Site icon Trickbd.com

দুঃখিত, একটা গল্প শেয়ার করলাম । সেলফি আর ভেলফি

না, এই মেয়েটার জ্ঞানগম্যি আর কোনোকালেই হবেনা! মৌয়ের ফেসবুক পাতায় দেওয়া নানান রকমেরসেলফি দেখে বিরক্তির সঙ্গে এসব ভাবছিল রাতুল।কী সব ভঙ্গি একেকটা ছবিতে—চোখ-মুখ বাঁকিয়ে,ঠোঁট চোখা করে—যেন সার্কাসের জোকার! আরকোথায় কোথায় না সেলফি তুলে এসেছে! সমুদ্রেরপাড়ে, সমুদ্রের মধ্যে, পাহাড়ের নিচে, পাহাড়েরওপরে, গাছের গোড়ায়, গাছের মাথায়—কোথায় নাউঠেছে আর নেমেছে মেয়েটা সেলফি তোলার জন্য!নিজেই নিজের এত ছবি কী করে তোলে কোনো মানুষ!এত আত্মকেন্দ্রিক কী করে হয় কেউ! ছবিগুলোদেখতে দেখতে চরম বিরক্তির সঙ্গে নিজের মনেইএসব বলে রাতুল।আজকের এই বিরক্তির বিপরীতে মৌয়ের সঙ্গেপ্রথম পরিচয়ের কথা ভেবে এখন অবাক লাগেরাতুলের। মৌকে কী ভালোই না লেগেছিল তারসেদিন। কী সুন্দর চাহনি মৌয়ের। চোখ দুটোয়যেন জীবনানন্দের কবিতার মতো অদ্ভুত বিষাদ।সেই চাহনি দেখেই তো সে গিয়ে যেচে পড়ে আলাপকরেছিল মৌয়ের সঙ্গে। এসব ছবিতে সেই চাহনিরকিছু কি অবশিষ্ট আছে? নিজেকেই প্রশ্ন করেরাতুল। আবার জবাবটা নিজেই দেয়, না, নেই।বিরক্ত হয়ে মৌকে আনফ্রেন্ড করে কাগজ-কলমেকবিতার চর্চায় মন দেয় উঠতি কবি রাতুল আহমেদ।শুধু ভার্চ্যুয়াল দুনিয়াতেই না, বরং বাস্তবেরপৃথিবীতেও মৌকে এড়িয়ে চলতে থাকে রাতুল। মৌকয়েকবার তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেব্যর্থ হয়ে ‘দূরে গিয়া মর’ বলে সেলফি তোলায় মনদেয়। এমনি করেই দিন কাটছিল। একদিন, এবংসেদিন রোদ বোধ হয় একটু বেশিই চকচকে আর জীবন্তলাগছিল রাতুলের কাছে। রাতুলের বন্ধু আবির তারল্যাপটপে তাদের মরণোত্তর চক্ষুদান কর্মসূচির কিছ

ছবি রাতুলকে দেখায়। এসব ছবির মধ্যে একটা ছবিদেখে চমকে ওঠে রাতুল। মৌ! মৌ তার ওইকবিতার মতো চোখ দুটো দান করে দিয়েছে! মৌয়েরমতো আত্মকেন্দ্রিক সেলফি-পাগল একজন যে এমনকোনো কাজ করতে পারে, সেটা যেন বিশ্বাসই হতেচায় না রাতুলের। মৌয়ের বিষয়ে রাতুলের কৌতূহললক্ষ করে আবির তাকে জানায়, মৌ প্রায় সব সময়ইএসব কাজের সঙ্গে আগ্রহভরে যুক্ত থাকে।সেই রাতেই মৌকে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠায়রাতুল। দুদিন পরও মৌ সেটা গ্রহণ না করলেইনবক্সে বার্তা পাঠায় রাতুল। জবাব আসে এবার।রাতুল শুধু জানতে চায়, মৌ ওসব উদ্ভট সেলফিফেসবুকে দিলেও কেন ভালো কাজের সঙ্গে যুক্তথাকার ছবি কখনো দেয় না?‘হৃদয়ের কোনো সেলফি হয় না।’ ওপাশ থেকে ভেংচিকাটার ইমোর সঙ্গে মৌয়ের এই উত্তরআসে।
গল্পটি Amraito.com এ prokashit