার ভালো লাগবে কিনা? এমনকি তার মাথায় আপনার কথাগুলি কতটুকু ঢুকেছে এই প্রত্যেকটি বিষয়ে মাথায় রেখে আপনাকে ইমেইল লিখতে হবে।
মনে রাখা উচিত email যে কেউ, চাইলেই সবার কাছে পাঠাতে পারে। ইমেল লেখার ক্ষেত্রে একটু সময় নিয়ে প্রত্যেকটি বিষয়ে সুন্দরভাবে বিবেচনা, এবং লেখার ধরন ও গঠন বুঝে এমনকি সে কি মনে করবে আপনার লেখাটি দেখে? এই ধরনের প্রত্যেকটি বিষয় আগে ভেবে এবং সময় নিয়ে আপনার ইমেইলটি তৈরি করুন। ইমেইলের গুরুত্ব এখনকার সময়ে কিছু দেশে হয়তো তেমন লোক জানে না।
তবে আস্তে আস্তে সারা বিশ্বে এর প্রচলনটা আগামীতে বেড়ে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক! সুতরাং আমাদেরকে ইমেইল লেখার গুরুত্ব এবং সঠিক নিয়ম নীতি, আর প্রফেশনাল এর ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি বিষয় ভালোভাবে মাথায় রেখে ইমেইল পাঠানো উচিত।