দুনিয়াজুড়ে হইচই আবারও আসছে সূর্য গ্রহণ। সূর্য গ্রহণ খুবই বিরল ঘটনা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে সাধারণ মানুষ থেকে বিশ্বের তাবৎ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। সবাই এই বিশেষ উপলক্ষের সাক্ষী থাকতে চান।
সূর্যগ্রহণ কি?
চাঁদ যখন পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরে তখন তার প্রদক্ষিণ পথে কখনো কখনো চাঁদ এসে পড়ে সূর্য এবং পৃথিবীর মাঝখানে, তখন সূর্য থেকে আলোর বিচ্ছুরণ বাধাগ্রস্ত হয় এবং সূর্যের গ্রহণ ঘটে। অন্যভাবে বললে বলা যায় চাঁদ এই সময় পৃথিবীতে তার ছায়ায় ঢেকে ফেলে।
সূর্যগ্রহণ হয় তিন ধরনের:-
- আংশিক
- বলয়গ্রাস
- পূর্ণগ্রাস
আর এই ধরন গুলো নির্ভর করে চাঁদ সূর্য কে কতটা ঢেকে ফেলেছে তার ওপর।
আগামী ৮ এপ্রিল অর্থাৎ আগামীকাল আজ যে সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে তা হবে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ, একটি পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ কখন ঘটে? যখন সূর্য সম্পূর্ণরূপে চাঁদ দিয়ে ঢেকে যায় এবং এর কোন আলো পৃথিবীতে পৌঁছায় না। কিন্তু সূর্য তো বড় তাহলে কিভাবে চাঁদ দিয়ে ঢেকে যাবে? সূর্যের ব্যাস চাঁদের চেয়ে ৪০০ গুন বড় হলেও চাঁদ আবার সূর্যের চেয়ে পৃথিবীতে ৪০০ গুন কাছে ফলে চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে এসে সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে দিতে পারে।
বিজ্ঞানীদের মতে এবারের এই সূর্য গ্রহণ খুবই বিশেষ হতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তথ্যমতে পূর্ণ সূর্যগ্রহণ ১ থেকে সাড়ে ৪ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হবে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় অর্থাৎ ৪ মিনিট ২৭ সেকেন্ড পর্যন্ত দেখা যাবে পূর্ণ সূর্যগ্রহণ।
বাংলাদেশ থেকে দেখা যাবে?
৮ এপ্রিল বিরল এক সূর্য গ্রহণের সাক্ষী হতে চলেছে বিশ্ব, সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে ফেলবে চাঁদ ফলে কিছুক্ষণের জন্য দিন হবে সাময়িক রাত তবে সূর্যগ্রহণ এর মত একই সঙ্গে পৃথিবীর সব অঞ্চল থেকে দেখা যাবেনা এই বিরল সূর্যগ্রহণ। মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মানুষ দেখতে পারবেন এটি। বাংলাদেশ সময় রাত ৯ টা ৪৩ মিনিট থেকে রাত ২ টা ৫২ মিনিটের মধ্যেই এই সূর্য গ্রহণ হবে, ফলে ভারত-বাংলাদেশ এবং আশপাশের অঞ্চল থেকে সেটা দেখা যাবে না।
কোন অঞ্চল থেকে সূর্যগ্রহণ ভালোভাবে দেখা যাবে?
৮ এপ্রিলের পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ এর সেই দৃশ্য কানাডার অন্টারিও শহর থেকে ভালোভাবে দেখা যাবে, এই দৃশ্য দেখতে ওই দিন নায়াগ্রা জলপ্রপাতের বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থীর সমাগম হবে। অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে সেই মাহেন্দ্রক্ষনের প্রস্তুতি।
সূর্যগ্রহণ নিয়ে যত কুসংস্কার:
- সূর্যগ্রহণ কে ঘিরে আমাদের সমাজ ও দেশে নানা ধরনের কুসংস্কার প্রচলিত আছে, যুগ যুগ ধরে অন্ধভাবে মানা হচ্ছে এগুলো, যেমন বলা হয়ে থাকে এসময় কিছু কাটলে বিশেষ করে মাছ কাটলে ঠোঁট কাটা কান কাটা বা নাক কাটাসন্তানের জন্ম হয় যার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
- গ্রহণের সময় খেতে নেই তৈরি করা খাবার ফেলে দিতে হয়, এই কথার ও কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
- সূর্যগ্রহণের সময় গর্ভবতী নারীরা ঘরের বাইরে বের হলে গর্ভের সন্তানের কোনো সমস্যা হয় না, বিজ্ঞান সেটা প্রমাণ করেছে অনেক আগেই।
এগুলো নিছক কুসংস্কার এর বাইরেও সূর্যের অতিরিক্ত রেডিয়েশন আসে ইলেকট্রনিক ডিভাইস নষ্ট হতে পারে, এমন অনেক গুজব ই রটে এগুলোর ও অবশ্য কোনো বৈজ্ঞানিক সত্যতা নেই।
আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন ( FACEBOOK LINK)