খ্রিষ্টপূর্ব ৬০ অব্দে প্রাচীন গ্রিসের
জ্যোতির্বিদেরা দিক নির্ণয়ের জন্য গ্রহ-
নক্ষত্রের গণনাকাজে একটি যন্ত্র ব্যবহার
করতেন। সম্ভবত এটিই বিশ্বের প্রথম
অ্যানালগ কম্পিউটার। এক্স-রে প্রযুক্তির
সাহায্যে যন্ত্রটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই
ইঙ্গিত পেয়েছেন একদল গবেষক।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে
পুরোনো কম্পিউটারটির বয়স দুই হাজার বছরের
বেশি। এটি ব্যবহার করে জ্যোতির্বিদ্যা চর্চার
পাশাপাশি ভবিষ্যদ্বাণীও করত গ্রিকরা।
অ্যান্টিকাইথেরা মেকানিজম নামে পরিচিত যন্ত্রটি
পাওয়া যায় ১৯০১ সালে। গ্রিসের একটি
দ্বীপের কাছে জাহাজডুবির ধ্বংসাবশেষ
গবেষকেরা গত ১২ বছরে যন্ত্রটির ভাঙা
টুকরোগুলো একসঙ্গে জুড়ে দেন। তারপর
এক্স-রের ছবি ব্যবহার করে মূল যন্ত্রটির
আদলে একটি কাঠামো দাঁড় করান। আর তা
বিশ্লেষণ করে ইঙ্গিত পান, দিক নির্ণয়ের
উদ্দেশ্যে প্রাচীন গ্রিকরা আকাশের গ্রহ-
নক্ষত্রের গতিবিধি জানতে গণনাযন্ত্রটি ব্যবহার
করত। তবে যন্ত্রটির ভাঙা উপরিতলের নানা রকম
সংকেতের আংশিক পাঠোদ্ধার করে
বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন, জ্যোতিষবিদ্যা
চর্চার কাজেও এটি ব্যবহৃত হয়েছিল।
কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান
বিভাগের অধ্যাপক মাইক এডমুন্ডস গ্রিসের
রাজধানী এথেন্সে এক সংবাদ সম্মেলনে
বলেন, যন্ত্রটির গুপ্ত সংকেতের পূর্ণ
পাঠোদ্ধার এখনো সম্ভব হয়নি। তবে সূর্য কিংবা
চন্দ্রগ্রহণের চিহ্ন দেখে মনে হচ্ছে, তা
একধরনের পূর্বাভাস বা সংকেত। এতে আরও
সম্ভবত এটা শুভ ও অশুভের ইঙ্গিত দেওয়ার
চেষ্টা। তাই বলা যায়, যন্ত্রটির প্রয়োগ সম্ভবত
জ্যোতির্বিদ্যার চেয়ে জ্যোতিষশাস্ত্রেই
বেশি হতো।
যন্ত্রটির ভাঙা অংশগুলো বর্তমানে এথেন্সে
অবস্থিত জাতীয় প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘরে
সংরক্ষিত আছে।