ছোটখাটো কিছু ঘটনা বাদ দিলে বিপিএলের তৃতীয় আসরকে সফলই বলা চলে। ঘটা করে সে সফলতার কথা জানান দিতে গতকাল একটি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সে সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে ছিলেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যরা। সেখানে বিসিবি সভাপতি জানিয়েয়েছেন, গত দুই আসরের মতো এবার ফিক্সিং ও ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিকের মতো বড় সমস্যা ছিল না। মোটামুটি একটি সুশৃঙ্খল বিপিএল তারা আয়োজন করতে পেরেছেন।
তৃতীয় আসরে অর্থনৈতিকভাবেই তারা বেশ লাভবান হয়েছেন। নাজমুল হাসান জানান, সব খরচ বাদ দিয়ে এবারের বিপিএল থেকে তাদের লাভ হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। গত বিপিএলে সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল ফিক্সিং। এবারও চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচে (চিটাগাং ভাইকিংস বনাম বরিশাল বুলস) কয়েকজন ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স নিয়ে মিডিয়ায় সন্দেহ জেগেছিল। তবে বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন, এবার কোনো ম্যাচে তারা সন্দেহজনক কিছু দেখেননি, ‘প্রথম দুই বিপিএলের ম্যাচগুলো দেখেই বোঝা গেছে, এখানে ফিক্সিংয়ের ব্যাপার আছে কি-না। এবার আমাদের চোখে তেমন কিছু পড়েনি। আমাদের নিজস্ব আকসু টিম কাজ করছে। তাদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কিছু পাইনি আমরা।’ তবে এখনও সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। সে সঙ্গে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে বরিশাল বুলসের বিদেশি ক্রিকেটার ক্রিস গেইলের না খেলার বিষয়টিও তারা তদন্ত করে দেখছেন। সেদিন (১৩ ডিসেম্বর) ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষ বলেছিল, পিঠের ব্যথার কারণে গেইল খেলেননি। তাদের সঙ্গে গেইলের চুক্তি ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচ খেলার; কিন্তু চার ম্যাচ খেলেই অস্ট্রেলিয়ায় বিগ ব্যাশ খেলতে উড়াল দেন এ ক্যারিবিয়ান। অবশ্য মাঝে একটি ম্যাচ গেইলকে বিশ্রামে রেখেছিল বরিশাল। বিপিএলের আরও একটি বড় দুর্নাম ছিল ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক।
এবার সে বদনামও কেটে গেছে বলে জানান বিসিবি সভাপতি। এরই মধ্যে চিটাগাং ভাইকিংস ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স পুরো পারিশ্রমিক দিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া রংপুর রাইডার্স বিদেশি ক্রিকেটারদের শতভাগ ও স্থানীয়দের ৭৫ শতাংশ, বরিশাল বুলস সব খেলোয়াড়ের ৭৫ শতাংশ, ঢাকা ৭৫ শতাংশ এবং সিলেট ৭৫ শতাংশ পারিশ্রমিক দিয়ে দিয়েছে। বিসিবির বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী কেউ পিছিয়ে নেই। ক্রিকেটারদের পুরো পারিশ্রমিক দেওয়ার শেষ সময় ১৫ জানুয়ারি। এবারের বিপিএলে আরও একটি বড় শঙ্কা ছিল নিরাপত্তা। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা নারী দল নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশ সফর বাতিল করার পর বিপিএল ছিল বিসিবির জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এবার ৬৫ জন বিদেশি ক্রিকেটার এবং ছয়জন কোচ ও ফিজিও নিরাপত্তা নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বলেও জানান বিসিবি সভাপতি। আগামী নভেম্বরে চতুর্থ আসরে ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং ভেন্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।