‘বাংলাদেশে পেপ্যাল আসছে’ এমন খবর অনেকবার সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। তবে প্রত্যেকবার তা ভুল প্রমাণ হয়েছে। তবে আজ বুধবার দুপুরে সরকারের যুগ্ম-সচিব মাহবুব কবির মিলন ফেসবুক স্ট্যাটাসে দেশে পেপ্যাল আসার খবর দেওয়ার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে পেপ্যাল। তবে অনেকেই দেশে পেপ্যাল আসার খবরটি গুজব হিসেবে নিচ্ছেন।
সোশ্যাল মিডিয়াতে এই নিয়ে যখন আলোচনা তুঙ্গে তখন আইসিটি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাসের এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিষয়টি খোলাসা করার চেষ্টা করেছেন। তিনি লিখেছেন, “পেপ্যাল বাংলাদেশে আসলে সেটাতো বিশাল খুশির বিষয়। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক মাননীয় উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয় স্যারের সার্বিক নির্দেশনা এবং মাননীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতীমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক স্যারের আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল এবং আছে।”
তিনি আরও লিখেছেন, “পেপ্যালের বাংলাদেশে কার্যক্রম চালুর বিষয়ে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক স্যারের কমেন্ট, ‘আমাদের ফ্রিল্যান্সারদের দীর্ঘদিনের দাবি পেপ্যালকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে ও তত্ত্বাবধানে আমরা দীর্ঘদিন ধরে পেপ্যালের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আলোচনায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আমরা আশাবাদী কিছুদিনের মধ্যে হয়তো একটা সুখবর দিতে পারবো’। তাই, সাধারণের কাছে ভুল বার্তা যায় এ রকম কোন নিউজ না করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করব।”
সব শেষে তিনি লিখেছেন, “ইতোমধ্যেই আপনাদের কাছে সুবিদিত যে, মাননীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী মহোদয় নিজে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগও সবসময় তথ্যের সুষম প্রবাহ অব্যাহত রেখেছে এবং তথ্য প্রদানে কখনো কার্পণ্য করেনি। এ ধরণের বিষয়ে অবশ্যই সংবাদ মাধ্যমকে যথাসময়ে অবহিত করা হবে।”
এর আগে আজ দুপুরে যুগ্ম-সচিব মাহবুব কবির মিলন ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, ‘এইমাত্র আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে বের হলাম। ছোট্ট কিন্তু বিশাল একটি আনন্দের সংবাদ দিচ্ছি। পেপ্যাল আসছে বাংলাদেশে। সোনালী ব্যাংকের সাথে এমওইউ চুক্তি স্বাক্ষর হয়ে গেছে। আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যেই তারা কাজ শুরু করে দেবে আমাদের দেশে’।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) দেশে পেপ্যাল নিয়ে আসার জন্য উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালে এসে এটি বাস্তবায়নের জন্য নানানভাবে চেষ্টা করতে থাকেন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। সে বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে পেপ্যাল চালু হচ্ছে বলে ঘোষণাও দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ তা আর চালু হয়নি। এরপর দেশের প্রথম ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড মেলায় সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আগামী বছরেই (২০১৩ সালে) দেশে পেপ্যাল চালু হবে। ২০১৩ সালের এপ্রিলের শুরুতে সিলেটে ই-বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও বলেন, আগামী দেড় মাসের মধ্যে দেশে পেপ্যাল চালু হবে। এর মধ্যে আবার তৎকালীন বাংলাদেশ ব্যাংকের তখনকার গভর্নর আতিউর রহমানও বেশ কয়েক দফায় জানান দেশে পেপ্যাল আসছে।
২০১৪ সালেও কয়েকবার সজীব ওয়াজেদ জয় আশ্বাস দিয়ে বলেন, পেপ্যাল দেশে আনার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে ২০১৫ সালের জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পেপ্যালের ভাইস প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠক করেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ওই বৈঠকে বাংলাদেশে কার্যক্রম চালুর বিষয়ে নিজেদের অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা ও বাংলাদেশে ব্যবসায়িক সম্ভাবনার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলে জানায় পেপ্যাল। কিন্তু শেষমেশ আর বাংলাদেশে কার্যক্রম চালু করেনি পেপ্যাল।