এখন থেকে ঘরে বসেই, কোনো দালালের সাহায্য ছাড়াই, আপনি সরাসরি গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে পারবেন। অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়া নিয়ে আপনার মনে থাকা যাবতীয় জটিলতাও দূর হবে সহজেই।
আপনি কি জানেন, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের পুরো প্রক্রিয়াটি কতটা সহজ? যদি না জানেন, তাহলে একটু ঠান্ডা মাথায় এই ব্লগটি পড়লেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। এখন আর ভূমি অফিসে বারবার গিয়ে সময় নষ্ট করার দরকার নেই। কয়েকটি ধাপ মেনে, আপনি সহজেই আপনার জমির খাজনা পরিশোধ করতে পারবেন, সেই সাথে নিশ্চিত করতে পারবেন সম্পত্তির সুরক্ষা।
আপনার সময় এবং পরিশ্রম বাঁচাতে, এবং দালালদের হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে, অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার এই সহজ প্রক্রিয়াটি আজই শুরু করুন।
জমির খাজনা কি?
জমির খাজনা, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি ঐতিহ্যবাহী এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জমির উপর আরোপিত কর, যা সরকারকে জমির মালিক বা ব্যবহারকারীদের দ্বারা প্রদান করতে হয়, সাধারণত এই খাজনা নামে পরিচিত। বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে অবস্থিত প্রতিটি জমির ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট হারে এই কর প্রদান বাধ্যতামূলক। খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন করের এই অর্থ ভূমি মন্ত্রণালয় এবং দেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যয় করা হয়, যা দেশের সমগ্র অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
জমির খাজনা বা ভূমি করের ধারণাটি কেবল বাংলাদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে প্রচলিত একটি পুরনো রীতি। আমাদের ভারতবর্ষের প্রাচীনকাল থেকে জমিদাররা তাদের অধীনস্থ প্রজাদের কাছ থেকে জমির খাজনা আদায় করতেন। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পরও এই কর প্রদানের রীতি চালু থাকে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত জমির খাজনা আদায়ের এই রীতি প্রচলিত ছিল। তবে, ১৯৭৬ সালে প্রণীত “ভূমি উন্নয়ন কর অধ্যাদেশ” এর মাধ্যমে জমির খাজনাকে একটি নতুন নামকরণ করা হয়, যা বর্তমানে ‘ভূমি উন্নয়ন কর’ নামে পরিচিত। এই অধ্যাদেশের আওতায় ভূমির উন্নয়নের জন্য কর প্রদানের নিয়মনীতি প্রণয়ন করা হয়।
যদিও বর্তমানে এটি ‘ভূমি উন্নয়ন কর’ হিসেবে পরিচিত, তবু দেশের অনেক মানুষ এখনও ঐতিহ্যগতভাবে এটিকে ‘খাজনা’ নামেই চেনে এবং বলে থাকেন।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে, প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে অনলাইনেও জমির খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার প্রক্রিয়া বেশ সহজ এবং সুবিধাজনক, যা যেকোনো স্থানে বসে করা সম্ভব। এটি কেবল সময় সাশ্রয়ই করে না, বরং প্রক্রিয়াটি আরো সহজতর এবং সুরক্ষিত করে তোলে।
এখন আসুন, কীভাবে অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়া যায়, তা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
জমির খাজনা দিতে কি কি কাগজ পাতি দরকার হয়?
জমির খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের আগে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, ঠিক কী কী কাগজপত্র লাগবে। সঠিকভাবে কর পরিশোধ করতে গেলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই, মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে এই বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকা আবশ্যক।
জমির খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের জন্য কিছু বিশেষ কাগজপত্র ও তথ্য প্রয়োজন হয়। এগুলো হল:
- ১. জাতীয় পরিচয়পত্র: জমির মালিকের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি অবশ্যই লাগবে। যদি জমির মালিক নিজে উপস্থিত না থাকেন, তবে তাঁর উত্তরাধিকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রও গ্রহণযোগ্য হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রটি যে কোনো প্রশাসনিক কাজে অত্যন্ত জরুরি, তাই এটিকে সবসময় প্রস্তুত রাখা উচিত।
- ২. সচল মোবাইল নম্বর: যেকোনো ধরণের নোটিফিকেশন বা প্রক্রিয়ার আপডেট পেতে জমির মালিক বা উত্তরাধিকারীর একটি সচল মোবাইল নম্বর আবশ্যক। এই নম্বরের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের যাচাইকরণ ও অন্যান্য বিষয় সম্পন্ন করা হয়।
- ৩. নামজারি খতিয়ান: জমির নামজারি খতিয়ান বা রেকর্ড প্রমাণস্বরূপ প্রয়োজন হয়। এই খতিয়ানটি ভূমির মালিকানা প্রমাণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিলগুলোর একটি।
- ৪. কর পরিশোধের পুরোনো রশিদ: যদি জমির খাজনা পূর্বে পরিশোধ করা হয়ে থাকে, তবে তার পুরোনো রশিদ থাকলে সেটি উপকারী হতে পারে। এটি জমির পূর্ববর্তী কর পরিশোধের ইতিহাস ও ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে।
- ৫. জমির সঠিক অবস্থান: জমির সঠিক অবস্থান নির্ণয় করতে হলে জেলার নাম, উপজেলার নাম, মৌজা এবং হোল্ডিং নম্বর জানা জরুরি। এগুলো জমির সঠিক সীমানা ও অবস্থান নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- ৬. প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম: যেহেতু বর্তমান প্রক্রিয়াটি অনলাইনে সম্পন্ন হয়, সেজন্য একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট কানেকশন প্রয়োজন হবে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে খাজনা পরিশোধ প্রক্রিয়া এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে, তাই এই উপকরণগুলির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।
এই কাগজপত্র ও তথ্যগুলো সংগ্রহ করার পরে, আপনি অনলাইনে খুব সহজেই জমির খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে পারবেন। এসব প্রক্রিয়া কেবল আপনাকে জমির কর সঠিকভাবে পরিশোধ করতে সহায়তা করবে না, বরং সময় ও ঝামেলাও কমাবে।
অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম ২০২৪
বর্তমান যুগে, অনলাইনের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর বা জমির খাজনা পরিশোধের পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ এবং সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে। তাই, ২০২৪ সালের অনলাইন খাজনা পরিশোধের নিয়মকানুন সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি। তবে মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে একটি বিষয় পরিষ্কার করে বলা প্রয়োজন— ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের পর একটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে জেনারেটেড রশিদই হলো আপনার কর পরিশোধের প্রমাণ। যদি কোনো ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আপনাকে ম্যানুয়াল বা হাতে লেখা রশিদ দেন, তবে তাকে বিশ্বাস করবেন না।
অনলাইনে জমির খাজনা দিতে হলে নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে:
ধাপ ১: ভূমি উন্নয়ন কর একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন
প্রথমেই, জমির মালিককে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য এবং একটি সচল মোবাইল নম্বর দিয়ে অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন করের জন্য একটি একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। যদি জমির মূল মালিক মৃত্যুবরণ করে থাকেন, তবে উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিকানা প্রাপ্ত ব্যক্তিরাও তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে এই একাউন্ট তৈরি করতে পারেন।
একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে, আপনাকে প্রথমে [ldtax.gov.bd] ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সেখানে মালিক বা উত্তরাধিকারের মোবাইল নম্বর এবং ক্যাপচা ইনপুট করে ‘পরবর্তী পদক্ষেপ’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
এ পর্যায়ে, আপনার মোবাইলে একটি ওটিপি (One Time Password) পাঠানো হবে। সেটি ইনপুট করে ‘যাচাই করুন’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনার একাউন্টের জন্য একটি পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে এবং ক্যাপচা পূরণ করে ‘সংরক্ষণ করুন’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ২: একাউন্টে লগ ইন
একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে, ldtax.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার মোবাইল নম্বর, পাসওয়ার্ড এবং ক্যাপচা দিয়ে লগ ইন করতে হবে। একাউন্টটি সম্পূর্ণ করতে হলে আপনাকে প্রোফাইল ১০০% পূর্ণ করতে হবে। এই কাজের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই এবং খতিয়ান/দাখিলা সংযুক্ত করা অন্তর্ভুক্ত।
ধাপ ৩: খতিয়ান/দাখিলা সংযুক্ত করা
প্রোফাইল ১০০% সম্পূর্ণ করতে হলে আপনার জমির খতিয়ান বা দাখিলার ছবি অনলাইনে আপলোড করতে হবে। মেনুবার থেকে ‘খতিয়ান’ অপশনে গিয়ে জমির অবস্থান অনুযায়ী বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং মৌজা নির্বাচন করতে হবে। এরপর খতিয়ানের নম্বর এবং হোল্ডিং নম্বর ইনপুট করে, ‘Choose File’ বাটনে ক্লিক করে খতিয়ান বা দাখিলার ছবিটি আপলোড করতে হবে। এরপর মালিকানার ধরণ নির্বাচন করে ‘সংরক্ষণ করুন’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
একবার খতিয়ানটি উপজেলা ভূমি অফিসে প্রেরিত হলে, সেখানে কর্মকর্তা সকল তথ্য যাচাই করবেন এবং জমির হোল্ডিং এন্ট্রি করবেন। এটি সম্পন্ন হতে সাধারণত ২-৩ কর্মদিবস সময় লাগে।
ধাপ ৪: জমির খাজনা প্রদান
খতিয়ানটি অনুমোদিত হলে, মেনুবার থেকে ‘হোল্ডিং’ অপশনে গিয়ে আপনি আপনার জমির খাজনার তথ্য দেখতে পাবেন। এরপর ‘অনলাইন পেমেন্ট’ বাটনে ক্লিক করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে খাজনার টাকা পরিশোধ করতে পারবেন।
ধাপ ৫: ভূমি উন্নয়ন কর রশিদ ডাউনলোড
খাজনা পরিশোধের পর, মেনুবার থেকে ‘দাখিলা’ অপশনে ক্লিক করে রশিদের প্রিভিউ দেখতে পারবেন। আপনি চাইলে সেটি প্রিন্ট করে রাখতে পারেন অথবা ডাউনলোড করতে পারেন। এই রশিদটি ভবিষ্যতের প্রয়োজনের জন্য সংরক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
এভাবে, অনলাইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জমির খাজনা পরিশোধ করা অত্যন্ত সহজ, নিরাপদ এবং সময়সাশ্রয়ী।
বাংলাদেশে কত বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ করা হয়?
বাংলাদেশে কৃষি জমির খাজনা মওকুফের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা প্রতিটি কৃষক ও ভূমি মালিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি উৎপাদনকে উৎসাহিত করার জন্য সরকার বিভিন্ন সময় ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা মওকুফের পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। বিশেষত, কৃষি জমির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ জমির ওপর কর আরোপ না করার নিয়মটি প্রণয়ন করা হয়েছে, যা দেশের কৃষকদের জন্য একটি বড় ধরনের সুবিধা।
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষি জমির খাজনা মওকুফ করা হয়। অর্থাৎ, যদি কোনো কৃষক বা ভূমি মালিকের মোট আবাদি জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার মধ্যে থাকে, তবে তিনি সেই জমির জন্য কোনো ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য থাকবেন না। তবে, যদি কারো জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার চেয়ে বেশি হয়, সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত জমির জন্য খাজনা পরিশোধ করতে হবে।
এই নিয়মটি কৃষি জমির মালিকদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী, কারণ এটি তাদের উৎপাদন খরচ কমাতে সহায়তা করে এবং কৃষি কার্যক্রমকে আরও উৎসাহিত করে। তবে এটি শুধুমাত্র কৃষি জমির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য; অন্যান্য ধরণের জমির জন্য আলাদা নিয়মাবলী রয়েছে যা ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে।
এই প্রক্রিয়াটি দেশের কৃষিখাতে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং কৃষকদের মধ্যে আরও বেশি জমিতে ফসল উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করে। তবে, সঠিক নিয়মাবলী ও নির্দেশনা মেনে চলা জরুরি, যাতে করে খাজনা মওকুফের সুবিধাটি পুরোপুরি গ্রহণ করা যায়।
সর্বশেষ কথা
প্রত্যেক ভূমির মালিকের জন্য তার জমির জন্য নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা পরিশোধ করা একটি নাগরিক দায়িত্ব। বাংলাদেশে যে কোনো জমির ক্ষেত্রে, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে এই কর প্রদান করতে হবে।
ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের সময় বাংলা সন অনুযায়ী হিসাব করা হয়, যা দেশের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে, এই কর পরিশোধে অবহেলা করলে হতে পারে গুরুতর ফল। যদি কোনো মালিক পরপর তিন বছর তার জমির খাজনা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে সরকার সেই জমি বাজেয়াপ্ত বা খাস জমি হিসেবে ঘোষণা করতে পারে।
আশা করি, আজকের ব্লগ থেকে আপনি ঘরে বসে, কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়াই, কিভাবে অনলাইনে জমির খাজনা পরিশোধ করা যায়, তা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা থাকে, তাহলে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে ভুলবেন না। আমরা সবসময় আপনাকে সহায়তা করতে প্রস্তুত।